Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাক চালক ইয়াকুবের লাশ উদ্ধারের পর মরদেহে আঘাতের চিহৃ ছিল ফতুল্লা থানা পুলিশের অপমৃত্যুর মামলা গ্রহন রহস্যজনক

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:২৭ পিএম

ফতুল্লা থেকে গত বছরের ২৯শে ডিসেম্বর নিখোঁজ হয় কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার ভাটিভড়াটিয়া থানার মৃত আলতু মিয়ার পুত্র ট্রাক চালক ইয়াকুব আলী মিয়া(৪৩)। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ২ তারিখ রাতে ফতুল্লার আলীগঞ্জস্থ জামান মিয়ার ঘাট সংলগ্ন
নদীর তীরবর্তী স্থান থেকে ট্রাক চালক ইয়াকুবের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পর নিহতের স্বজনেরা হত্যা মামলা করতে চাইলে পুলিশ হত্যা মামলা গ্রহন না করে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে গ্রহন করেছে বলে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ। নিহত ট্রাক চালক ইয়াকুবের স্বজনদের দাবী টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে বিচারের নামে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ ঘুম করতে মৃত দেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্ত নিখোঁজের পাচঁদিন পর লাশ নদীর তীরবর্তী স্থানে ভেসে উঠলে তা দেখতে পেয়ে থানা পুলিশ কে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায়।

তাদের দাবী পুলিশ যখন লাশ উদ্ধার করে তখন মাথার পিছনে দুটি বড় বড় ক্ষতের চিহৃ ছিলো এবং পিঠের একাধিক স্থানে ক্ষত এবং আঘাতের চিহৃ ছিলো এবং সে স্থানগুলোতে রক্ত জামটা বাধা ছিল। পুলিশ নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য হাসপাতালে পাঠানো ফরমে তা উল্লেখও করেছিলো।

পুলিশ ও প্রথমে এটিকে হত্যার ঘটনা বললেও সময় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞাত কারনে সুর পাল্টে ফেলে। হত্যা মামলা করার জন্য তারা থানায় গেলে ফতুল্লা থানার ইনচার্জ আসলাম হোসেন তাদেরকে বলে যে আপাতত আপনারা অপমৃত্যু মামলা করেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটাই অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।

নিহত ট্রাক চালক ইয়াকুবের চাচা জানায়, টাকা-পয়সা লেনদেন ছিলো ট্রাক মালিকের সাথে। আর এ জন্য নিহত ইয়াকুব রাজহাস, মাছ, মুরগি নিয়ে মালিকের বাসায় ও গিয়েছিলো। মালিক তখন নিয়ে যাওয়া মাছ, মুরগি, রাজহাস রেখে দিয়ে বলেছিলো যে, টাকা-পয়সার হিসাব নিয়ে মঙ্গলবার(২৯ডিসেম্বর) দাপা এলাকায় বসবে। নিখোঁজের দিন তারা দাপা শৈলকূইড়া এলাকায় বসেছিলো। রাতে বাসায় ফিরে না আসায় সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে না পেয়ে পরদিন সে নিজে বাদী হয়ে নিখোঁজ হওয়ার একটি সাধারন ডায়েরী করেন। ফতুল্লা থানা পুলিশের এস,আই রাজ্জাক জিডির তদন্তও করেন। পরবর্তীতে পাঁচদিন পর হোসেন ও দাপা শৈইলকূইড়ার টিক্কা তাকে জানায় যে, নদীর তীরে একটি লাশ পরে আছে। এমন সংবাদ শুনে সে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ভাতিজা ইয়াকুবের লাশ সনাক্ত করে পুলিশ কে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের সময় মাথার পিছনে দুটি আঘাতের চিন্থ ছিলো এবং পিঠেও একাধিক আঘাতের চিন্থ ছিলো

যা দেখে যে কেউ বলবে এটা হত্যাকান্ডের ঘটনা। লাশ উদ্ধারের রাত্রে পুলিশ নিখোঁজ হওয়ার রাতের শালিসীর ঘটনায় যারা যারা উপস্থিত ছিলো সকলের বাসায় অভিযান ও চালিয়েছিলো এবং মনির নামের একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে দুদিন পর আটক মনিরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তারা থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে থানা থেকে বড় স্যার(ওসি আসলাম হোসেন) তাদেরকে জানায় যে, এটা হত্যা করা হয়েছে সেটা ঠিক নয়। কারন ৩০ ডিসেম্বর ইব্রাহিম নামের এক লোক থানায় এসে অভিযোগ করে গেছে যে ইয়াকুব নামের এক চোর তার নিকট হইতে ৮০ হাজার টাকা চুরি করে নদীতে লাফ দিয়ে পালিয়ে গেছে। আর তাই পোস্ট মোর্টেম রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এটা হত্যা মামলা হিসেবে নেয়া যাবেনা। তখন থানার বড় স্যার তাকে বলে যে আপাততঃ অপমৃত্যু মামলা করেন রিপোর্টের পর হত্যা মামলা নিবো এতে করে মামলা আরো পোক্ত হবে। তিনি এ প্রস্তাবে রাজি না হলে তার পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রীর কাছ থেকে কৌশলে স্বাক্ষর নিয়ে অপমৃত্যু মামলা হিসেবে রেকর্ড করে পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রহস্যজনক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ