বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ‘লাঞ্ছিত’ করার অভিযোগে বিআরটিসির এক কর্মী গ্রেপ্তার হওয়ার পর মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের মেসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত ১৩ শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা/ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। সংক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে একটি বাসে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার দুপুরে। সজল নামের এক শিক্ষার্থী রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়েছিলেন যাশোরের বাসের টিকেট কিনতে। সেখানে বিআরটিসি’র কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেখানে তাকে লাঞ্ছিত করে কাউন্টারের লোকজন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিকালে রুপাতলী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। পরে বিআরটিসির কাউন্টার কর্মী রফিককে পুলিশ আটক করলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হয় আšেদালন প্রত্যাহার নেয়। কিন্তু রাত ২টারদিকে রুপাতলী হাউজিং এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেসে হামলার ঘটনা ঘটে ।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান রাত সোয়া একটার দিকে নগরীর রূপাতলীতে শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসানের মেসে হামলা করেন কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মাহমুদুলকে উদ্ধারে এগিয়ে যান পাশের বিভিন্ন মেসের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে আগত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে ৬০ থেকে ৭০ জন পরিবহন শ্রমিক ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে রূপাতলী হাউজিংয়ের ১৮, ১৯, ২৩ ও ২৫ নম্বর রোডের মেসগুলোতেও তন্ডব চালায়। রাত দুইটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের অভিযোগ, বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার হোসেন শিপনের নেতৃত্বে একদল পরিবহন শ্রমিক লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই হামলা চালায়।
পরে আহত ১৩জনকে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের একজন। ওই ঘটনার পর রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে ভোরের দিকে ফিরে গেলেও সকালে আবার অবরোধ শুরু করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিএমপি’র বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছি, হামলায় জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় আনা হবে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিনিবাস মালিক সমিতির নেতা কাউসার হোসেন শিপন বলেন, আমি ঘটনা জানি না। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আরিফ হোসেন বলেন, বাস-মালিক সমিতি ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠক হবে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। এদিকে গভীর রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত অভিহিত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলে জানান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন।
বেলা সাড়ে ১২টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানে আলোচনা করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আলোচনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার দাবি জানানো হয়। আলোচনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান করেন। অন্যদিকে উপাচার্যের সাথে আলোচনা শেষ করেই পুনরায় আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি আদায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান। তবে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে বিশ^বিদ্যালয়বন্ধ থাকলেও পরিস্থিতি ধথমথমে রয়েছে। ক্যম্পাসের বাইরে পুলিশী নিরাপত্তা বাড়ান হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।