পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি করার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। তিনি বলেন, আমরা এই চুক্তি নিয়ে কাজ করছি। তবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফরের সময় এ চুক্তি হবে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার এ সংশয়ের কথা জানান।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বেশকিছু ইস্যু নিষ্পত্তি হলেও তিস্তা চুক্তির বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বহুবার আলোচনা হলেও তাতে ফল আসেনি। এ ক্ষেত্রে বারবারই উঠে এসেছে রাজ্য সরকার তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘আপত্তি’র কথা। সেই বিষয়টিই উঠে এলো বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর কথাতেও। তিনি বলেন, ভারত সরকার পানি ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। সেই আগ্রহের কারণেই দুই দেশের মধ্যে ছয় নদী নিয়ে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির কাজ শুরু হয়েছে। তবে তিস্তা চুক্তি না হওয়া দুঃখজনক। ভারতের রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণেই তিস্তা চুক্তি আটকে আছে। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি সুরাহার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, তিস্তা বিষয়ে সুরাহার জন্য ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। যে কারণে বিষয়টির মীমাংসা হচ্ছে না, আমি সেটি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির জন্য ভারত সরকারকে আমাদের অভ্যন্তরীণ একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অনুমোদন নিতে হবে। সেই অনুমোদনের জন্য ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এ পর্যায়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ভারতীয় দূত বলেন, তিস্তার চুক্তির জন্য ভারতের রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। যার জন্য আমরা কাজ করছি। এটা খুবই দুঃখজনক যে রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণে তিস্তা চুক্তি এখনো হচ্ছে না। তাই নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফরে তিস্তা বিষয়ক চুক্তি হবে কি না, সেটিও আমি এখনই বলতে পারছি না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য ঢাকা সফরে তিস্তা চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা এর আগে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও। গত ৩১ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের ভোট আছে আগামী এপ্রিলে। এছাড়া আরও কয়েকটি রাজ্যের ভোট আছে। আমরা জানি যে ভোটের সময় যেকোনো বিষয়ে কাজ করা খুব জটিল। এদিকে, মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর করার কথা, আর তাদের ভোট এপ্রিলে। সেদিক দিয়ে তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থেকে যায়।
এর আগে, ২০১৮ সালের ২৫ ও ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পশ্চিমববঙ্গে দুই দিনের সফর করেন। ওই সফর শেষে ২০১৮ সালের ২৮ মে তৎকালীন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এক প্রেস বিফিংয়ে বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন বা এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গকে পাশ কাটিয়ে ভারত সরকার কিছুই করবে না। কেননা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে। একই ইস্যুতে গত বছরের মার্চে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, তিস্তা ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বেও কাজ হচ্ছে না।
ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে প্রধান প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতাকে ভারত কিভাবে মূল্যায়ন করে? ওই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোন দেশের সঙ্গে কি সম্পর্ক রাখছে তা নিয়ে ভারত চিন্তিত নয়। দিল্লির একমাত্র চাওয়া- বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন আছে। এই সম্পর্কে উঠা-নামা থাকতে পারে, কিন্তু তা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে গভীরতম ও বিস্তৃত। ভারত কখনো বাংলাদেশের ওপর দাদাগিরি করে না।
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, সীমান্তে সব হত্যায় বিএসএফ ঘটায় না। এটা রোধ করতে দু’পক্ষকেই সচেষ্ট হতে হবে বলে। তিনি বলেন, বাংলাদেশিদের সবসময় ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে ভারত উদার থাকে। করোনার কারণে আমরা হয়তো পর্যটকদের ভিসা দিতে পারছি না। তারপরও গত রোববারও (১৪ ফেব্রুয়ারি) আমরা এক হাজার ৬০০ ভিসা দিয়েছি। ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ নেপাল ভুটানের মধ্যে যোগাযোগের ব্যাপারে ভারত নীতিগতভাবে একমত। কিন্তু বাংলাদেশের ভেতরে কীভাবে সেটা পরিচালনা হবে, তা এখন বাংলাদেশকে ঠিক করতে হবে। হাইকমিশনার বলেন, নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে জ্বালানি, বঙ্গবন্ধু-বাপু জাদুঘরের উদ্বোধনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।