Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলে বহু ইসরাইলি আটক হতে পারেন!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:৩৫ পিএম

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটরের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহান্তে দেওয়া এক রায়ে পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইল ও হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আইসিসির তদন্ত চালুর এখতিয়ার রয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ তদন্ত শুরু হলে বিদেশে বসবাসরত বহু ইসরাইলি গ্রেফতার হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, দেশটির সাবেক ও বর্তমান কয়েকশ’ সামরিক কর্মকর্তাকে ব্রিফিংয়ের জন্য ডেকেছে সরকার। এ খবর দিয়েছে দ্য হারেৎস।
খবরে বলা হয়, গত জুলাইয়েই আইসিসি তদন্তের অনুমোদন দিলে গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন এমন শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি গোপন তালিকা তৈরি করেছিল ইসরাইল। সরকারের জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে আইসিসি’র কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র জানিয়েছে যে, তাদের দেশে যাওয়ার পর ইসরাইলি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলে আগেভাগেই ইসরাইলকে সতর্ক করা হবে। এর পাশাপাশি গোপন তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এড়াতে বিদেশ ভ্রমণে না যেতে বলতে পারে ইসরাইল সরকার।
এদিকে, ইসরাইলের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা শনিবার জানান, আইসিসি এখন অবধি ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত চালু করেনি, তাই ইসরাইলি নাগরিকদের এখনই ওই প্রিট্রায়াল চেম্বারের রায়ের ফলে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা নেই। কর্মকর্তারা আরোও জানান, আইসিসি’র তদন্ত চালু করলে আদালতে বিচারের সম্মুখীন হওয়া যেকোনো নাগরিককে সম্পূর্ণ আইনি সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা।
হারেৎস জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, তদন্তটি চালু হলে আইসিসি ইসরাইলের মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার বা জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তার মতো উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপরই জোর দেবে।
রায়টির তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরাইল সরকার ও সামরিক বাহিনী। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে তিনি রায়টিকে ‘ইহুদিবিরোধী’ বলে আখ্যা দেন ও বলেন, ইসরাইল ‘ন্যায়বিচারের এই বিকৃতি’র বিরুদ্ধে পুরো শক্তি নিয়ে লড়বে। তিনি আদালতটিকে ‘একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান’ বলে বর্ণনা করেন।
নেতানিয়াহু বলেন, আইসিসি সত্যিকারের যুদ্ধাপরাধ অগ্রাহ্য করে, ইসরাইলের মতো শক্ত গণতান্ত্রিক সরকারের মতো দেশের পিছু লেগেছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আইসিসির রায়টি দুঃখজনক।
ইসরাইল তাদের ভূখণ্ডে আইসিসির কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। তবে তা সত্ত্বেও, গত দুই বছর ধরে দেশটির সামরিক এডভোকেট জেনারেলের কার্যালয় ও বিচার মন্ত্রণালয় গোপনে আদালতের প্রাথমিক তদন্তকারী দলকে প্রদানের জন্য নথিপত্র প্রস্তুতের কাজ করে আসছে। দেশটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আইসিসির পূর্ণ তদন্তের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ইসরাইল।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদা ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ওই বছর তিনি জানিয়েছিলেন, আদালত অনুমোদন দিলে, অপরাধ তদন্তটি ২০১৪ সালে ইসরাইল ও হামাসের বিরুদ্ধে হওয়া সংঘাত, ইসরাইলের বসতি স্থাপন নীতিমালা এবং গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখা হবে। সূত্র : দ্য হারেৎস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ