Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার পতন আন্দোলনের ডাক বিএনপির

বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের লাঠিপেটা আহত ১১৯ আটক ২১

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের লাঠিচার্জে শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সমাবেশ থেকে ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দেয়ার সময় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমানুল্লাহ আমান ও হাবিবুন্নবী খান সোহেলসহ কিছু নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে চলে যান। বাকি শত শত নেতাকর্মীর উপর পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা করে। নেতাকর্মীরা তখন দিগি¦দিক দৌড়াদৌড়ি করে যেদিকে পারেন পালিয়ে যান। সমাবেশ যথন শেষ পর্যায়ে কদম ফোয়ার দিক থেকে পুলিশ একযোগে সমাবেশের দিকে আসে। মুহূর্তের মধ্যে সমাবেশের নেতাকর্মীরা তোপখানা রোড, জাতীয় প্রেসক্লাবের গেইট ডিঙিয়ে পালাতে থাকে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে পুরো সমাবেশ পন্ড করে দেয়। নেতাকর্মীদের পুলিশ এলোপাতারি লাঠিপেটা করে। নেতাকর্মীরাও ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে পুলিশের দিকে। এসময় পুলিশের লাঠিপেটায় কমপক্ষে ১১৯ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। লাঠিপেটা করতে করতে পুলিশ এ সময় ২১ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর প্রেসক্লাব এলাকার পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রেসক্লাবে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা, নেতাকর্মীদের গুরুতর আহত ও গ্রেফতার করার ঘটনায় দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মতে পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন ১১৯ জনের অধিক নেতাকর্মী। পুলিশ গ্রেফতার করেছে ২১ জনের অধিক নেতাকর্মীকে। বিকেল সাড়ে চারটায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল, তিতুমীর কলেজের সাবেক ভিপি হানিফ, ঢাকা মহানগর উত্তর সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম নকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপির মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক সরদার নুরুজ্জামান, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সফিকুল ইসলাম, ছাত্রদল উত্তর নেতা সাজ্জাদ হোসেন রুবেল।

দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ বিএনপির সমাবেশে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় সিনিয়র নেতাসহ অনেকে আহত হয়েছেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের বর্বর হামলার তিনি তীব্র নিন্দা জানান।

এর আগে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিল করার এখতিয়ার কারো নেই। তিনি ‘সরকার হটানোর আন্দোলনে’ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ড. মোশাররফ বলেন, জিয়াউর রহমানই এদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছে। কার খেতাব আপনারা বাতিল করতে চান। এই জিয়াউর রহমান এদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সেক্টার কমান্ডার, এই জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ফোর্স ‘জেড’ ফোর্সের কমান্ডার। এ জিয়াউর রহমানের অর্জিত খেতাব বাতিলের অধিকার আপনাদের নেই, এই খেতাব বাতিলের অধিকার কারো নেই।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশটা ভাষণে স্বাধীন হয়নি, দেশটা স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে। সেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, সেই যুদ্ধের অপর নাম জিয়াউর রহমান। যুদ্ধ মানে জিয়া, গণতন্ত্র মানে জিয়া, দেশপ্রেম মানে জিয়া, সততা মানে জিয়া, আধুনিক বাংলাদেশ মানে জিয়া, স্বনির্ভর বাংলাদেশ মানে জিয়া, বিশ্বের দরবারে মর্যাদাশীল জাতির নাম জিয়া। জিয়াই বাংলাদেশি জাতি এক কাতারে লেখা। কোনোটাকে কোনোভাবে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। জিয়ার খেতাব নিয়ে আমরা ব্যবসা করি না, আমরা গর্ববোধ করি, আমরা উৎসাহিত হই। আমি সকলকে বলি ও খেতাব নিয়ে টানাটানি করুক, সবাই মিলে আমরা ওর গদিটা ধরে টান দেই। ওখান থেকে নামিয়ে নিতে পারলে সব হিসাব-নিকাশ একদিনে চুকে যাবে।

মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে দক্ষিণের কাজী আবুল বাশার ও উত্তরে আবদুল আলীম নকীর পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সপু, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, মহানগর বিএনপির মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, যুব দলের সাইফুল ইসলাম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, ছাত্র দলের ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আক্তারুজ্জামান রঞ্জন, নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুজ্জামান শিমুল, আকরামুল হাসান, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, এসএম জাহানঙ্গীর, ইউনুস মৃধা, নবী উল্লাহ নবী, হেলেন জেরিন খান, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, আবদুল কালাম আজাদ, হাসান জাফির তুহিন, আব্দুর রহিম. লিয়াকত আলী, শাহরিন ইসলাম শায়লা, আরিফুর রহমান মোল্লা, জাকির হোসেন রোকনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • MD Tohidul Islam ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪০ এএম says : 0
    বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন হয় নি।
    Total Reply(0) Reply
  • Mannan Molla ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৪ এএম says : 0
    আওয়ামীলীগকে চাঙ্গা করার জন্য হলেও বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেওয়া উচিৎ
    Total Reply(0) Reply
  • Fazle Azim Nazrul ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৪ এএম says : 0
    আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন, যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা ছিনিয়ে নেন, আর সবাইকে ক্ষমতা দিলেও সম্মানিত করেন না ।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Hossain ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৫ এএম says : 0
    এভাবে রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশের উপর হামলা চালিয়ে দিবেন, আর বলবেন বিএনপির আন্দোলন কোন ঈদের পর হবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Apon Al Imdadul ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৬ এএম says : 0
    দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Ismail ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৭ এএম says : 0
    দিন শেষে ইশরাক হোসেন নায়ক ভিলেন বরাবরই পুলিশ। বিপদে কর্মীদের কিভাবে উদ্ধার করতে হয় বি এন পির বড় বড় নেতাদের তার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Abu Hanif ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৭ এএম says : 0
    তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Jakir Hossain ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৯:১৮ এএম says : 0
    Same Same
    Total Reply(0) Reply
  • A Rahman ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৩৬ পিএম says : 0
    The behavior of police is more brutal than Pak Police and Army? Are we Bangladeshi live in Sisi's Egypt, Hitler's Germany or in Yahia's Pakistan? We have no freedom of speech, no freedom of writing, no freedom of procession. The Police and Administration do more torture on our people than the Pakistan period. I could not imagine that I would ever see such a devastating situation in my homeland. ..
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Habibur Rahman ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৮ এএম says : 0
    মাজলুমানের বদ দুয়া আল্লাহর কাছে কবুল হবেই। আজ নয় কাল জালিমের পতন হবেই, ইনশাআল্লাহ্!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ