Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জিয়ার খেতাব বাতিলের এখতিয়ার জামুকার নেই

বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৫ এএম

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সেক্টর ও ফোর্সেস কমান্ডার ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাহারের সরকারি হঠকারী ও অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভাগীয় পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা জানায়, মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের কোনো এখতিয়ার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার নেই। সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে উল্লেখ করে বক্তারা আরো জানায়, চলতি বছরেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। আল জাজিরা ক্ষুদ্র একটি অংশ প্রকাশ করেছে। এতেই ভয়ে কম্পন শুরু হয়েছে সরকারের। এটাই তাদের পতনের লক্ষণ।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, নাসিমন ভবনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আল জাজিরায় আরও তথ্য আসছে, তাতে সরকারের দেশে ও দেশের বাইরে হাড়ির খবরও বের হয়ে যাবে। আল জাজিরার পরবর্তী প্রতিবেদনে বহু লোকের নাম জড়িত আছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে সকারের একটিও উত্তর পেলাম না। সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরে অর্থাৎ চলতি বছরেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। তাদের মধ্যে কম্পন শুরু হয়েছে।

আমীর খসরু বলেন, জিয়াউর রহমান বীর উত্তম খেতাব পেয়ে গৌরবান্বিত হননি, বরং বীর উত্তম পদটি গৌরবান্বিত হয়েছে। বিএনপিতে অনেক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আছেন কিন্তু আওয়ামী লীগে এমন লোক খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, রোজার পর, ঈদের পর এরকম দিনক্ষণ দেখে আন্দোলন হয় না। যে কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকার পতন হবে, সেই কর্মসূচি আসবে। এখন প্রতিদিনই আন্দোলন। আমরা-তো নেমেই গেছি মাঠে, আর ফিরে যাবো না।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান. মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এম এ আজিজ প্রমুখ।
খুলনা ব্যুরো জানায়, মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের কোনো এখতিয়ার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।

তিনি বলেন, জামুকা তাদের নিজস্ব বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা তাদের এখতিয়ার বহির্ভূত এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী যে কথা বলেছে সেটাও তার এখতিয়ার বহির্ভূত। বীরউত্তম, বীরশ্রেষ্ঠ, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক-খেতাব মামা বাড়ির আবদার নয়; এটা আমরা যুদ্ধ করে অর্জন করেছি। কেউ এই খেতাব দয়ায় দেয়নি। এই খেতাব কেড়ে নেয়ার আপনারা কে?
মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সেক্টর ও ফোর্সেস কমান্ডার ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাহারের সরকারি হঠকারী ও অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মঞ্জু হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিলে সে হাত পুড়ে যাবে। বাংলার জনগন সে হাত ভেঙে গুড়িয়ে দিবে।
আল-জাজিরা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সরকার বিএনপি আতঙ্কে ভুগছেন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অবৈধ হাসিনা সরকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাবে হাত দিয়ে বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়েছে। এখন শুধু কিভাবে বিদায় নিবেন সেটা দেখার সময় মাত্র।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি সভাপতি এ্যাড. শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপিসাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান, মীর কায়সেদ আলী, এড. এসআর ফারুক, এড. ফজলে হালিম লিটন, প্রিন্সিপাল তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, সিরাজুল হক নান্নু, শেখ আবু হোসেন বাবু, মুজিবর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওহেদুজ্জামান রানা। পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল গফ্ফার।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি রাজশাহী জেলা ও মহানগর এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর মালোপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের ষড়যন্ত্র, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য সাবেক এমপি জাহান পান্না ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বতর্মান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানা।

বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশের উন্নয়নের রুপকার, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে নিয়ে যতই ঘৃন্য রাজনীতি করা হক না কেন বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে তাঁর নাম কখনোই মুছে ফেলা যাবেনা। কারণ জিয়াউর রহমান না জন্মালে বাংলাদেশ নামে কোন ভূখন্ডের সৃষ্টি হতনা। জনগণ যখন হানাদার বাহিনীর আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলো ঠিক তখনই জিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা দেন এবং নিজে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেন। অথচ সে সময়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতের বিলাসবহুল হোটেলে ফূর্তিতে দিন কাটাচ্ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

তারা বলেন, আল জাজিরা চ্যানেলে এই সরকারকে নিয়ে একটি খবর প্রকাশিত হয়। যা ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ ম্যধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জনগণের চোখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নিতে এই অবৈধ সরকার এই ঘৃণ্য রাজনীতি করছে। এই রাজনীতি বন্ধ না করলে দ্রুত সময়ে মধ্যে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এই আন্দোনের মাধ্যমেই এই বিনা ভোটের সরকারকে বিতাাড়িত করা হবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন। সেসাথে সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ