পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য দুবাইবাসীকে আহবান করেছেন বিশ্ব ক্রিকেটের শীর্ষ তারকা সাকিব আল হাসান। এতে করে দুবাইয়ের বিনিয়োগকারীসহ বাংলাদেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে বলে জানান বাংলাদেশ শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের এই শুভেচ্ছাদূত।
গতকাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বুাইয়ের পার্ক হায়াত হোটেলে ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ আয়োজিত ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার : পোটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস’ শীর্ষক ৪ দিনব্যাপি রোড শো’র তৃতীয় দিনে ‘ স্কোপ অব প্রাইভেট ইক্যুইটি এ্যান্ড ভেঞ্জার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই আহবান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুবাই ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অথোরিটির প্রধান নির্বাহি ব্রায়ান স্টায়ারওয়াল্ট। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) সভাপতি শামীম আহসান ও সঞ্চালনা করেন ইউসিবি ক্যাপিটালের সিইও এসএম রাশিদুল হাসান।
অনুষ্ঠানের শেষ দিকে দৈনিক ইনকিলাবের ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউর রহমান সোহাগ হঠাৎ করে বিশ্ব সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হন। যা পুরো অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলে।
নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেক উন্নতি হয়েছে এবং আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে দেশের শেয়ারবাজার ভালো করছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এসব কারণে বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের উত্তম জায়গায় পরিণত হয়েছে। তাই দুবাইবাসীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহবান করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অনেক স্টার্টআপ কোম্পানি গড়ে উঠেছে। যেগুলো এখন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সবাইকে আহবান করেন তিনি। বর্তমানে আমাদের সলিড ফিন্যান্সিয়াল ফান্ড রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান। আমাদেও দেশের পাশেই ভারত, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ জনসংখ্যা সুবিধা ভোগ করছে। যাদের গড় বয়স ২৭ বছরের কিছুটা বেশি। তারা দেশের অর্থনীতি প্রবৃ্দ্িধতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এ দেশের অধিকাংশ মানুষ দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে থাকে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের মানুষ শক্ত আর্থিক পদক্ষেপ উপভোগ করছে। আপনারা যদি অন্য কোন দেশের সাথে তুলনা করেন তাহলে দেখতে পারবেন আমাদের দেশ আমদানি, রফতানিসহ অন্যান্য ব্যবসায় এগিয়ে যাচ্ছে। একটা ভালো অবস্থানে রয়েছে।
প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমানে রিজার্ভের পরিমান খুবই ভালো। আমাদের দেশে অনেক ভালো আইন রয়েছে এবং আমরা যারা দায়িত্বে আছি তারা সবাই এগুলো পর্যবেক্ষন করি। বিনিয়োগকারীদের সকল স্বার্থরক্ষায় কাজ করছি আমরা। এদেশের রয়েছে ‘বিবি’ রেটিং। আমরা আশা করছি এটি আরও উন্নতি লাভ করবে। সামগ্রিক আর্থিক খাতে উন্নতি হবে বাংলাদেশের। এখনই বাংলাদেশে বিনিয়োগের সঠিক সময়। আপনারা যত ইচ্ছে তত বিনিয়োগ করতে পারেন এবং কোন অনুমোদন ছাড়াই ইচ্ছেমত টাকা ফেরত নিয়ে চলে আসতে পারবেন। আমরা বাজারের উন্নতির জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। এর মধ্যে একটি হলো বাজারে সার্বিক ডিজিটালাইজেশন করা। ফলে আইটি সেক্টর অনেক এগিয়ে গেছে।
প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমাদের রয়েছে প্রচুর শ্রম শক্তি। শিক্ষার হার ২৬ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি চলে আসছে। সুতরাং আমাদের রয়েছে শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত শ্রমশক্তি। আপনারা দেখেছেন আমরা বিভিন্ন ব্যবসায় ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ সরবরাহ করছি। তাই সকলকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান করছি। এর মাধ্যমে আমাদের দেশের রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো উন্নতি লাভ করবে। করোনার সময়ে বাংলাদেশের আইটি খাত ভিত্তিক অনেক ব্যবসায় গড়ে উঠেছে। তাছাড়াও এ সময় অনলাইন ব্যবসায় খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমাদের দেশে চাল ডাল, নগদ, সহযসহ আরও অনেক কোম্পানি গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এদের রয়েছে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি। সুতরাং বাংলাদেশে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুবাই ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অথোরিটির প্রধান নির্বাহি ব্রায়ান স্টায়ারওয়াল্ট বলেন, করোনা মহামারি বিশ্বকে বিপর্যন্ত করেছে। তবে এর সুফলও রয়েছে, বিশ্বব্যাপি প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, আরব আমিরাত ও বাংলাদেশ বন্ধু রাষ্ট্র। দুই দেশেরই চলতি বছর সুবর্ণজয়ন্তী সামনে। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক সম্ভাবনাময়। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রযুক্তিতে বিশেষ নজর দিতে হবে। একই সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শামীম আহসান বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ নিয়ে আসছে এবং উদ্ভাবনী উদ্যোক্তাদের বড় ধরনের রিটার্নের সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশের ই-কমার্স মার্কেট প্রতিদিনই বড় হচ্ছে। বর্তমান মার্কেট ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। অনলাইনভিত্তিক প্লাটফর্মে নতুন নতুন ক্রেতা তৈরি হচ্ছে। আসছে নতুন বিনিয়োগ। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো জোর দিচ্ছে অনলাইন কেনাকাটার ওপর। চলমান মহামারি করোনায় অনলাইনে কেনাকাটার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। তাই আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে ই কমার্স মার্কেট ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। আর তাই ভেঞ্চার ক্যাপিটালে বিদেশিদের বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএসইসির কমিশনার কামালুজ্জামান, নির্বাহি পরিচালক মাহবুবুল আলম, অর্থমন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব নাহিদ হোসেন, সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মাহতাবুর রহমান, শাহজালাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান পরামর্শক মোহাম্মদ ইউনুস, এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালক আদনান ইমাম, বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, এলআর গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চীফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার রিয়াজ ইসলাম, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশিকুর রহমান, ইউসিবি স্টক অ্যান্ড ব্রোকারেজের সিইও রহমত পাশা প্রমুখ।
চারদিনব্যাপি এই রোডশো’ গত মঙ্গলবার শুরু হয়। আজ শেষ দিনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈঠক। এখানে বিনিয়োগকারীদেও ছোট ছোট গ্রুপ অংশ নেবে। পাশাপাশি আজ দুবাইতে ইউসিবি স্টক অ্যান্ড ব্রোকারেজের ডিজিটাল বুথ উদ্বোধন করা হবে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।