Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতি ও সাফল্য

মো. সেলিম হোসেন | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের মোকাবিলা করতে হয়। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৯১টি বড়ো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। তাছাড়া ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করতে হয়েছে। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। বাংলাদেশের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচিকে সুদৃঢ় করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে আনা সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ সমাদৃত হয়েছে সারাবিশ্বে। দারিদ্র্যমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।

দুর্যোগ ঝুঁকি-হ্রাস ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ক কার্যক্রমকে সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করা এবং সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১, মৃতদেহ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) ২০১৯ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রণীত হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রতিবন্ধী, নারী, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুসহ দুর্গত জনগোষ্ঠীর চাহিদা নিরুপন ও বাস্তবায়ন। ২০১৫-২০৩০ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক। উল্লেখিত আইন, বিধি, পরিকল্পনা ও নীতিমালার আলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক এর লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সাফল্যের মূলে রয়েছে স্থানীয়ভাবে বিন্যস্ত শক্তিশালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো। সরকার স্থানীয়ভাবে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ কার্যক্রমের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ৫২ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব আনয়নের মাধ্যমে এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে। এখানে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী এবং জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ২০১৬ থেকে আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত ২২ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

দুর্যোগে সাড়াদান এবং আগাম সতর্কবার্তা প্রচারে সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ সাড়াদান কেন্দ্রগুলোর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্র (এনডিআরসিসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, আসন্ন দুর্যোগের কবল থেকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বেতার, টেলিভিশন এবং স্থানীয়ভাবে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি দ্রুত ও অধিকতর কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) চালু করা হয়েছে। মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ১০৯০(টোল ফ্রি) নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের আগাম বার্তা পেয়ে জনগণ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।

ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত, মেরিন রেস্কিউ বোট, মেগাফোন সাইরেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে। এ কার্যক্রম সহজ করার জন্য আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। যে কোনো দুর্যোগে দুর্গত মানুষের তাৎক্ষণিক আশ্রয় ও খাবারের জন্য তাবু ও ঢেউটিন এবং শুকনো খাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মজুদ রাখা হয়েছে।
উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল একটি স্বয়সম্পূর্ণ ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ওপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ইতিমধ্যে দেশের ছয়টি সিটি করপোরেশন ও তিনটি জেলার ভূমিকম্প ঝুঁকি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্পসহ দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় কন্টিনজেন্সি প্ল্যানও তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড হালনাগাদ করনের লক্ষ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে।

দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন কার্যক্রমে জনগণকে সম্পৃক্ত করে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে গতিশীল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রমের আওতায় তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠক্রমের বিভিন্ন স্তরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ চালু রয়েছে। দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা দেখে স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালীন দুর্যোগ ঝুঁকি-হ্রাসে উপক‚লীয় বনায়ন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) চালু করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু করেন। বর্তমানে সমুদ্র উপক‚লীয় ১৩টি জেলাসহ ১৯ টি জেলায় এর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সেখানে ৫৫ হাজার ৫১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক কর্মরত আছেন। সম্প্রতি মহিলা স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটও গঠন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা হতে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, যা সর্ব সাধারণের কাছে মুজিব কিল্লা নামে পরিচিত। তারই আধুনিক রূপে উপক‚লীয় ও বন্যা উপদ্রুত ১৪৮ টি উপজেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। উপক‚লীয় দুর্গত জনগণ যেমন সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে তেমনি তাদের প্রাণিসম্পদকে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহহীন ‘সবার জন্য বাসস্থান’ স্লোগান অনুযায়ী দেশব্যাপী দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কাবিখা ও টিআর কর্মসূচির বিশেষখাতে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে মোট ২৮ হাজার ২২৭ টি দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ করা হয়। তাছাড়া মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রতিটি গ্রামে একটি করে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে কর্মহীন মৌসুমে কর্মক্ষম বেকারদের স্বল্পমেয়াদি কর্মসংস্থানে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি(ইজিপিপি)’র কার্যক্রম চলমান। গ্রামীণ দুর্গম জনপদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরু রাস্তা, আশ্রয়কেন্দ্র, সংযোগ সড়ক, হাট বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে কাবিখা ও টিআর কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছর হতে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত ১২ লক্ষ ৯১ হাজার ১৬১টি সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থ বছর হতে ২০১৯-২০ অর্থ বছর পর্যন্ত দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৮ লক্ষ ১০ হাজার ৯৫২টি পরিবারকে গৃহ নির্মাণের জন্য ৪ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৩৫ বান্ডিল ঢেউটিন এবং নির্মাণ ব্যয় বাবদ ২৬১ কোটি ২৫ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান করা হয়। উপক‚লীয় এলাকায় বয়স্ক, গর্ভবতী, শিশু ও প্রতিবন্ধিতাবান্ধব ৩২০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় দুই লক্ষ ৫৬ হাজার বিপদাপন্ন মানুষ এবং প্রায় ৪৪ গবাদিপশুর আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙ্গন এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে বন্যা পীড়িত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দ্বিতল বিশিষ্ট ২৩০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৯২ হাজার মানুষ এবং ২৩ হাজার গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১৮-২০২২ মেয়াদে ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। দুর্যোগে গবাদিপশু সহ জনগণের আশ্রয় কেন্দ্রে যাতায়াত, উৎপাদিত পণ্য হাট-বাজারে পরিবহণ ও বিপণন সহজতর করাসহ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে মান্ধাতা আমলের বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে দেশে ২৬ হাজার ৩৩১টি পাকা ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। দুর্যোগে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের লক্ষ্যে জেলা পর্যায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ ও বিতরণের লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৬টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ কার্যক্রম চলমান। দেশের ৪৯২টি উপজেলায় মোট ৫ হাজার ৭৮৫ কিলোমিটার গ্রামীণরাস্তা টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন ঘূর্ণিঝড় প্রবণ উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত পানি পরিশোধনে ৩০টি মাউন্টেড স্যালাইন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কারণে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিপদাপন্নতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সহজ হয়েছে। এছাড়া বজ্রপাত মোকাবিলায় সনাতন পদ্ধতি হিসেবে তাল বীজ রোপন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ুর ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে কাক্সিক্ষত উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দুর্যোগ ঝুঁকি-হ্রাস বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে সরকার স¤প্রতি ১০০ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছে। দুর্যোগে ঝুঁকি হ্রাসে জীবন ও সম্পদের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয়, টেকসই ও নিরাপদ দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে।
লেখক: সিনিয়র তথ্য অফিসার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্যোগ-ব্যবস্থাপনা
আরও পড়ুন