৯৫ রানে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জিতে দুই ম্যাচের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাবর আজমের দল। স্বাগতিকরা প্রথম টেস্ট জিতেছিল ৭ উইকেটে।
৩৭০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পঞ্চম দিন ২৭৪ রানে গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রায় ১৮ বছর পর দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতল পাকিস্তান। তা-ও আবার হোয়াইটওয়াশ করে!
২৪৩ বলে তিন ছক্কা ও ১৩ চারে ১০৮ রান করেন মারক্রাম। প্রথম ইনিংসে ৫৪ রানে ৫ উইকেট নেওয়া হাসান এবার ৫ উইকেট নেন ৬০ রানে। দলে ফেরার সিরিজে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পেলেন ১০ উইকেটের স্বাদ। পাকিস্তানের অষ্টম পেসার হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন তিনি।
এই জয়ের ২০১৭ সালের পর নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিং পাঁচে উঠল পাকিস্তান।
১ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে সোমবার দিন শুরু করে সফরকারীরা। জয়ের জন্য শেষ দিনে প্রয়োজন ছিল আরও ২৪৩ রান। আগের দিন দৃঢ়তা দেখানো জুটি এদিন এগোতে পারেনি এক ধাপও। দিনের তৃতীয় বলে রাসি ফন ডার ডাসেনকে বোল্ড করে ৯৪ রানের জুটি ভাঙেন হাসান। পরে এলবিডব্লিউ করে দ্রুত ফেরান ফাফ দু প্লেসিকে।
ইনিংসে নিজেদের সেরা জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দিনই ফিফটি পাওয়া মারক্রাম ছিলেন সাবধানী, শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন টেম্বা বাভুমা। দ্রুতই জমে যায় তাদের জুটি।
লাঞ্চের আগেই ২২১ বলে পঞ্চম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মারক্রাম। বাভুমা ছিলেন ফিফটির কাছে। ৩ উইকেটে ২১৯ রানের দৃঢ় ভিতে দাঁড়ানো দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের সম্ভাবনা ছিল উজ্জ্বল।
লাঞ্চ থেকে ফিরে একই ভাবে খেলে জুটির রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান দুই থিতু ব্যাটসম্যান। এর আগেই বাভুমা পান ফিফটির দেখা।
দ্বিতীয় নতুন বলে সব হিসেব পাল্টে দেন হাসান। মারক্রামের প্রতিরোধ ভাঙার পর কুইন্টন ডি কককে দেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন মারক্রাম। ড্রাইভ করার চেষ্টায় একই জায়গায় ক্যাচ দেন ডি কক।
মারক্রাম ও বাভুমার ১০৬ রানের জুটি ভাঙার পর আর তেমন কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
৬ চারে ৬১ রান করা বাভুমাকে কট বিহাইন্ড করার পর শূন্য রানে কেশভ মহরাজ ও কাগিসো রাবাদাকে বিদায় করেন আফ্রিদি। এর মাঝেই জর্জ লিন্ডেকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট নেন হাসান।
এক প্রান্ত আগলে রাখা ভিয়ান মুল্ডারকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে দারুণ এক জয় এনে দেন ইয়াসির শাহ। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ৭ উইকেট হারায় কেবল ৩৪ রান। দ্বিতীয় নতুন বলে তাদের ইনিংস টেকে কেবল ১১.৪ ওভার।
আফ্রিদি ৪ উইকেট নেন ৫১ রানে। দুই ইনিংসেই দুর্দান্ত বোলিংয়ে হাসান জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। উইকেটের সামনে-পেছনে দৃঢ়তা দেখানো কিপার-ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ২৭২ ও ২য় ইনিংস : ২৯৮
দক্ষিণ আফ্রিকা : ২০১ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৭০, আগের দিন ১২৭/১) ৯১.৪ ওভারে ২৭৪ (মারক্রাম ১০৮, ফন ডার ডাসেন ৪৮, দু প্লেসি ৫, বাভুমা ৬১, ডি কক ০, মুল্ডার ২০, লিন্ডে ৪, মহারাজ ০, রাবাদা ০, নরকিয়া ২*; আফ্রিদি ২১-৬-৫১-৪, হাসান ১৬-২-৬০-৫, নুমান ২০-৬-৬৩-০, ইয়াসির ২৩.৪-৫-৫৬-১, ফাহিম ১০-২-৩৭-০, ফাওয়াদ ১-০-৫-০)।
ফল : পাকিস্তান ৯৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : হাসান আলি
সিরিজ : ২ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ২-০তে জয়ী
ম্যান অব দ্য সিরিজ : মোহাম্মদ রিজওয়ান