মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে এখন আন্দোলন হলে, কোনোরকম সমস্যা হলেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। চার বছরে চারশবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়েছে ভারতে। কিছুদিন আগে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়ার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু ভারতের মানুষ কি এই অধিকার ভোগ করতে পারছেন? প্রশ্ন উঠছে, কারণ, টপ টেন ভিপিএনের রিপোর্ট বলছে, ভারতে গত চার বছরে চারশ বার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমন নয় যে, সারা ভারতে পরিষেবা বন্ধ ছিল। কিন্তু পরিষেবা বন্ধ করা হয় কখনো কোনো রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট এলাকায়। অথবা পুরো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে।
রিপোর্ট অনুসারে গত এক মাসে সাতবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচবার বন্ধ করা হয়েছে, দিল্লি, ঝজ্জর, সোনেপত, পলওয়ালের মতো জায়গায়, কৃষক বিক্ষোভের জন্য। দিল্লির সীমানায় থাকা কৃষকরা বেশ কয়েকবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকার অভিযোগ করেছেন। কৃষকদের অভিযোগ, তাঁদের আন্দোলনে বাধা দেয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। আর সরকারের দাবি, লালকেল্লার ঘটনার পর হিংসা যাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ।
সব চেয়ে বেশিদিন ধরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিল অবশ্য জম্মু ও কাশ্মীরে। ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার পর কাশ্মীর উপত্যকায় ২৩৩ দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। এতদিন ধরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকা ভারত তো বটেই বিশ্বের আর কোনো দেশে হয়নি। সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী আন্দোলন চলার সময়ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছিল।
তবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার কাজটা যে শুধু কেন্দ্রীয় সরকার করে তা নয়, অনেক রাজ্য সরকারও করে থাকে। বিশেষ করে কোনো কারণে উত্তেজনা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। আর এই প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। ২০২০ সালের হিসাব, আট হাজার ৯২৭ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল ভারতে।
জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়া উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, হরিয়ানা ও পশ্চিমবঙ্গে নেট পরিষেবা বন্ধ করার ঘটনা বেশি ঘটে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, গণতান্ত্রিক দেশগুলির মধ্যে নেট পরিষেবা বন্ধ করার তালিকায় ভারতের স্থান একেবারে উপরে। ইন্টারনেটশাটডাউন ডট কমের হিসাব, জম্মু ও কাশ্মীরে ২২৩ বার, রাজস্থানে ৬৫ বার, উত্তর প্রদেশে ২৭ বার, হরিয়ানা ও পশ্চিমবঙ্গে ১২ বার, মহারাষ্ট্রে ১০ বার ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ভারতে আইন অনুযায়ী কেন্দ্র বা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের নির্দেশে সাময়িকভাবে টেলিকম পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া যেতে পারে। অ্যাকসেস নাওয়ের রিপোর্ট বলছে, ভারতে অনেক সময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। ২০১৭ সালে ইন্টারনেট শাটডাউনের ৭৯টি ঘটনার মধ্যে ৬১টি ছিল সতর্কতামূলক।
কলকাতার এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার মতে, কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার কারণ আছে। বিশেষ করে স¤প্রদায়িক উত্তেজনা, সংঘর্ষ দেখা দিলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়। না হলে, সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ালে তা সামাল দেয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। কিন্তু তাই বলে সরকার-বিরোধী জোরালো প্রতিবাদ হলেই নেট বন্ধ রাখতে হবে, তা একেবারেই কাম্য নয়।
তবে বিজেপি-র যুব নেতা সৌরভ সিকদার ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, আমি এই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সমর্থন করছি। ভারতে আরবান নকশালরা আন্দোলনের নামে দেশবিরোধী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। সেখানে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে যুব সমাজের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পিটিআই, ইন্ডিয়া টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।