নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
চা-বিরতির খুব বেশি বাকি নেই। কিন্তু হঠাৎই যেন অস্থির হয়ে উঠলেন আগের পুরোটা সময় ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া সাদমান ইসলাম। ১৪ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে পেলেওন ফিফটির দেখাও। তবে হঠাৎই জোমেল ওয়ারিকানের বলে বাজে শটে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫৯ রান করে বিদায় এই ওপেনারের। অথচ রিভিউ নিলেই তিনি বেঁচে যান!
ওয়ারিকানের বলে সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন । তিনি পরাস্ত হলে জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার শরফুদৌল্লাহ সৈকত। দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি পাওয়া সাদমান দ্বিধায় ছিলেন।
এসব ক্ষেত্রে অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানই দিতে পারেন আদর্শ পরামর্শ। ১৫৪ বল মোকাবিলা করা বাঁহাতি সাদমান ছুটলেন মুশফিকুর রহিমের দিকে। অভিজ্ঞ মুশফিক রিভিউ নেওয়ার আলাপে সায় দিলেন না। মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেন সাদমান।
অথচ রিপ্লেতে দেখা গেল, লেগ স্টাম্পের ওপর ‘পিচড’ হওয়া বল বেরিয়ে গেছে স্টাম্প অনেকখানি মিস করে! তখন অবশ্য আক্ষেপ করা ছাড়া কিছুই করার নেই।
শুধু সাদমানই নন, বেশিরভাগ আউটেই যে বোলারদের খাটুনির চেয়ে বড় হয়ে গেল ভুলের খেসারত!
তবুও চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২৪২ রান করেছে বাংলাদেশ। আরও অন্তত দুই উইকেট কম হারালে বলা যেত দিনটা পরিস্কার বাংলাদেশের।
দিনের শেষ সেশনটাই হয়েছে ভালো। প্রথম দুই সেশনে মন্থর রান তোলার গতির সঙ্গে দুটি করে উইকেট পড়েছিল। শেষ সেশনে ১ উইকেট হারিয়ে রান উঠেছে ১০২। ৩৯ রান নিয়ে অপরাজিত সাকিব আল হাসান। ২ রানে জীবন পেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলা লিটন ব্যাট করছেন ৩৪ রান নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৯০ ওভারে ২৪২/৫ (সাদমান ৫৯, তামিম ৯, শান্ত ২৫, মুমিনুল ২৬, মুশফিক ৩৮, সাকিব ব্যাটিং ৩৯* , লিটন ব্যাটিং ৩৪*; রোচ ১/৪৪, গ্যাব্রিয়েল ০/৫১, কর্নওয়াল ০/৫৬, মেয়ার্স ০/১৬, ওয়ারিকান ৩/৫৮, ব্যাথওয়েট ০/১৩)।
হতাশা উপহার দিয়ে ফিরলেন মুমিনুলও
উইন্ডিজের পেসাররা শুরুতে এলোমেলো থাকলেও পরে পেলেন ছন্দ। শার্প টার্নে ভুগালেন রাহকিম কর্নওয়েল। তাদের সামলে বেশ ভালোভাবেই টিকে গেছেন সাদমান ইসলাম। তবে ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে তামিম ইকবাল আর নাজমুল হাসান শান্তকে হারানোর আক্ষেপে পুড়ছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনে কাউকেই এগিয়ে রাখা যায়নি। ২৯ ওভারে বাংলাদেশ করে ৬৯ রান। দুই উইকেট তুলে নেয় উইন্ডিজ।
তবে ধীরে ধীরে নিজেকে মেলে ধরছেন দীর্ঘ দিন পর টেস্টে ফেরা সাদমান। ফিফটি তুলে অপরাজিত আছেন ৫৪ রানে। কিন্তু মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটিটা জমে ওঠার মুহূর্তেই ফের হতাশা বাংলাদেশ শিবিরে। ২৬ রান করে স্বাগতিক অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে ৫৩ রানের জুটি।
৫১ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশের সংগ্রহ ১১৯। সাদমানকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে েএসেছেন আরেক টেস্ট স্পেশালিস্ট মুশফিকুর রহিম।
শান্তর বিদায়ে ভাঙল জুটি
জুটিটা জমে উঠেছিল কেবল। তবে সেটি ধরে রাখতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। তার বিদায়ে ভাঙল ৪৩ রানের জুটি। ২৫ রানে রানআউটে কাটা পড়েছেন বাংলাদেশের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
২৭ ওভার শেষে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬৭। ৩৭ রান নিয়ে খেলছেন আপের ওপেনার সাদমান ইসলাম। তাকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসা অধিনায়ক মুমিনুল হক খেলছেন ১ রান নিয়ে।
শুরুতেই তামিমকে হারাল বাংলাদেশ
দীর্ঘ ১০ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে টস ভাগ্য এসেছিল বাংলাদেশের পক্ষে। সেখানে জিতে ব্যাটিংই বেছে নিয়েছিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক মুমিনুল হক। তবে শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারাল বাংলাদেশ।
১৫ বলে ৯ রান করে ফিরেছেন দেশসেরা ওপেনার। ১৫ ওভার শেষে বালাদেশের সংগ্রহ ৪৪/১। আরেক ওপেনার সাদমান আছেন ২১ রানে, তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন ১৪ রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত।
আজ বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দুই মাচ টেস্ট সিরিচের প্রথমটি। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ এই সিরিজের দ্বিতীয়টি হবে ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে, ১১ ফেব্রুয়ারি।
টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তামিমকে। এদিন ৯ রান করে মুশফিকুর রহিমকে টপকে যান তিনি।
টেস্টে মুশফিকের রান ৪ হাজার ৪১৩। বেশি দূরে যেতে না পারা তামিমের ঝুুলিতে ৪ হাজার ৪১৪ রান। মুশফিক এখনো ব্যাটিংয়ে নামেননি। তাই তার সামনে সুযোগ আছে ওপেনারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
১৫ বলে ২ চারে ৯ রান করা তামিম ফেরেন পঞ্চম ওভারে। কেমার রোচের দেখার মতো এক ডেলিভারিতে ডিফেন্স করতে যান। বল কানায় লেগে বোল্ড হন। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে চতুর্থবার রোচের বলে বোল্ড হলেন তামিম।
শুরুর আগে এই ম্যাচেও থাকল ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের ছোঁয়া। হাঁটু গেড়ে বসে মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশপানে তুলে সেই আন্দোলনে সংহতি জানালেন দুই দলের ক্রিকেটার আর আম্পায়াররা।
দলের অন্দর-বাহির
সাগরিকায় সবশেষ টেস্টে কোনো স্পেশালিস্ট পেসার ছাড়াই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। এবার অন্তত একজন পেসার আছে! সঙ্গে একাদশে স্পিনার চারজন। সেই ১ পেসারের নামটিও বিস্ময়কর। গত কিছুদিনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মূল পেসার হয়ে উঠেছিলেন আবু জায়েদ চৌধুরি। কিন্তু তাকে একাদশে না রেখে নেওয়া হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানকে।
বাংলাদেশ দলে অভিষিক্ত কেউ নেই। স্বাগতিক একাদশে আরেকটি কৌতূহল ছিল ওপেনার নিয়ে। তামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে শেষ পর্যন্ত সুযোগ পেলেন সাদমান ইসলাম। তাতে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম ৬ জনের ৫ জনই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে অভিষিক্ত ক্রিকেটার তিনজন, শেন মোজলি, এনক্রুমা বনার ও কাইল মেয়ার্স। ২৬ বছর বয়সী মোজলি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, ৩২ বছর বয়সী বনার ব্যাটসম্যান ও লেগ স্পিনার, ২৮ বছর বয়সী মেয়ার্স বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি পেসার।
অনন্য অভিষেক
এই ম্যাচ দিয়ে ম্যাচ অফিসিয়ালদের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ক্রিকেটে সূচনা হলো নতুন অধ্যায়ের। দেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ রেফারি হিসেবে যাত্রা শুরু করলেন নিয়ামুর রশিদ। পাশাপাশি টেস্ট আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হলো শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদের।
বাংলাদেশের পঞ্চম টেস্ট আম্পায়ার তিনি। সবশেষ ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে টেস্ট পরিচালনা করেছিলেন এনামুল হক। দেশের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ার টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করছেন ১৯ বছর পর।
নবযাত্রা
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে গেল বছরের ফেব্রুয়ারির পর কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই বাইরে থাকতে হয়েছে। অবশেষে জানুয়ারিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটে ফেরে বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে ফেরাটা স্মরণীয় করেছে টাইগাররা। প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ দল। তবে ওয়ানডে সিরিজে অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় না থাকলেও, টেস্টে উইন্ডিজ দলে রয়েছেন বেশ ক’জন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়।
অবশ্য ২০১৮ সালে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করায় এবারো আশাবাদী বাংলাদেশ শিবির।
একাদশ
বাংলাদেশ : তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জন ক্যাম্পবেল, শেন মোজলি, এনক্রুমা বনার, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, জশুয়া দা সিলভা, কাইল মেয়ার্স, রাকিম কর্নওয়াল, কেমার রোচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল, জোমেল ওয়ারিক্যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।