Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৬০ হাজার কৃষকের সর্বনাশ

বাঁখখালী নদীর রাবার ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে : | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্যাম সংস্কার কাজের চরম ধীরগতির কারণে কক্সবাজার সদর এবং রামু উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার কৃষক চাষাবাদ জন্য পানি পাচ্ছে না। এতে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এলজিইডির কক্সবাজার নির্বাহী প্রকোশলী আনিসুর রহমান জানান, বাঁখখালী নদী খননের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড রাবার ড্যামের ক্ষতি করায় কৃষকদের সর্বনাশের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। বর্তমানে রাবার ড্যাম সংস্কারের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। সহসায় কৃষকদের সমস্যা কেটে যাবে। কৃষকদের দাবি, শহরের পার্শ্ববর্তী চান্দের পাড়া এবং পিএমখালী অংশে নির্মিত রাবার ড্যামটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা। পিএমখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ১৯৯৫ সালে স্থানীয় কৃষকদের ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়া এবং পিএমখালী ইউনিয়নের ঘাটকুলিয়াপাড়া অংশে নির্মিত রাবার ড্যামটি প্রায় ১ বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়েছে। সেটার এক অংশে ধ্বসে পড়ার কারণে রাবার ড্যাম ফুলাতে না পারায় এখন ভরামৌসুমে কৃষকরা চাষাবাদের জন্য পানি পাচ্ছে না। আমার জানা মতে সেখানে সরকার দ্রæত রাবার ড্যাম সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই রাবার ড্যামের কারণে কক্সবাজার সদর উপজেলার ৮ হাজার এবং রামু উপজেলা ৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদের জন্য পানির সুবিধা পায় প্রায় ৬০ হাজার কৃষক। ১৯৯৫ সালে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতর হতে এই রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলেও এ পর্যন্ত ৩ বার বড় ধরনের সংস্কার বা মেরামত করতে হয়েছে। তবে প্রতিবারেই কাজ হয়েছে খুবই দ্রæত কিন্তু বর্তমানে সংস্কার কাজ হচ্ছে অত্যন্ত ধীর গতীতে এতে সাধারণ কৃষকরা বর্তমানেও চাষাবাদের জন্য পানি না পেয়ে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে এবং আগামীতেও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে।
রাবার ড্যাম সংস্কারের কাজ করা ঠিকাদার ফারুক জানান, অন্যজনের কাছ থেকে কাজটি নিয়েছি। সেখানে যে বাজেট ধরা ছিল সেটা বর্তমানে খরচ হয়ে গেছে জানিনা বাকি কাজ কিভাবে করবো সে বিষয়ে এলজিইডি কর্মকর্তাদের সাথে আমার কথা হচ্ছে। আমি চেষ্টা করছি দ্রæত কাজ শেষ করার জন্য।
ঝিলংজা ইউনিয়নের ঘাটপাড়া এলাকার কৃষক আবদুল আলীম বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে বাঁকখালী নদীর পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে চাষাবাদ করি বর্তমানে রাবার ড্যামের সমস্যার কারনে পানি না পাওয়ায় শীতকালীন সবজি চাষ করতে পারিনি। ২ হেক্টর জমির মধ্যে খুব অল্প জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছি তাও পানির অভাবে ভাল ফলন হয়নি। পিএমখালী ঘাটকুলিয়াপাড়ার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, রাবার ড্যামের খুব কাছের মানুষ তবুও পানি পাচ্ছিনা। আর পানি না হলে চাষাবাদ করা কঠিন। এখন রাবার ড্যামের সমস্যার কারনে এলাকার শত শত কৃষক খুবই কষ্টে আছে।
বাঁকখালী রাবার ড্যাম ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেদারুল আলম বলেন, মূলত প্রায় ৫ বছর ধরে কোন নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি না থাকায় রাবার ড্যামটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। তাই মনে করি দ্রæত নির্বাচনের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে রাবারড্যামের দায়িত্ব দেয়া হলে সবার জন্য উপকার হবে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আকতার সুইটি বলেন, সরকারি কাজে ধীরগতি হওয়ার কারণ নেই হয়তো কোন লজিস্টিক কারণে ধীরগতি হতে পারে। তবুও আমাদের পক্ষ থেকে কাজ দ্রæত শেষ করার তাগাদা দেয়া হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ