গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সাথে যশোর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেশবপুর (যশোর-৬) আসনের এমপি শাহীন চাকলাদারের এক ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে, গত সপ্তাহে কেশবপুরের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী শেখ সাইফুল্লাহ বিরুদ্ধে যেভাবেই হোক মামলা করার নির্দেশ দেন এমপি। প্রয়োজনে ওসিকে নিজেই থানায় বোমা হামলা করে সাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এরইমধ্যে ফোনালাপটির রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে নেট দুনিয়ায়। ফেসবুকে এমপির কঠোর শাস্তি দাবি করে পোস্ট দিয়েছেন বহু প্রতিবাদকারী।
কেশবপুরের পরিবেশবাদী কর্মী সাইফুল্লাহ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সঙ্গে মিলে কাজ করেন। সম্প্রতি তিনি ওই এলাকায় ‘মেসার্স সুপার ব্রিকস’ নামে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একটি ইট ভাটার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালত থেকে ইটভাটার বিরুদ্ধে নির্দেশনা আনায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় এমপি শাহীন চাকলাদার।
এমপি শাহীন চাকলাদার ফোনালাপের এক পর্যায়ে ওসিকে বলেন, ‘আপনি এখন রাত্তিরে থানায় বোম মারেন একটা। মারায়ে ওর নামে মামলা করতে হইবে। পারবেন? আপনি থাকলে এগুলো করতে অইবে। না অইলে কোন জায়গায় করবেন? আমি যা বলছি, লাস্ট কথা এডাই। ঘটনা হচ্ছে আপনি যদি পারেন ওই এলাকা ঠান্ডা রাখতি, আমি বন ও পরিবেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য। ওখানে কারও বাপের ক্ষমতা নেই। তাহলে এ (সাইফুল্লাহ) বারবার যেয়ে কেন করে, আপনি কী করেন?’
এরপর ওসি বলেন, ‘ও (সাইফুল্লাহ) তো স্যার হাইকোর্টের কাগজ নিয়া আসে বারবার’।এরপর এমপি বলেন, ‘আরে কোথার হাইকোর্ট-ফাইকোর্ট। কোর্ট-ফোর্ট যা বলুক, বলুগ্যা। আমাদের খেলা নাই?’
এরপর সাইফুল্লাহকে ফাঁসানোর নির্দেশনা দিয়ে ওসিকে এমপি বলেন, ‘আপনে ওকে যেকোনোভাবে যেকোনো লোক দিয়ে কাইলকে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটায়ে কালকে এটা কাজ করতে হবে, ওকে?… যেকোনো ভাটায় যেয়ে, দরকার হলি পুলিশের লোক যেয়ে সিভিলে যেয়ে বোম ফাটায় দিয়ে চলে আসুক। এখানে হামলা করেছে ডাকাতি করার জন্য। এটা ছিল অমুক। একটা বানাই দিলে হয়া গেল।’
এদিকে এই ঘটনায় শনিবার কেশবপুর থানায় জিডি করেছেন সাইফুল্লাহ। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, শাহীন চাকলাদার ওসিকে যে মামলা করতে বলেছেন তাতে তিনি বর্তমানে জান-মালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই তিনি আইনের সহায়তা চান।
এই ফোনালাপের প্রতিক্রিয়ায় ফেসেুবকে মাওলানা আব্দুস ছাওার লিখেছেন, ‘‘চমৎকার এমপি। থানার ওসি কে থানায় বোম মেরে মানুষদের ধরে ধরে ডাকাতি মামলা দিতে বলে, কি চমৎকার এমপি! ওসি বললেন ওর কাছে হাই কোর্টের কাগজ আছে স্যার, তখন চমৎকার এমপি বলল রাখেন হাইকোর্ট টাইকোর্ট, যেভাবে পারেন ডাকাতি মামলায় দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দেন ওকে? বাঃ বাঃ চমৎকার এমপি।’’
উসমান গণি লিখেছেন, ‘‘অন্যান্য দলকে ফাঁসাইতে চাইছিলো মনে হয়, হায়রে হায় পাটা-পুতার ঘসাঘসি মরিচের জীবন শেশ, হাতি হাতি লরাই করবে অন্যের জমিন শেষ- এই অবস্তা আমাদের। সামনে যে কি আছে। আল্লাহ বাংলার জমিনে ষড়যন্ত্রকারীদের তোমার হাওলা, আমাদের সাধারণদের তুমি ছাড়া আর কেহ নাই আল্লাহ আমাদের সহায় হউক আমিন।
হাজি কাশেম লিখেছেন, ‘‘বাহ বাহ কি সুন্দর নেতাদের চরিত্র। কি বলব আর বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তবে যে বা যারা অসহায় নির্দোষ মানুষকে ফাঁসাবে এবং হয়রানি করবে তাদের বিচার আল্লাহ রাব্বুল আলামিন করবেন দুদিন আগে অথবা পরে, বিচার হবেই ইনশাআল্লাহ।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।