Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১০টি বসন্ত পেরিয়ে গেলেও গণতন্ত্রের ছোঁয়া লাগেনি

মিসরের কারাগারে ভয়াবহ নৃশংসতার শিকার বন্দিরা : অ্যামনেস্টি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

২০১০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫-এর ডিসেম্বর। তিউনিসিয়া থেকে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলনের হাওয়া বয়ে যায় বাহরাইন, মিসর, লিবিয়া, সিরিয়া ও ইয়েমেনে। শাসকদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা প্রবল আন্দোলন যেন মরুর বুকে পানি। সাংবাদিকরা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ওই গণআন্দোলনের নাম দেয় আরব বসন্ত। আরব বসন্তে যেই সুবাস ছড়ানোর কথা ছিল, দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি হয়নি। মিসরের প্রসঙ্গে আসা যাক, তখন রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে হোসনি মোবারকের পতন ঘটে। গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসেন মুসলিম ব্রাদারহুডের মোহাম্মদ মুরসি। সেই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় আর বেশি দিন সইল না মিসরীয়দের কপালে। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনা সমর্থনে নিয়ে গদিতে বসেন সাবেক সেনা প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। সিসির ক্ষমতায় আরোহণকে কেন্দ্র করে আবার উত্তাল হয়ে ওঠে মিশর। বেশ শক্ত হাতে পরিস্থিতি সামাল দেন সিসি, হয়ে ওঠেন খানিকটা প্রতিশোধপরায়ণ। মুরসিসহ মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক নেতাকে বন্দি করা হয়। এসব বন্দির মধ্যে শত শত ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় দেশটিতে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিও। আরব বসন্তের দীর্ঘ ১০টি বসন্ত পেরিয়ে গেলেও গণতন্ত্রের ছোঁয়া লেগেও লাগেনি মিসরে। এমন বাস্তবতায় ২০১০ থেকে আজ অবধি মিসরের কারাগুলোতে অমানবিক নির্যাতন সইতে হচ্ছে বহু বন্দিদের। একে ‘শোচনীয় পরিস্থিতি’ অ্যাখা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি। সোমবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশল জানিয়েছে, সিসি সরকারের অধীনে মিসরের কারাগারের ভয়াবহ কষ্টে দিন পার করছেন বন্দিরা। কিন্তু এই মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে দেশটির সরকার। মানবাধিকার সংস্থাটির মতে, মুসলিম ব্রাদার হুডের নেতা-কর্মীসহ হাজার হাজার বন্দিকে কারাগারে খাবারের কষ্টে রাখা হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ছোট ছোট কারাগারে গাদাগাদি করে রাখায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বন্দিরা। অ্যামনেস্টির অভিযোগ, শুধু মাত্র সিসি সরকারের বিরোধিতায় করায় অন্ধকারাচ্ছন্ন কারাগারে ঠেলে দেওয়া হয়ে বহু মানুষকে। যেখানে কোনো বিশুদ্ধ বাতাস ঢোকার কোনো উপায় নেই। মাঝেমধ্যে বন্দিদের খাবার দেওয়া হচ্ছে না। করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কারাগারে, মৃত্যুর মুখে বন্দিরা। অ্যামনেস্টির মধ্য প্রাচ্যের ও উত্তর আফ্রিকার পরিচালক ফিলিপ লুথার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‹কারা কর্মকর্তারা জনাকীর্ণ কারাগারে বন্দিদের খুবই দুর্দশায় রেখেছে। অ্যামনেস্টির তথ্যে, ২০১৯- ২০২০-এ ১০ বন্দির নির্মম মৃত্যু হয়েছে। মুক্তি পর নির্যাতনের ধকলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১ লাখ ১৪ হাজার মিশরীয় কারাগারে বন্দি। কিন্তু এ বিষয়ে ২০২০ সালে মিশরীয় সরকারকে বারবার অবগত করা হলেও কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মিশরের কারাগারের বন্দি নির্যাতন বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে সিসি সরকার। আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অ্যামনেস্টি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ