বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এলএ শাখায় কোটি কোটি টাকা লুটপাটের সাথে জড়িত দালালরা দুদকের জালে আটকা পড়ছে একে একে। আজও দুই শীর্ষ দালাল মুহিব উল্লাহ ও সাবেক সার্ভেয়ার কেশব লাল দেবকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টায় চট্টগ্রাম জিইসি মোড়স্থ এমইএস কলেজ গেইট এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মে জড়িত থাকা এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আটক দালাল মুহিব উল্লাহ কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের ফরিদ আহমদের ছেলে এবং কেশব লাল দেব কক্সবাজার এলএ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার। বর্তমানে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলএ শাখায় কর্মরত।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, কেশব লাল দেব কক্সবাজার এলএ শাখায় থাকাকালীন সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পকে ঘিরে ভূমি অধিগ্রহণ কাজে মুহিব উল্লাহসহ শতাধিক দালাল ও সরকারী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সিন্ডিকেট করে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধভাবে শতশত কোটি টাকা আয় করেছে বলে অভিযোগ উঠে।
এছাড়াও কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় দুর্নীতি ও নানা অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক দালালদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতেও মুহিব উল্লাহ ও সার্ভেয়ার কেশব লাল দেবের নাম উঠে আসে। তাদের এসব দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে সত্যতাও পেয়েছে দুদক। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথম কাজ ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে দালালদের সিন্ডিকেটটি তৈরি হয়েছে। এসব দালাল জমির মালিকদের নাম দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি নজরে আসার পর দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে অনুসন্ধানে নামে। অনুসন্ধানের শুরুতেই দুদক ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ ওয়াসিম নামের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার এক সার্ভেয়ারকে নগদ টাকাসহ আটক করে।
তার তথ্যের ভিত্তিতে পরে ২২ জুলাই মো. সেলিম উল্লাহ, ৩ আগস্ট মোহাম্মদ কামরুদ্দিন ও সালাহ উদ্দিন নামের তিন দালালকে আটক করে দুদক। আটকের সময় এসব দালালের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার নগদ চেক ও ভূমি অধিগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ মূল নথি উদ্ধার করা হয়। পরে আটক ব্যক্তিদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে প্রায় দেড়’শ দালালের নাম উঠে আসে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া ও তারাবনিয়ারছড়া এলাকা থেকে ৯৩ লাখ টাকাসহ সার্ভেয়ার ওয়াসিমকে আটক করা হয়। সেখান থেকে ১৫ লাখ টাকার চেক ও ঘুষ গ্রহণের বিভিন্ন নথি জব্দ করা হয়। এর পরই জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের প্রতি অমানবিক আচরণ ও আর্থিক হয়রানি প্রকাশ্যে আসে। এর পর পরই ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার ৩০ কর্মকর্তাকে এক আদেশে শাস্তিমূলক বদলি করে ভূমি মন্ত্রণালয়। তার মধ্যে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত ১৯ জন সার্ভেয়ার, সাতজন কানুনগো ও চারজন অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়।
একই অভিযোগে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনকে গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারী) দুপুর ১২ টার দিকে চট্টগ্রামের জিইসি মোড় থেকে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি কক্সবাজার শহরের পেশকারপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে।
মহেশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে এবং কক্সবাজার ও রামুতে রেল লাইনের ভূমি অধিগ্রহণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এল এ শাখায় হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বস্তা ভরে টাকা নিয়ে গেলেও তৎকালীন (সদ্য বিদায়ী) জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন যেন ধূয়াতুলসী পাতা! তিনি কিছুই জানেন না? সচেতন মহলের মতে তিনি এই লুটপাটের দায় এড়াতে পারেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।