গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, যে উদ্দেশ্যে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে তা’এখনো পূরণ হয়নি। মানুষ ন্যায় বিচার পায়নি। গরীব মানুষরা আজো ডাস্টবিনের খাবার কুঁড়িয়ে খাচ্ছে। তিনি বলেন, গোটা দেশ এখন লুটেরাদের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। দশ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। বালিশ, পর্দার ক্রয়ের নামে দেশের সম্পদ লুট করছে। তিনি বলেন, আমাদের যখন পেঁয়াজ দরকার তখন ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে আর ভরা মওসুমে পেঁয়াজ রপ্তানি করে দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়। মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ভ্যাকসিনের নামে ভারত আমাদেরকে কী উপহার দিয়েছে তা ভাববার বিষয়। ভ্যাকসিন যারা এনেছেন আগে তাদের শরীরে প্রয়োগ করতে হবে। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলনের ৩য় জাতীয় যুব কনভেনশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম এসব কথা বলেন।
একই কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে আদর্শবান যুবক ছাড়া সম্ভব নয়। ইসলাম, দেশ ও জাতির কল্যাণে যুবকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) আদর্শবান যুবকদের জন্য দোয়া করেছেন। দেশের সর্বস্তরে দলীয়করণের প্রভাব ও সরকারের ছত্রছায়ায় দিনদিন যুব সমাজ খুন, ধর্ষণ ও সন্ত্রাসে জড়িয়ে পরে দেশকে এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যুবসমাজকে নৈতিকভাবে চরিত্রবান করে গড়ে তুলে একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণের জন্য দেশের প্রতিটি স্তরে ইসলামী যুব আন্দোলনকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। আন্দোলনের আমীর বলেন, আমার বিশ^াস ইসলামী যুব আন্দোলনের হাত ধরেই আগামীর সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কেএম আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত “যুব সমাজের উন্নয়নও ইনসাফপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামই কর্যকর পন্থা’’ এই প্রতিপাদ্য বিষয় সামনে রেখে ৩য় জাতীয় যুব কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। কনভেনশনে ২০২১-২২ সেশনের জন্য মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিনকে সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার শরীফুল ইসলামকে সহ-সভাপতি এবং ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদকে সেক্রেটারী জেনারেল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন আন্দোলনের আমীর।
মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম আরো বলেন, এদেশের যুব সমাজ আজ তাদের আত্মপরিচয় ভুলে যেতে বসেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে একদল সুবিধাভোগী ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ইতিহাস বিকৃত করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা হলে সকল ধর্মের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। আসলে ইসলামের মহান বার্তাকে আমরা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারছি না। এমতাবস্থায় ইসলামী যুব আন্দোলন এদেশের যুবসমাজকে স্বীয় আত্মপরিচয়ে জাগ্রত করে প্রকৃত জনসম্পদে রূপান্তর করার কাজ করে যাচ্ছে।
কনভেনশনে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আলহাজ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম ও মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। উপস্থিত ছিলেন, উত্তর সভাপতি শেখ ফজলে বারী মাসউদ, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন ও ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, দেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। নাগরিক ও মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংসের মুখে। মানুষের নাগরিক অধিকার ভুলুণ্ঠিত। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে তাড়াহুড়া করে নতুন কোন সঙ্কট সৃষ্টি করবেন না। আল্লাহ তায়ালার দান জলবায়ু ও ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা মহামারি অবস্থা ভালোই আছে। তারা বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে দুর্নীতি ও বাণিজ্যিকীকরণের অপরাজনীতি সহ্য করা হবে না। বক্তারা আরো বলেন, বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন পাওয়া দেশের মানুষের নাগরিক অধিকার, তা নিয়ে ছিনিমিনি করতে দেয়া হবে না।
বক্তারা বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়ে এদেশের মানুষের আস্থা শতভাগ হারিয়েছে বর্তমান সরকার। জনগণের মতামতের অধিকার হরণ করা কখনোই কোনো সরকারের জন্য শুভ নয়। সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম আতিকুর রহমান বলেন, করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যুবসমাজ। বৈশি^ক মহামারির কারণে কর্মসংস্থান হারিয়ে অপরাধপ্রবণ হয়ে সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কেউ কেউ। কিন্ত অত্যান্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো সরকার তাদের পুর্নবাসনের জন্য কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।