পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে তার মাজারে ঢল নেমেছিল নেতাকর্মীদের। দিনটি উপলক্ষে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের ঘোষণা দেন। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই প্রচন্ড শীতের সকালে ৮টা থেকেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মাজার প্রাঙ্গনে উপস্থিত হতে থাকেন। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানার নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ১০টার পর থেকেই অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন মাজার প্রাঙ্গণে। বেলা ১১টায় যখন বিএনপি মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন ততক্ষণে চন্দ্রিমা উদ্যানে অবস্থিত জিয়াউর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তখন বিভিন্ন ইউনিট থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল, শ্লোগানে জন্মদিনে শহীদ জিয়াকে স্মরণ করে চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রবেশ করতে থাকেন।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের নিয়ে বেলা ১১টায় শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর ফাতেহা পাঠ শেষে, মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাত শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা (সরকার) ভ্যাকসিন নিয়ে আর এক লুটপাটে নিমগ্ন হয়েছে। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা নেই, যার ফলে ভ্যাকসিন নিয়েও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে।
জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই তিনি নীরব ছিলেন না। তিনি সরাসরি যুদ্ধ করেছেন। রণাঙ্গণে থেকে যুদ্ধ করে তিনি দেশকে মুক্ত করেছেন, স্বাধীন করেছেন। শুধু তাই নয়, ৭৫ সালে যখন জাতি তার ওপরে দায়িত্ব অর্পণ করে তখন জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোও ফিরিয়ে দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বিএনপির ওপরে চলছে অত্যাচার নির্যাতন। ৩৫লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের খুন-গুম করা হচ্ছে। এর থেকে মুক্তির জন্য আজকে আমরা নতুন করে শপথ গ্রহণ করছি। আমরা অবশ্যই গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, ডা. জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগরের হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কাজী আবুল বাশার, মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, আব্দুল আলীম নকি, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম আলীম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিবের শ্রদ্ধা নিবেদনের কিছুক্ষণ পর মহানগরের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি বলেন, সারাদেশে ভোট কেন্দ্রের ন্যায় কেন্দ্র করে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভোট কেন্দ্রে যেমন ভোটাররা যেতে পারে না, শুধুমাত্র দলীয় নেতাকর্মীরা ভোট দেয় তেমনি করোনা ভ্যকসিন কেন্দ্রে শুধু দলীয় লোকেরা টিকা পাবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ পাবে না। ভিন্ন মতের লোকজনদেরকে টিকা কেন্দ্রে যেতেই দিবে না। সুতরাং ভিন্ন মতের বা বিরোধী দলের লোকেরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে কি না যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। রিজভী বলেন, সম্পুর্ণ দলীয়করণের জন্য তা করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা যাতে টিকা না পেতে পারে সেজন্যই এ ব্যবস্থা। ভারত থেকে আনা করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ভারতে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সেই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আনা হচ্ছে।
পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এর সদস্যরা মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও ফাতিহা পাঠ করে বিশেষ মুনাজাত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জিয়ার জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, সদস্য সচিব ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, জেডআরএফের প্রকৌশলী মাহবুব আলম, প্রফেসর ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম।
এদিকে জন্মদিনটি উপলক্ষে দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণের দিনব্যাপী ‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’ উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব। এসময় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
রাত ১১টায় নয়াপল্টনে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। এতে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপ কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, সদস্য সচিব ডা. সরকার মাহাবুব আহমেদ শামীম।
শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মালয়েশিয়া বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক মামুন বিন আব্দুল মান্নানের সহায়তায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পাঁচশতাধিক অসহায়, দরিদ্রের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। তার নিজ এলাকা ময়মনসিংহের নান্দাইলে এতিম খানায় অনুষ্ঠিত হয় মিলাদ-মাহফিল, দোয়া অনুষ্ঠান এবং এতিম খানা ও মাদরাসায় খাবার বিতরণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মনিটর প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম উপস্থিত থেকে কম্বল বিতরণ করেন।
মেহেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মেহেরপুর জেলা বিএনপির উদ্দ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড মারুফ আহমেদ বিজন, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস সহ জেলা অংগ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তব্যে মাসুদ অরুন বলেন শহীদ জিয়ার স্বপ্ন স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে অবরুদ্ধ গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবালের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সভাপতি আতোয়ার রহামন জিন্নাহ, ছাদেকুল আলম খোকা, পৌরসভা নির্বাচন বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সভাপতি জিয়াউল হক শাহীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, আনিছুর রহমান আনিছ, খন্দকার রাশেদুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকরি রহমান খান শফিক, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহীন আকন্দ, যুবদলের আহবায়ক আশরাফ পাহেলী, মহিলা দলের সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালে মোহাম্মদ সাফি ইথেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, আড়াইহাজারে আশিক সুপার মার্কেটে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির (ঢাকা বিভাগীয়) সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার।
থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উল্লা মিয়ার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন অনু, বিএনপির সিনিয়র নেতা লাল মিয়া মেম্বার, সাবেক ইউপি মেম্বার আমির হোসেন, থানা ওলামা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাছুম বিল্লাহ, থানা মহিলা সিনিয়র সহ-সভাপতি শিরিন সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক পিয়ারা বেগম, আড়াইহাজার পৌরসভা মহিলা দলের সভাপতি মাসুদা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক মাছুমা বেগমসহ স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশেষ দোয়া পড়ানো হয়।
প্রধান অতিথি পারভিন আক্তার বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রর্বতক ছিলেন শহীদ প্রেন্সিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌরাষ্ট্র পেতাম না। জিয়াউর রহমান মানুষের ভোটের অধীকার নিশ্চিত করেছিলেন। শেখ হাসিনার সরকার মানুষের ভোটের অধীকার হরণ করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘মিড নাইট’ এই সরকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের বিজীয় হওয়ার পরই বিএনপির সমর্থিত একজন কাউন্সিলরকে প্রকাশ্যে খুন করা হয়েছে। নেক্কারজনক এই ঘটনাকে আমি ধিক্কার জানাই। সেই সাথে দ্রত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। পারভীন আক্তারের নিজ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।