Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তাড়াশে বিএডিসির সেচ সংযোগ পেতে কাগজে-কলমে পুকুর হয়ে গেল ফসলি জমি!

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২১, ১:১৭ পিএম

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উৎকোচের বিনিময়ে বিএডিসির সেচ সংযোগ নিতে পুকুর কাগজে-কলমে হয়ে গেল ফসলি জমি। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেও সেই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিএডিসির সেচ লাইসেন্স এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও বাতিল করেনি উপজেলা সেচ কমিটি এবং বিদ্যুৎ অফিস। বৈধ কৃষকতে বাদ দিয়ে এমন অবৈধ সেচ লাইসেন্স ও বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছেন উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের চৌড়া গ্রামের প্রভাবশালী তায়জুল হোসেনকে।
এ বিষয়ে একই ইউনিয়নের গুড়পপিপুল গ্রামের শামছুল হক নামের এক কৃষক প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে অবশেষে ফল না পেয়ে ৪ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ তাড়াশ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান ও গত ৮ নভেম্বর তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি মো. মেজবাউল করিম বরাবর এবং সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা যায়, বিএডিসির সেচ লাইসেন্সের অভাবে এখনও অনেক কৃষক দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আবেদন জমা দিয়ে, সেখানে একটি অবৈধ্য সেচ লাইসেন্স দিয়েছেন উপজেলা বিএডিসির সেচ কমিটি ও বিদ্যুৎ অফিস।
লিখিত অভিযোগ ও কৃষক শামছুল হক বলেন, মোটা অঙ্কের উৎকোচ আর পল্লী বিদ্যুৎতের পকেট ভারী করার উদ্দেশ্যে ফসলি জমিতে সেচ লাইসেন্স দেয়ার কথা থাকলেও পুকুর পারে এই অবৈধভাবে সেচ সংযোগ দিয়েছেন তারা। তাছাড়া বিএডিসি সেচ কমিটি কর্তৃক বিএডিসি সমন্বিত ক্ষুদ্র সেচ নীতিমালা-২০১৭ বহির্ভূতভাবে সেই অগভীর নলকূপের লাইসেন্স পেয়ে তা বৈধ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন তায়জুল হোসেন। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ দায়ের করার পর সেই অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে তিনি ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা উপেক্ষা করে রাতারাতি সেই পুকুর ভরাট করে ফসলি জমি বানানোর চেষ্টা করছেন। প্রকৃত পক্ষে “তায়জুল হোসেনের যে জমিতে কৃষি কাজে সেচের জন্য অগভীর নলকূপের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সে জমির শ্রেণি পুকুর। তাছাড়া তায়জুল হোসেনের অগভীর নলকূপের সংযোগ স্থলের মাত্র ৪৯০ ফুট দূরত্বের মধ্যেই মোহাব্বত আলী নামে এক কৃষক বিএডিসি সেচ কমিটি হতে অগভীর নলকূপের লাইসেন্স নিয়ে সেচ কাজে ব্যবহার করছেন। যা নিয়মনীতি তোয়াক্কা করা হয়নি।
কৃষক শামছুল হক আরো বলেন, উপজেলা বিএডিসি সেচ কমিটি কর্তৃক প্রভাবশালী তায়জুল হোসেন বিএডিসি সমন্বিত ক্ষুদ্র সেচ নীতিমালা-২০১৭ বহির্ভূতভাবে অগভীর নলকূপের লাইসেন্স নিয়ে তা বৈধ করার জন্য একের পর এক হীন কৌশল অবলম্বন করে চলেছেন।
অভিযুক্ত প্রভাবশালী তায়জুল হোসেন বলেন, পুকুর পাড়টা কেটে জমি করছি। বৈধ বা অবৈধ সেচ লাইসেন্স কিনা সেটা অফিস বুঝবে।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ তাড়াশ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কোন অনিয়ম হয়নি। উপজেলা সেচ কমিটি যদি তার লাইসেন্স বাতিল করেন। তাহলে আমাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাজুদ আলম বলেন, এ বিষয়ে তার মন্তব্য নাই। নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতিই সব।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি মো. মেজবাউল করিম বলেন, তিনি মাস চারেক হলো তাড়াশে এসেছেন। তায়জুল হোসেনকে লাইসেন্সটি তারও আগে দেওয়া হয়েছে। সমন্বিত ক্ষুদ্র সেচ নীতিমালা অনুযায়ী তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অনিয়ম

২৩ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ