মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাসের টিকা অবশেষে মানুষের দোরগড়ায় আসছে। এদিকে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গেই অক্সফোর্ডের টিকা পাওয়ার কথা৷ ভারত টিকার অনুমোদন দেয়ার পাশাপাশি এরিমধ্যে ড্রাই রান বা মহড়াও চালিয়েছে৷ কিন্তু বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটুকু?
করোনার দুইটি টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য রোববার অনুমোদন দিয়েছে ভারতের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর৷ তার একটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-আস্ট্রাজেনেকার৷ এর একদিন আগেই চারটি রাজ্যে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচির মহড়া৷ এতে টিকা দেয়া ছাড়া বাকি সব কাজেরই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে৷ দেখে নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতাও৷ যার মধ্য দিয়ে আসছে সপ্তাহেই সেখানে টিকাদান শুরু হতে পারে৷
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার টিকাটি পাওয়ার কথা বাংলাদেশেরও৷ কিন্ত ভারত টিকাদানের সবকিছু চূড়ান্ত করলেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোন তালিকাই হয়নি৷ শুধু কারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন তার ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে৷ বাংলাদেশ এখন ব্যস্ত টিকার দাম পরিশোধ নিয়ে৷ কারণ ভারত চায় টিকা পাঠানোর আগেই বাংলাদেশ তার অনুমোদন এবং আগাম দাম পরিশোধ করুক৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (আইএমএস) ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘‘এই সপ্তাহের মধ্যেই টিকার দাম যাতে পরিশোধ করা যায় তার প্রস্তুতি চলছে৷’’
বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে?
ভারতের সেরাম ইনন্সিটিউট থেকে তিন কোটি টিকা আনবে বাংলাদেশ৷ এ নিয়ে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকোর মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়৷ প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়বে পাঁচ ডলার৷ পরিবহণ খরচ এক ডলার৷ বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে একই দামে টিকা পাবে বলে চুক্তিতে লেখা আছে৷ তিন কোটি টিকার প্রথম কিস্তির ৫০ লাখ চলতি মাসেই পাওয়ার আশা করছেন ডা. হাবিবুর রহমান৷ বাকি টিকা ধাপে ধাপে পাওয়া যাবে৷ এই সপ্তাহে কত টিকার দাম পরিশোধ করা হচ্ছে প্রশ্ন করলে তিনি তা জানাতে রাজি হননি৷ বলেন, ‘‘যখন দাম পরিশোধ করব তখনই জানতে পারবেন৷’’
তবে অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে দেড় কোটি টিকার জন্য দাম পরিশোধ করা হতে পারে৷ বাকিটা প্রথম কিস্তি আসার পর পরিশোধ করা হবে৷ বাংলাদেশে এই টিকা দেয়ার কোন ড্রাই রান বা মহড়া হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়৷ কারণ তার কোনো প্রস্তুতির কথা কেউ জানাতে পারেন নি৷
কারা প্রথম ধাপে টিকা পাবেন গত মাসেই তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ কিন্তু সেই তালিকা এখনও হয়নি৷ কোন পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি রোববার বলেন, ‘‘সব প্রস্তুতি নিয়েই আমরা কাজ করছি৷ সময়মত জানতে পারবেন৷’’ তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সাথে আমাদের চুক্তি হল ওরা যখন টিকা দেয়া শুরু করবে আমরাও তখন দেয়া শুরু করব৷ আশা করি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে টিকা দেয়া শুরু হবে৷’’
প্রথম ধাপে যে ২৫ লাখ ব্যক্তিকে ৫০ লাখ টিকা দেয়া হবে (একেকজন দুই ডোজ করে) সে তালিকা বাস্তবে এখনও করা হয়নি৷ শুধু অগ্রাধিকার তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে৷ সেখানে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী, গণপরিবহন কর্মী৷
টিকার অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি ও প্রস্তুতির জন্য জেলা উপজেলায় কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও মাঠের চিত্র ইতিবাচক নয়৷ নারয়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ সামাদ জানান, তারা এখনও কোনো তালিকা করেননি৷ তাদের কোনো ড্রাই রানের প্রস্তুতিও নিতে বলা হয়নি৷ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কীভাবে এবং কী প্রক্রিয়ায় টিকা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) এবং আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা দেবেন৷ তাদের দুই দিনের একটা প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ আর তালিকা হবে অনলাইনে৷ তবে তালিকা তৈরির কোনো কাজ এখনও শুরু হয়নি৷’’
আরো কয়েকটি জেলায় খবর নিয়ে একই তথ্য পাওয়া গেছে৷ কোনো কোনো জেলায় কমিটি হলেও এখনো কোনো বৈঠক হয়নি৷ বিশেষ করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টিকা কারা প্রথমে পাবেন তাদের তালিকাই তৈরি হয়নি এখনও৷
টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহণে ইপিআই'র ওপরই নির্ভর বরা হচ্ছে৷ তবে প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থারও সুযোগ রাখা হয়েছে৷ কিন্তু এই টিকা প্রয়োগ করার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন চায় বাংলাদেশ৷ সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরেরও অনুমোদন লাগবে৷
অবশ্য ভারত ছাড়াও এরইমধ্যে যুক্তরাজ্য ও আর্জেন্টিনা অক্সফোর্ডের টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে৷
ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, টিকার অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে৷ অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে৷ তিনি জানান, ‘‘এটার জন্য তো টিকার নমুনা এনে পরীক্ষা করা হবে না৷ তার প্রয়োজনও নাই৷ দ্রুতই অনুমোদন পাওয়া যাবে৷’’ ডয়চে ভেলে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।