পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সকল ব্যর্থতা ও হতাশার গ্লানি ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অর্থাৎ সরকার বিরোধী আন্দোলনকে জোরদারের অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছে বিএনপি। একই সাথে তারা দলকে সুসংগঠিত এবং জোটকে কার্যকর করার নতুনভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। জনগণের বৃহত্তর ঐক্য, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটাবে এমনটাই এ দলটির প্রত্যাশা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল ইনকিলাকে বলেন, নতুন বছরে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাল্লাহ। এ লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি এবং ২০২১ সালে সফল হবো বলে বিশ্বাস করি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও হৃত গণতন্ত্র উদ্ধার করার সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হবে নতুন বছরে। আর এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটবে।
বিএনপি ২০০৬ সালের অক্টোবর থেকে ক্ষমতার বাইরে। অর্থাৎ প্রায় ১৫ বছর তারা ক্ষমতার বাইরে। দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবারের কেউই দেশে বসে এখন দলটি পরিচালনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শর্ত সাপেক্ষে জামিনে থাকলে বর্তমানে খুব অসুস্থ। করোনামহামারির কারণে তার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থাকছেন যুক্তরাজ্যে। তার দেশে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। এরমধ্যে দল ও জোটের মধ্যে আছে টানাপোড়েন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও প্রায়ই সামনে চলে আসছে। দলের যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, তাঁদের দক্ষতা-যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বর্তমানে দলের রাজনীতি সভা-সেমিনারে সীমাবদ্ধ। সরকারের অনেক ব্যর্থতা থাকলেও কোনো ইস্যুতেই মাঠে জোরদার আন্দোলন করতে না পারায় দলটির তৃণমূলের নেতারা কোন আশার আলো দেখছেন না। এ অবস্থায় বিএনপি মনে করছে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে দলের এসব সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।
বিএনপি ও এর শুভাকাক্সক্ষীরা বলছেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি এখন কঠিন সংকটের মধ্যে আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তারা মনে করেন, সময় খারাপ হলেও এই পরিস্থিতি বেশি দিন থাকবে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দলটি এ পরিস্থিতির পরিবর্তন আনবে। দলটির সিনিয়র নেতারা বলছেন, সময় অনেক গড়িয়েছে, এবার পরিস্থিতির অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। কারণ বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে বিপুল জনসমর্থন রয়েছে ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের প্রত্যাশা নতুন বছরটি হবে আমাদের আন্দোলনের বছর। সেই সাথে ন্যায় ও গণতন্ত্রের বিজয়ের বছর। গত ১৩-১৪ বছর যাবৎ দেশে চলছে গণতন্ত্রহীনতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি। সরকারের অন্যায়-অপরাধ, অনিয়ম, লুটপাট, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি সব মিলিয়ে দেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দলীয়করণের মাধ্যমে সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন বছরে একটা পরিবর্তন অবশ্যই আসবে। আর সে পরিবর্তন হবে ন্যায়ের পক্ষে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে। আমরা সে লক্ষে দলকে পুন:গঠন করছি। একটি জাতীয় ঐক্য গড়ার মাধ্যমে বৃহত্তর গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি আমরা সফল হব ইনশাল্লাহ।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, তাঁদের দলের নেতৃত্বে যেকোনো একটি বা একাধিক ইস্যুতে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। ক্ষমতাসীনদের দমন-পিড়ন এবং দুর্নীতি ও লুটপাটে সাধারণ জনগণ এখন অতিষ্ট। তারাও এখন আন্দোলনের অপেক্ষায় আছে। একটি ইস্যুতে রাজপথে নামতে পারলেই তা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেবে। তবে বিপুল জনসমর্থন থাকা সত্তে¡ও অনেক বড় বড় ইস্যুতে দলটি আন্দোলনে না যাওয়ায় সারাদেশের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। সারাদেশের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চাইছে আন্দোলন। তাই তাদের চাপে এবার বিএনপিকে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে হবে। আন্দোলন ছাড়া নেত্রীর মুক্তি মিলবেনা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে না।
এ বিষয়ে নেত্রকোণা জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. আনোয়ারুল হক ইনকিলাবকে বলেন, সরকারের জুলুম নির্যাতন আর ব্যাপক দুর্নীতি লুটপাটে দেশের জনগণ এখন অতিষ্ট। জনগণ এ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য মুখিয়ে আছে। আমাদের দলও এবার আন্দোলনের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশনেত্রী ও গণতন্ত্র মুক্তির জন্য আন্দোলন ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
বিএনপির শুভাকাক্সক্ষী হিসাবে পরিচিত গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশের এই চরম সঙ্কটকালে শুধু বিএনপি নয় সব দলকে রাজপথে নামতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আন্দোলন ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপিকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে হবে। এজন্য তাদেরকে ঘর থেকে বের হয়ে রাজপথে নামতে হবে। নতুন বছরটাকে আন্দোলন সংগ্রামের বছর হিসাবে গণ্যকরে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। তাহলে রাজনীতিতে পরিবর্তনের পাশাপাশি বিএনপির খারাপ অবস্থানেরও পরিবর্তন আসবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।