যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
শীতকালে আমাদের দেশে শাকসবজি একটু বেশী পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ৮৯ রকমের দেশী ও বিদেশী শাকসবজি জন্মে। এগুলোর মধ্যে ৯টি সবজিকে প্রধান সবজি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এগুলো হলো- বেগুন, টমেটো, আলু, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ঢেঁড়শ, মূলা ও বিভিন্ন রকমের কুমড়াগোত্রীয় সবজি। কুমড়াগোত্রীয় সবজির মধ্যে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দুল, পটল, করলা, কাকরোল,শসা ইত্যাদিসহ প্রায় ২০ রকমের সবজি আছে। মোট সবজি চাষের জমির প্রায় ৮০ ভাগ দখল করে রেখেছে এসব প্রধান সবজি।
আলু, মিষ্টি আলু, কচুর লতি, কচুমুখি, মানকচু ইত্যাদিও অন্যতম প্রধান সবজি। মোট কচু চাষের জমির প্রায় ৮৫ ভাগ জমিতে চাষ হয় মুখিকচু ও পানিকচু। সবজির পাশাপাশি ডাঁটা, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক ইত্যাদি প্রধান পাতাজাতীয় সবজি, এগুলোকে বলা হয় শাক।
শিশুদের সবজি খাওয়াব কিনা, এ নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। বুড়োদের কি শাক দেয়া ঠিক হবে? এটাও ভাবনার বিষয়। আর কিশোর-কিশোরীরা তো ফার্স্ট ফুডে এত বেশি মজে যায় যে শাক সবজি ওদের পাতেই তোলা হয় না। সবজি খাওয়াটা আসলে সব বয়সেই দরকার। কিন্তু বয়স অনুযায়ী শাক সবজির পরিমাণ হবে ভিন্ন। শিশুদের জন্য প্রথম ৬ মাস দরকার বুকের দুধ বা কখনও সম্ভব না হলে অন্য দুধ। এসময় কোনো শাকসবজি দেয়া হয় না। তবে ৬ মাস বয়স থেকে শিশুর বাড়তি খাবারের দরকার হয়। তাই সে বয়সের পর থেকে অল্প অল্প করে সহজে হজম হয় এমন শাকসবজি খিচুড়ির সাথে বা ভাতের সাথে রান্না করে খাওয়ানো যায়। তবে মনে রাখতে হবে, শিশুরা ৬ মাস বয়স পর্যন্ত দুধ খেয়ে বেড়ে ওঠে, অন্য কোনো খাবারে ওরা অভ্যস্ত নয়। তাই হঠাৎ করে সেসব খাবার দিলে খাবে না বা খেলেও প্রথম প্রথম অসুবিধে হবে। আবার সেসব খাবার না খেতে দিলেও শিশু অপুষ্টিতে ভুগবে এবং ঠিকমত বাড়বে না, নানা রকম অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হবে। তাই শিশুকে নতুন কোনো খাবারে অভ্যস্ত করতে হলে তাকে অন্তত দু’মাস ধরে অল্প অল্প করে এসব খাবার খেতে দিয়ে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। এ জন্য ৪ থেকে ৫ মাস বয়স থেকে ধীরে ধীরে নতুন খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এভাবে বিভিন্ন খাবার খেতে দিয়ে অভ্যেস করালে শিশুরা ২ বছর বয়সে মায়ের দুধ পুরোপুরি ছেড়ে দিয়ে বয়স্কদের জন্য রান্না করা খাবার খেতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। প্রথম ৩ মাসে শিশুর ওজন হয় জন্মকালীন সময়ের দ্বিগুণ, ১ বছরে হয় চারগুন, ২ বছরে হয় ৫ গুণ। সুতরাং বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশুর পুষ্টি চাহিদা বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় ঠিকমতো খাবার না পেলে শিশুরা সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে না। সেজন্য অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি পরিমাণ মতো উপযুক্ত শাকসবজি শিশুকে খাওয়াতে হবে। এ সময় শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে দিতে না পারলে, ভবিষ্যতে ওইসব শিশুকে নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। পরে আর ওরা কোনো শাকসবজি খেতে চাইবে না। ফলে ভবিষ্যত জীবনে আর শক্ত শরীর নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে না। তাই বলা হয়- পুষ্টিহীন আর কম দৃষ্টিহীন, শাকসবজি খাওয়ান প্রতিদিন।
ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট, মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।