Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাঞ্জাবের পর এবার কেরালাতেও কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাব পাশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:১৮ পিএম

শুরু হয়েছিল পাঞ্জাব দিয়ে। তার পর ভারতের একাধিক রাজ্যে মোদি সরকারের বিতর্কিত ৩ কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা পাশ হয়েছে বিধানসভায়। এ বার সেই পথই অনুসরন করল কেরালায় ক্ষতাসীন বাম সরকারও। বৃহস্পতিবার সে রাজ্যের বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়ে গেল তিনটি কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা।

দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই দাবি করেছেন, কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না করলে দুর্ভিক্ষের দিকে এগোবে কেরালা। অধিবেশনে প্রস্তাবনা পাশ করাতে কোনও বেগ পেতে হয়নি কেরালা সরকারকে। বিরোধী কংগ্রেসও প্রস্তাবনা সমর্থন করেছে। ফলে সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়ে গিয়েছে প্রস্তাবনা। প্রস্তাবনা পাশের পর পিনারাই বলেন, ‘এমন একটা প্রক্রিয়া থাকা উচিত, যাতে কেন্দ্র কৃষকদের কাছ থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করবে এবং নামমাত্র দামে গরিব, অভাবী মানুষকে দেবে। কিন্তু তার পরিবর্তে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কৃষিপণ্যের ব্যবসা করার ছাড়পত্র দিচ্ছে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দিতে চাইছে না সরকার।’ পাশাপাশি দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলন চলতে থাকলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে কেরালায়। রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছে কৃষিপণ্য আসা বন্ধ হয়ে গেলে রাজ্যে দুর্ভিক্ষের দিকে অগ্রসর হবে। এই সব বিষয়কে মাথায় রেখেই কেন্দ্রকে তিনটি বিলই প্রত্যাহার করে কৃষকদের দাবি দাওয়া মেনে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে কেরল বিধানসভা।’

যদিও অধিবেশন ডাকা নিয়ে কেরালা সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সঙ্ঘাত চরমে উঠেছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর এক দিনের বিশেষ অধিবেশন ডাকার অনুমতি চেয়ে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে চিঠি দিলেও তিনি তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। কী ধরনের জরুরি অবস্থার জন্য এত সংক্ষিপ্ত অধিবেশনের প্রয়োজন হল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তার জবাব চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তার সদুত্তর দিতে পারেননি। পাশাপাশি তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এমন একটি সমস্যার জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চাইছেন, যার কোনও সমাধান তার কাছে নেই। কিন্তু তার পরেও ফের রাজভবনে প্রস্তাব পাঠান পিনারাই। একই সঙ্গে সরকারের যুক্তি ছিল, মন্ত্রী পরিষদের সুপারিশ মানতে বাধ্য রাজ্যপাল। শেষ পর্যন্ত সেই সঙ্ঘাতের আবহ কাটিয়ে অনুমোদন দেন রাজ্যপাল।

তবে কেন্দ্রীয় কোনও আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পাশ করলেও তা কার্যকর করতে সাংবিধানিক জটিলতা রয়েছে। বিধানসভায় পাশ হওয়া প্রস্তাবনায় প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। প্রস্তাবনা পাশ হওয়ার পর প্রথমে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজ্যপাল তাতে অনুমোদন দিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠান। প্রসিডেন্ট সিলমোহর দিলে তবেই সেই প্রস্তাবনা কার্যকর হয়। সংসদে তিনটি কৃষি বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হওয়ার পরে পরেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পাশ করেন। সোনিয়া গান্ধীও কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলোতে একই রকম প্রস্তাবনা পাশের নির্দেশ দেন। সেই মতো কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলোও পদক্ষেপ নিয়েছে।

এদিকে, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লিতে টানা প্রায় দেড় মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক নেতাদের ৭ দফা আলোচনার পরেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। এখনও কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় কৃষকরা। আর এই আন্দোলনের নেতৃত্বস্থানীয়দের মধ্যে অগ্রগণ্য বাম মনোভাবাপন্ন কৃষক সংগঠনগুলো। কেরালার বাম সরকার আগেই কৃষকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এ বার সরকারি ভাবে কৃষক আইনকে তার রাজ্যে কার্যত অকেজো করার পথে হাঁটলেন পিনারাই বিজয়ন। সূত্র: ফ্রি প্রেস জার্নাল।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাঞ্জাব

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ