Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদমদীঘিতে মৎস্য খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি

খামারিদের লাখ লাখ টাকা লোকসান

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মাছের খাদ্য ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং বাজার মন্দার কারণে দেশের মৎস্যভান্ডার খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি ও আশপাশ এলাকার খামারি মৎস্যচাষি ও ব্যসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়।

জানা যায়, এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে উপজেলা সদর, সান্তাহর পৌর এলাকা এবং আশেপাশেসহ দেশের প্রায় সবস্থানে চাষ উপযগী এবং ছোট পোনা ও বাজারজাতসহ সব সাইজের মাছের দাম কম। উপজেলা সদর ও সান্তাহার পৌর এলাকা এবং এর আশপাশের পুকুর ও জলাশয়গুলোতে লাখ লাখ টাকার মূল্যের রুই, কাতল, হাংড়ি জাপানি, পাঙ্গাস, কৈই, মাগুর, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পুকুরে চাষ করে। রেনু, ছোট পোনা, বড় ও বিভিন্ন সাইজের মাছ বিক্রি উপযগী করার পর বাজার মন্দার কারণে লাখ লাখ টাকার চাষ করা মাছ পুকুরগুলোতে অবিক্রিত রয়েছে। এদিকে হুর হুর করে মাছের খাদ্যে ও বিদ্যুতের মূল্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২৫ কেজির বস্তা প্রতি ১৫০ টাকা, ৫০ কেজির বস্তা প্রতি ৩শ’ টাকা বেরেছে। ফলে হ্যাচারী ব্যবসায়ী ও মৎস্য চাষিরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পরেছে। ইতোমধ্যে এলাকার হ্যাচারী খামারি ব্যবসায়ী ও মৎস চাষি ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এলাকার অনেক মৎস্যচাষী ও ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন।

এ উপজেলায় ছোট বড় মিলে মৎস্য খামারের সংখ্যা প্রায় ৬০টি। হাচারীর পাশাপাশি উপজেলায় রয়েছে সহস্রাধিক ছোট বড় পুকুরে পাঙ্গাস, থাই কৈ, মনোসিস তেলাপিয়া, কার্পিও, গুলসা, শিং, পাবদার পাশাপশি রুই, কাতলা, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। পোনা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষের জন্য আদমদীঘি উপজেলা মৎস্যভান্ডার বলে খ্যাত। এই উপজেলায় মাছ চাষের সাথে জড়িত রয়েছে কয়েক হাজার শ্রমজীবী মানুষ। এ এলাকার উৎপাদিত বিভিন্ন মাছের পোনা ও বড় মাছ স্থানীয়ও দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পুরুন এমকি বিদেশেও রফতানি হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। মৎস্য খামারে শ্রমিকের কাজ করে ব্যবসা শিখে এলাকার অনেক বেকার যুবক মাছ বিক্রি এখন স্বাবলম্বী। মৎস্য চাষের সফলতা স্বরুপ উপজেলার কয়েক জন মৎস্য চাষি জাতীয় স্বর্ণপদক পুরুস্কার ও পেয়েছেন। হঠাৎ করে মাছের খাদ্যের এবং বিদ্যুতের মূল্যে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মাছের বাজার মন্দা এবং করোনার কারণে বিদেশে এখানকার মাছ রফতানি বন্ধের কারণে দেশের মৎস্যভান্ডার বলে খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি ও এর আশপাশ এলাকার খামারি মৎস্যচাষি ও ব্যসায়ীরা লাখ লাখ টাকা লোকসানের মুখে পরেছে। ফলে আগামীতে মাছের রেনু পোনা তৈরিসহ বড় মাছ চাষ কম হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য খামারিরা। এতে মাছ উৎপাদন কম হবে এবং মাছের বাজারে ও এর প্রভার পরার সম্ভবনা দেখ দিয়েছে।

জাতীয় স্বর্ণপদক পুরস্কার প্রাপ্ত আদমদীঘি উপজেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য খামার জি এম, এ্যাকোয়া কালচারের মালিক আব্দুল মহিত তালকদার বলেন, কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছি। এবার ব্যাপক বৃষ্টিপাতে হাওর-বিল, নদী ডোবায় প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পরিমান মাছ উৎপাদন হয়েছে। এতে মাছের বাজার মন্দা। এরপর আবার মাছের খাদ্যে বিদ্যুদের মূল্যে বৃদ্ধি পেয়েছে আমার আগে যে পরিমান খরচ হতো এখন প্রতিদিন এক লাখ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। ভারতে আমাদের উৎপাদিত মাছের চাহিদা আছে কিন্ত করোনার কারণে সেখানে মাছ যাচ্ছেনা। এসবের কারণে প্রতি মুহূর্তে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ছোট ব্যবসায়ীরা আগামীতে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা তা বলা যাবে না।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সান্তাহার প্লাবন ভূমি উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ডেভিট রেন্টু দাস বলেন অদমদীঘির মাটি ও পানি মাছ চাষের উপযগী, এখানকার উৎপাদিত মাছ সারাদেশে সরবরাহ হয় এমনকি ভারতে ও এখানকার মাছের চাহিদা বেশি। এবার প্রকৃতিকভাবে মাছ উৎপান বেশি হয়েছে একারণে বাজারে প্রভাব পরায় দাম কম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৎস্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ