Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিনাঞ্চলে ৪ টি পৌরসভার ভোট গ্রহন সোমবার প্রচারনায় লেভেল প্লেয়িং ফ্লিড না থাকার অভিযোগ পর্যবেক্ষকদের

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:৫০ পিএম

 

বরিশাল,পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ৪টি পৌরসভায় সোমবারের ভোট গ্রহনকে কেন্দ্র করে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সব প্রার্থীদের নির্বিঘেœ প্রচারনা এবার নিশ্চিত হয়নি। নির্বাচনী প্রচারনার শুরু থেকে এ অভিযোগের আঙুল নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় পুলিশÑপ্রশাসনে দিকে উঠলেও বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে গ্রহন না করার কথাও বলেছেন বিরোধী দলীয় প্রায় সব মেয়র প্রার্থীগন। এমনকি কোন কোন মেয়র প্রার্থী নির্বিঘেœ প্রচরনায় নিজ বাসা থেকেও বের হতে না পারার কথাও জানিয়েছেন। বিধি অনুযায়ী শণিবার মধ্য রাত থেকে বরিশালের উজিরপুর ও বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এবং বরগুনার বেতাগী পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারনা বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার এসব পৌরসভার নির্বাচনে ৩৬টি কেন্দ্রর ১৬৭টি কক্ষেই প্রথমবারের মত ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহন হচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বিপুল সংখ্যা সশস্ত্র ও নিরস্ত্র পুলিশ ও আনসার ছাড়াও বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে। শণিবারই এসব পৌর এলাকায় বিজিবি পৌছেছে।

মনোনয়নপত্র জমা এবং চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে অনেক প্রার্থীর কর্মীদের পর্যন্ত ভোটের প্রচারনায় মাঠে নামতে নানাভাবে বাধাগ্রস্থ করার কথাও বলেছেন একাধীক পৌরসভার মেয়র প্রার্থীরা।

সোমবার বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনার ৪টি পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদন্ধীতা করছেন। এসব পৌরসভায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন দলীয় প্রতিকে প্রতিদন্ধীতায় থাকলেও প্রচারনার মাঠে ক্ষমতাশীন দলের বাইরে কারো খুব একটা প্রচারনা লক্ষণীয় ছিল না। কুয়াকাটা পৌরসভায় ১জন সতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদন্ধীতায় আছেন এখনো। প্রতিটি পৌরসভাতেই ৯টি করে ওয়ার্ড ছাড়াও ৩টি করে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ভোট গ্রহন হচ্ছে। ইতোমধ্যে বরিশালের উজিরপুর পৌরসভার ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এবং বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিনা প্রতিদন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এরা সকলেই সরকারী দল সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন। কোন প্রতিদন্ধী না থাকায় ইতোমধ্যে তাদের বেসরকারীভাবে নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়েছে।

৯ হাজার ৪৯৪ জন ভোটারের বেতাগী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের ৩ জন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ৯টি ওয়ার্ডে ২৬ জন প্রার্থী প্রদিন্ধীতা করছেন। এখানে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪,৮২৫। ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদন্ধীতা করছেন।

৮ হাজার ১২২ জন ভোটারের কুয়াকাটা পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের ৩ প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র এক প্রার্থী প্রতিদন্ধীতা করছেন। এ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৩১ জন। ৩,৯৪৫ জন মহিলা ভোটারের এ পৌরসভায় সংরক্ষিত ৩টি আসনে মহিলা প্রার্থী ৮ জন।

৭,৬৩৪ মহিলা ভোটার সহ বাকেরগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১৫,৩০৪ জন। এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের ৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। এ পৌরসভার ৮টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ২৫ জন। আর সংরক্ষিত ৩টি আসনে মহিলা প্রার্থী ৮ জন।

১১ হাজার ৯২৪ জন ভোটারের উজিরপুর পৌরসভায় নারী ভোটার সংখ্যা ৫,৯৩৬। মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের ৩জন প্রার্থী। ৯টি ওয়ার্ডের এ পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে ২৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮ জন প্রতিদন্ধীতা করছেন।

২৮ ডিসেম্বর দক্ষিনাঞ্চলের এ ৪টি পৌরসভায় প্রথমবারের মত ইভিএম-এ ভোট গ্রহন হলেও উপজেলা পর্যায়ের ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারা কতটা সাচ্ছন্দে ভোট দিতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন একাধীক নির্বাচনী পর্যবেক্ষকও। ৪টি পৌরসভার ৩৬টি কেন্দ্রের প্রায় সবগুলোই কমবেশী ঝুকিপূর্ণ বলে স্থানীয়রা জানালেও পুলিশÑপ্রশাসন থেকে তা মনে করা হচ্ছে না। তবে আইনÑশৃংখলা রক্ষায় সব কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলেছে বরিশাল রেঞ্জের পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র।

বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের প্রচারনায় বাঁধা দেয়া প্রসঙ্গে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়ে, ‘যেকোন পরি¯িথতিতে আইনÑশৃংখলা রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের’ কথাও বলা হয়েছে। এমনকি বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের প্রচারনায় বাঁধা দেয়ার যেকোন অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও বলেছে পুলিশের একাধীক সূত্র।

ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, ‘ভোটাররা যাতে সাচ্ছন্দে ভোট দিতে পারেন সে লক্ষে সব ধরনের প্রচারনার’ চালান হয়েছে। ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে সন্ধার পরে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রদর্শনীরও ব্যাবস্থার কথা জানিয়ে ২৫ ডিসেম্বর মাঠ পর্যায়ে প্রতিকি ভোট প্রদানের মাধ্যমে ভোটারদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষন দেয়ার কথাও জানান তিনি।

তবে একাধীক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘বিগত নির্বাচনগুলোর মত দক্ষিণাঞ্চলের ৪টি পৌরসভায় ২৮ ডিসেম্বরের ভোট গ্রহন হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ঠ সংশয় রয়েছে’। বিশেষকরে ‘নির্বচনী প্রচারনায় কোন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিলনা’ বলেও জানান তারা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ