পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত এক দশকে প্রস্তাবিত কোনো প্রকল্পেরই নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। কাজ শেষ না হওয়ায় নতুন একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলের সুবিধা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। নতুন একাডেমিক ভবনের সুবিধা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন ক্লাস রুম সঙ্কটের কারণের ক্লাস করতে পারছেন না, তেমনি ক্লাস না করায় সেশনজটের পড়ছে তারা। আবার আবাসিক হলের কাজ শেষ না হওয়া অধিক ভাড়া গুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে কটেজগুলোতে নিরাপত্তাহীন জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
চবিতে বর্তমানে ২২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার ৮টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের নির্মাণকাজের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে দফায় দফায়। তবুও আশানুরূপ কাজ হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত হতে পারছেনা কবে নাগাদ শেষ হবে এসব নির্মাণকাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় কলা অনুষদ ভবন নির্মাণকাজের সময় চার বছরে তিন দফায় বাড়ানোর পর কাজ হয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ। সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) লিখিত আপত্তি সত্তে¡ও ২০১৬ সালে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও জালিয়াতির মাধ্যমে চবির সর্ববৃহৎ এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকে বি এল বিরুদ্ধে।
দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স- জিকে বিএল, অস্ত্র মাদক ও অর্থসংক্রান্ত একাধিক মামলার আসামি সমালোচিত ঠিকাদার জি কে শামীম এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য ফজলুল করিম চৌধুরী স্বপনের যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২২ নভেম্বর অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক ফকরুল ইসলাম বাদী হয়ে দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জিকে বিএল এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ফলে সম্পূর্ণ স্থগিত আছে নির্মাণকাজ।
২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ছাত্রদের জন্য ১৮৬ আসন বিশিষ্ট প্রায় ৪৫ হাজার বর্গফুটের দোতলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধন করা হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হলে শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ না দিয়ে দেড় বছর পর ২০১৭ সালের মে থেকে হলটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বঙ্গবন্ধু হলের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণকাজ দেওয়া হয় ঢালী কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে। যা ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। সর্বশেষ এ বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়। কিন্তু কাজের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৫৫ শতাংশ। এছাড়াও শ্রী অতীশ দীপঙ্কর হল, জননেত্রী শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা হলের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ার পেছনে প্রশাসনের নজরদারির অভাব স্পষ্ট ।
এক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জীববিজ্ঞান অনুষদের পঞ্চম একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো বাকি আছে প্রায় অর্ধেক কাজ। কয়েক দফায় সময় বাড়ানোর পরেও প্রকৌশলী দপ্তরের নতুন ভবনের কাজ শেষ হয়নি চলতি বছরের মধ্যে। আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৬ সালে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ। এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ৭০ শতাংশ। তবে ঠিকাদারদের অভিযোগ, স্থানীয়দের হুমকির মুখে বন্ধ রাখতে হয়েছে বাকি কাজ। উল্লেখ্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণ নিয়ে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ঠিকাদার এবং স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়।
এদিকে পুরাতন শহীদ মিনার ভেঙে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ, জিরো পয়েন্ট থেকে অনুষদ পর্যন্ত ওয়াকওয়ে নির্মাণ, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনের সামনের লেকে দৃষ্টিনন্দন ঝর্ণা, চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের জন্য চার তলা ভবন ও জিরো পয়েন্টে অত্যাধুনিক মসজিদ নির্মাণ এই প্রকল্পগুলো উদ্বোধন আর ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণেই আটকে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার এস এস মনিরুল হাসান বলেন, ঠিকাদারদের সাথে আমরা মিটিং করেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে বাকি কাজ অতি শীঘ্রই শেষ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ হোসেন বলেন, সবগুলো প্রকল্পের কাজে এখন ঠিকঠাক চলছে। আর যারা নির্মাণকাজ নিয়ে ঢিলেমি করছে তাদের কাজ বাতিল করার বিষয়ে আমরা চিন্তা করছি।
টিআইবি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তার কবির চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ না হওয়া, বিলম্বিত হওয়া, স্থগিত হয়ে যাওয়া এসবকিছুর পেছনে একটাই কারণ দুর্নীতি। এই দুর্নীতির সাথে কমবেশি সবাই জড়িত। এক সময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সম্মান ও পদবী এতই উপরে ছিল যে তাদের দেখলে আমার মাথা নোয়াতাম। কিন্তু বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগণ সরকারদলীয় কর্মীতে পরিণত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ। এ ছাত্ররাই এখন টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।