২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ক্যান্সারের কথা শুনলেই সবাই ভয় পেয়ে যান। বিষয়টা অবশ্য ভয় পাওয়ার মতোই। কারন অনেক ক্যান্সারেরই ভাল কোন চিকিৎসা আজও পাওয়া যায়নি। আবার আগেভাগেই এটা নির্ণয় করতে না পারলে চিকিৎসাও সম্ভব হয়ে উঠে না। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গেই কিন্তু ক্যান্সার হতে দেখা যায়। অন্ত্রনালীর শেষের দিকের অংশ বৃহদন্ত্র বা কোলনেও ক্যান্সার হতে পারে। আমাদের দেশে কোলন ক্যান্সার অনেক পরিচিত একটি অসুখ। কোলন ক্যান্সার একটি মারাত্মক এবং জটিল রোগও বটে। প্রতিবছর আমাদের দেশসহ সারাবিশ্বে অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকেই মৃত্যুবরণ করছে। মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। বয়স যত বাড়তে থাকে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তত বেড়ে যায়। সাধারণত ৪০-৫০ বছর বয়সী রোগীদের কোলন ক্যান্সার বেশী হতে দেখা যায়। এছাড়া ৪০ বছরের নিচেও কিন্তু কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বর্তমানে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের জন্য এরকম অসুখের প্রবণতা অনেক বাড়ছে।
লাল মাংস সারা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়। অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়া বিভিন্ন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। আমাদের দেশে গরু ও খাসির মাংস মানুষ বেশি খায়। এসব লাল মাংস বেশি খেলে হতে পারে কোলন ক্যান্সার। খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবারের অনুপস্থিতি কোলন ক্যান্সার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর আঁশ থাকে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই আঁশহীন ফাস্টফুড পছন্দ করে, শাকসবজি খেতে চায়না। ধূমপান ও মদ্যপান কোলন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে অনেক মানুষ ধূমপান করে, আর মদ্যপায়ীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
আমাদের শরীরের ৯৯ শতাংশ ক্যালসিয়াম থাকে হাড়ে এবং দাঁতে। এ ছাড়া বিভিন্ন টিস্যু এবং ফ্লুইডের মধ্যে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। হাড় মজবুতভাবে গঠনে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে ক্যালসিয়াম কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবার থেকে প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি, বাদাম, কমলা ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা ক্যালসিয়াম কম গ্রহণ করে তাদের কোলন ক্যান্সার বেশি হয়। আবার এটাও দেখা গেছে যারা ক্যালসিয়াম সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করে তাদের কোলন ক্যান্সার কম হয়। এসব গবেষণায় আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। দেখা গেছে নিয়মিত ক্যালসিয়াম খেয়ে এরপর কিছু সময় বন্ধ করে রাখলেও কোলন ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে যায় ।
আইবিএস সমস্যার কারণে অনেকেই দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার খেতে পারেন না। তারা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন। বৃদ্ধ বয়সে হাড় ক্ষয় হয়। এর ফলে যে কোন সময়ে হাড় ভেঙে যেতে পারে। ক্যালসিয়াম এসব ক্ষতির হাত থেকেও রক্ষা করে আমাদের। সুতরাং ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে কোলন ক্যান্সারের পাশাপাশি হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
কোলন ক্যান্সার থেকে বাঁচতে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এবং বিভিন্ন আঁশ জাতীয় অন্যান্য খাবার বেশি খেতে হবে। একটু সচেতন হলেই কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। আশা করি সবাই সচেতন হবে এবং কোলন ক্যান্সারের হাত থেকে বেঁচে থাকবে।
ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।