পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নতুন ধারার রাজনীতির মধ্যদিয়ে জন্ম হয়েছে বিএনপির। সীমান্ত হত্যা, ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদী ভুমিকার কারণে স্বল্প সময়েই দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। দলটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোতে এক বিন্দুও ছাড় দেননি। তারা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বরাবরই ছিলেন সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। সীমান্ত হত্যা ছাড়াও, ফারাক্কা বাঁধ, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ, ট্রানজিট, তিস্তা ইস্যুসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল দলটি। রাজপথে কর্মসূচিও পালন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। একারণে ভারতবিরোধী জনসমর্থনও বিএনপির প্রধান ভোট ব্যাংকে পরিণত হয়। তবে বিগত কয়েকবছর ধরেই দলটি তাদের এই অবস্থান থেকে দূরে সরে গিয়েছে বলে মনে করে নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে দিল্লির সাউথ ব্লককে ‘ম্যানেজ’ করে বিএনপিকে ক্ষমতায় নেয়ার দিবাস্বপ্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগলোতে দলটি নিরবতা পালন করছে।
অথচ আইন ও শালিস কেন্দ্রের তথ্যমতে, এই সরকারের গত ১২ বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ শত বাংলাদেশীকে সীমান্তে হত্যা করেছে বিএসএফ। এই করোনার মধ্যে চলতি বছরে প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর হাতে খুন হয়েছে ৪৫ জন বাংলাদেশী। যার বেশিরভাগ নিয়েই বিএনপিও কোন প্রতিবাদ জানায়নি। তবে দীর্ঘদিন পর এই ইস্যুতে এবার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। নিন্দা জানানো হয় দলটির স্থায়ী কমিটির সভায়। একইসাথে হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আজ কেন্দ্রীয়সহ মহানগর কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ অথবা কালো পোষাক পরিধান করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। দীর্ঘদিন পর জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং দলের মূলনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এই কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়েছেন দলটির ভারতবিরোধী হিসেবে পরিচিত নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, অবশেষে বিএনপির বোধোদয় হয়েছে। তারা মনে করেন শীর্ষ নেতারা যতদ্রুত বুঝবেন যে, ভারতের তোষণ করে বিএনপি কখনোই ক্ষমতায় আসতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না। ততই দল ও দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। তাদের মন্তব্য, বিএনপিকে ক্ষমতায় যেতে হলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া যে মূলনীতির ওপর রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছেন তার মাধ্যমেই যেতে হবে।
কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা ও মহানগরের দায়িত্বশীল এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ ও বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক যে কমিটি কাজ করে তাদের একটি অংশ দলকে ভারতমুখী করতে কাজ করছে। তারা বলেন, ভারত বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই আগ্রাসন চালাচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমান নতজানু আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছুই পায়নি। দীর্ঘদিন ধরে তিস্তার পানির বিষয়ে শুধু আশ্বাসই দিচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশ ট্রানজিট দিয়েছে, রাডার স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে, ফেনী নদীর পানি দিয়েছে, সীমান্তে হত্যা চালাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদ পর্যন্ত করছে না। বিএনপির পক্ষ থেকেও এসব ইস্যুতে কোন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। আবার যারা কথা বলেছেন তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।
বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের জেলা এবং মহানগরের একাধিক নেতা সাথে কথা বলে জানা যায়, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও বিএনপি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলো। বেগম জিয়া কারামুক্ত থাকা অবস্থায় তিস্তা ইস্যুতেও লংমার্চের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতবিরোধী থেকে হঠাৎ ভারত তোষণনীতির কারণে বিএনপি রাজনৈতির মাঠে কোনঠাসা। সীমান্ত হত্যার মাধ্যমে যে প্রতিবাদের সূচনা হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে ভারতীয় আগ্রাসন ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে নিয়ে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা দাবি তাদের।
সীমান্ত হত্যার ও প্রতিবাদ কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান অনির্বাচিত নতজানু সরকারের দুর্বল নীতির কারণে সীমান্তে হত্যা বিরামহীন ভাবে চলছে বলে স্থায়ী কমিটির সভা প্রতিবাদ জানানো হয়। মানবিক অধিকার লঙ্ঘন করে এই সকল হত্যাকান্ড ঘটার পরেও সরকারের নির্বিকার ভূমিকা জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য নতজানু সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানান তিনি। তিনি বলেন, ২১ ডিসেম্বর বিএনপি সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে কালো পতাকা প্রদর্শন, কালো ব্যাচ ধারণ করবে।
এদিকে ভারতীয় আগ্রাসন ও বিএনপির ভারত বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসার কারণ জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির এক প্রভাবশালী সদস্য এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হননি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে একপেশে হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশিরা। বর্তমান সরকার কতটুকু নতজানু যে, আমরা দেখছি-বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীরা বিএসএফের হত্যাকান্ডের কোনো প্রতিবাদ না করে বরং তাদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশিদেরই অভিযুক্ত করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর উদাহরণ দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৭ ডিসেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনাকালেই বিএসএফ গুলি করে এক বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। অথচ সামিট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন নির্লজ্জভাবে বলেছেন, ‘সীমান্ত হত্যায় ভারত একতরফাভাবে দায়ী নয়। আমাদের কিছু দুষ্টু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে সীমান্তের ওপারে যায় এবং তাদের কাছে অস্ত্র থাকে। তখন ভারত বাধ্য হয়ে ভয়ে ওদের গুলি করে। কিছুদিন আগে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু আনতে গিয়ে ইন্ডিয়ার গুলি খেয়ে মারা যায়, তার জন্য দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না। রিজভী বলেন, নতজানু সরকারের মন্ত্রীদের এসব বক্তব্য শুনলে মনে হয় তারা স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রী নন, তারা অন্য কোন দেশের প্রতিনিধি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।