মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারো বেসামাল ইউরোপ। প্রথম ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগা ইতালি আবারো বিপর্যস্ত। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে আসন্ন বড়দিনের আগে ও পরে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে ইতালি সরকার। একই পথে হাঁটছে ইউরোপের আরো কিছু দেশ। বড়দিনের সময় সরকারি ছুটিতে গোটা দেশকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে অগুরুত্বপ‚র্ণ দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট ও পানশালা বন্ধ রাখা হবে; ইতালিয়ানরা শুধু কাজ, মেডিকেল কিংবা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে পারবেন। এমনকি বাসায় অতিথি সমাগতও সীমিত রাখতে হবে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ কন্তে এটাকে ‘মোটেও সহজ সিদ্ধান্ত নয়’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা খুবই উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছেন, বড়দিনের সময় সংক্রমণ খুব বেশি বাড়তে পারে...কাজেই আমাদের পদক্ষেপ নিতেই হচ্ছে। কভিড-১৯ মহামারীতে ইউরোপ মহাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ইতালিতে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। যদিও সুড়ঙ্গের অন্যপ্র্রাপ্তে আলোর রেখাও দেখতে পাচ্ছেন কন্তে। এ মাসের শেষের দিকে ইতালিতে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হবে। কন্তে মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে ‘এ দুঃস্বপ্নের সমাপ্তির স‚চনা ঘটবে।’ কন্তে যথার্থই বলেছেন, লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া মোটেও সহজ ছিল না। এ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে জোট সরকারের নেতারা রীতিমতো ঝগড়ায় লিপ্ত হন। কেউ কেউ পরিপ‚র্ণ লকডাউন চাইছিলেন, আবার কেউ চাইছিলেন সীমিত আকারের পদক্ষেপ, যা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখতে ও মানুষকে পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেবে। কতটা কঠোর থাকছে ইতালিতে? ইতালিজুড়ে ‘রেড জোন’ বিধিনিষেধ থাকবে ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি এবং ৫ থেকে ৬ জানুয়ারি। প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, এ সময় মানুষজন শুধু কাজ, জরুরি প্রয়োজন ও স্বাস্থ্যজনিত কারণে বাইরে যেতে পারবেন। তিনি যোগ করেন, একটি বাসায় সর্বোচ্চ দুজন অতিথিকে স্বাগত জানানো যাবে এবং তাদের বয়স কোনোভাবেই ১৪-এর নিতে হতে পারবে না। আর রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর তিনদিন এবং ৪ জানুয়ারি বিধিনিষেধ খানিকটা শিথিল করা হবে; এ সময় মানুষজন বাসার বাইরে যেতে পারবেন, যদিও পানশালা, রেস্টুরেন্ট এ সময় বন্ধই থাকবে। ‘ন্যূনতম সামাজিকীকরণের’ উদ্দেশে লকডাউনের এ নিয়মটির নকশা করা হয়েছে, যা কিনা এ সময়ের জন্য ‘উপযুক্ত’ বলে মনে করেন কন্তে। তিনি ইতালির মানুষজনকে দায়িত্ববান হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, পুলিশ কিন্তু বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিয়ম পালন করছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করবে না। ইউরোপের অন্য কোথায় কী ঘটছে? করোনাভাইরাসে পজিটিভ হওয়ার পর থেকে ভার্সাইয়ে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে সঙ্গনিরোধ অবস্থায় রয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি জানিয়েছেন, ক্লান্তি অনুভবের পাশাপাশি মাথাব্যথা ও শুষ্ক কাশি রয়েছে তার। গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান সামিটে মাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সেøাভাক প্রধানমন্ত্রী ইগর মাতোভিচ জানিয়েছেন, তিনি করোনাভাইরাসে পজিটিভ। একই কারণে সঙ্গনিরোধ রয়েছেন বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগাল ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রীরা। মাখোঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়েছিলেন পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা, এতে তিনি ১৪ দিনের জন্য সঙ্গনিরোধ থাকা শুরু করেছেন। ইতালির মতো ইউরোপের আরো কিছু দেশে বড়দিন সামনে রেখে কঠোর লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে। জানুয়ারি পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি। জার্মানিতে বড়দিনের সময় বিধিনিষেধ খানিকটা শিথিল করা হবে। তখন একটি পরিবারে বাইরে থেকে সর্বোচ্চ চারজন অতিথিকে আসার অনুমতি রয়েছে। অস্ট্রিয়া সরকার শুক্রবার জানিয়েছে, বড়দিনের পর তৃতীয় লকডাউনে যাচ্ছে তারা। ২৬ ডিসেম্বর থেকে অগুরুত্বপ‚র্ণ দোকানপাট বন্ধ থাকবে এবং বাড়ির বাইরে চলাচল সীমিত থাকবে। সুইডেনে আগের নিয়ম পাল্টে নতুন নির্দেশে বলা হয়েছে, ব্যস্ত সময়ে যানবাহনে মাস্ক পরিধান করতে হবে। এছাড়া রেস্টুরেন্টের একটি টেবিলে আটজনের পরিবর্তে এখন থেকে বসতে হবে চারজনকে; সঙ্গে রাত ৮টার পর অ্যালকোহল বিক্রিও বন্ধ রাখতে হবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আরেকটি ‘দেশব্যাপী লকডাউন’ এড়ানোর আশা করছেন, যদিও স¤প্রতি সেখানে সংক্রমণ অনেক বেড়েছে। বিবিসি,রয়টার্স অবলম্বনে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।