পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত চার বছরে বাংলাদেশ থেকে যত লোক ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ফিরে গেছেন বলে ভারতের সরকারি পরিসংখ্যানেই স্বীকার করা হচ্ছে। সে দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য বলছে, এই সময়সীমার মধ্যে যত বাংলাদেশি ভারতে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েছেন তার প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক আটক হয়েছেন ভারত ছেড়ে পালিয়ে যাবার সময়। বিবিসি বাংলা’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য ফুটে উঠেছে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে ‘নেট মাইগ্রেশন’ কমছে বলে বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই বলে আসছেন। এই পরিসংখ্যান কার্যত সেই দাবিকেই সমর্থন করছে। বস্তুত বিএসএফের পক্ষ থেকে তাদের সারা বছরের কর্মকান্ড নিয়ে যে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, তাতে দেখা যাচ্ছে চলতি বছরের ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে মোট ৩১৭৩ জন তাদের হাতে ধরা পড়েছেন।
সেই জায়গায় বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকতে গিয়ে আটক হয়েছেন এর মাত্র এক তৃতীয়াংশ ১১১৫ জন। ভারতে প্রস্তাবিত এনআরসিকে অনেকেই অবৈধ বাংলাদেশি চিহ্নিত করার অভিযান হিসেবে দেখেছেন
এর আগের তিন বছরের বিএসএফ পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে ২০১৯, ২০১৮ ও ২০১৭ সালে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন যথাক্রমে ২৬৩৮, ২৯৭১ আর ৮২১জন। সেই জায়গায় ওই তিন বছরের বিপরীতমুখী স্রোত (অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার চেষ্টা) অনেকটাই কম। যথাক্রমে ১৩৫১, ১১১৮ আর ৮৭১ জন।
এই পরিসংখ্যানে যাদের কথা বলা হয়েছে বিএসএফ তাদের সবাইকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবেই চিহ্নিত করেছে। যদিও তাদের সবার ক্ষেত্রে সেটা যাচাই করার মতো উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ বিএসএফের হাতে নেই।
তবে যে ভারতীয় নাগরিকরা অবৈধ পথে বাংলাদেশে যাতায়াত করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, তার মধ্যেও ভারত থেকে বাংলাদেশে পাড়ি দেয়ার ঘটনাই অনেক বেশি বলে তথ্যে দেখা যাচ্ছে। ভারতে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস্ ব্যুরোর (এনসিআরবি) ২০১৭ সালের বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, ওই বছরে ৮৯২ জন ভারতীয় নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েন।
উল্টোদিকে সে বছরেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত আসার সময় যাতায়াত সংক্রান্ত উপযুক্ত কাগজপত্র না-থাকার কারণে আটক করা হয় ২৭৬ জন ভারতীয় নাগরিককে। কিন্তু ২০১৭র পর থেকে এনসিআরবি তাদের বার্ষিক রিপোর্টে এই সংক্রান্ত আর কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশিদের ভারতে মাইগ্রেশন নিয়ে তাদের সা¤প্রতিকতম তথ্য কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে, দিল্লিতে বিএসএফ কর্মকর্তারা অবশ্য সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিএসএফের একটি উচ্চপদস্থ সূত্র শুধু বিবিসিকে বলেছেন, আমরা আমাদের যাবতীয় স্ট্যাটিসটিকস রিপোর্টেই দিয়ে দিয়েছি। এখন কীভাবে সেই নাম্বার ক্রাঞ্চিং করবেন বা কোন উপসংহারে পৌঁছবেন তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।
তবে দিল্লিতে দ্য হিন্দু পত্রিকার সাংবাদিক বিজয়েতা সিং অবশ্য মনে করছেন, ভারত থেকে ক্রমশ আরও বেশি সংখ্যায় কথিত বাংলাদেশিরা যে নিজেদের দেশে ফিরে যাচ্ছেন এই পরিসংখ্যান তারই প্রমাণ।
সীমান্তে ধরা পড়ার পর বহু বাংলাদেশিই বলেছেন করোনাভাইরাস মহামারিতে ভারতে তারা কাজকর্ম হারিয়েছেন, ফলে তারা এখন নিজেদের জায়গায় ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন, বলছিলেন বিজয়েতা সিং।
“বিএসএফ সূত্রগুলো আমাকে এমনও আভাস দিয়েছেন যে বেশির ভাগ সময় এরকম ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশিদের সীমান্ত পেরিয়ে যেতে দেন - কারণ তাদের নিয়মমাফিক গ্রেফতার করা হলে দীর্ঘ আইনি জটিলতায় পড়তে হয়।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও বেশ কিছুদিন ধরেই দাবি করা হচ্ছে, ভারতের তুলনায় তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও এখন অনেক বেশি এবং বাংলাদেশ থেকে লোকজনের কাজের সন্ধানে ভারতে যাওয়ার কোনও কারণই নেই।
আইএমএফ বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সা¤প্রতিক এক পূর্বাভাসেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পার ক্যাপিটা জিডিপি বা মাথাপিছু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অচিরেই ভারতকেও টপকে যেতে চলেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।