Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পৌষের কাঁপন কই!

গ্রাম-জনপদে খেজুরের রসে মৌ মৌ গন্ধ হরেক পিঠেপুলির ধুম : শহুরে জীবনে ‘কৃত্রিম’ আস্বাদ দিচ্ছে ‘পিঠে-শপ’ ই-শপিং!

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

শীত আছে- শীত নেই। কুয়াশার সাথে শীত আছে। তবে গায়ে কাঁপন তোলা পৌষের কনকনে ‘স্বাভাবিক’ শীত নেই! গতকাল বুধবার পয়লা পৌষে দেশের বেশিরভাগ জেলায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে এবং রাতের পারদ ছিল ১৫/১৭ ডিগ্রিতে। যা মৌসুমের এ সময়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, আকাশতলে এখনও বিক্ষিপ্ত হালকা নিচু মেঘের ভেলা ভাসছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরেও রয়েছে মেঘমালা। উত্তরের হিমেল বাতাস এখনও জোর পায়নি।

এরফলে আবহাওয়ায় কিছুটা উষ্ণতা ভাব রয়েছে। এ মাসের শেষের পনেরো দিনে দেশের উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল দিয়ে মৃদু থেকে হালকা শৈত্যপ্রবাহের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। অবশ্য গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৪ এবং দিনের সর্বোচ্চ পারদ সীতাকুন্ডে ২৯.৮ ডিগ্রি সে.। আজ রাতের পারদ সামান্য হ্রাসের আভাস রয়েছে।

পয়লা পৌষ দিয়েই পঞ্জিকার পাতায় আবহমান বাংলার চিরায়ত শীত ঋতু প্রবেশ করেছে। গ্রাম-জনপদে চারদিকে ভোরবেলায় কমবেশি কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে সুমিষ্ট খেজুরের রসের মৌ মৌ গন্ধ, রস বিক্রির হাঁকডাক। গৃহস্থ ঘরে ঘরে হরেক সব পিঠেপুলির ধুম অগ্রহায়ণেই শুরু হয়ে গেছে। যদিও ঋতুর পালাবদলে এসব বৈচিত্র্য ও অনুষঙ্গ শহর-নগর জীবনে অতীতের তুলনায় তেমন বেশি দোলা জাগায় না। অনেকে পিঠেপুলির ‘কৃত্রিম’ আস্বাদন নিচ্ছেন নগরে এখানে-সেখানে গড়ে ওঠা ‘পিঠে-শপ’ থেকে এমনকি আজকাল ই-শপিংয়ে! তা তো দাদী-নানী, মা-খালা, চাচী-জেঠাইমাদের সযত্ম সুপটু হাতে হাতে বানানো মজার পিঠেপুলির মতো হতেই পারেনা! তাছাড়া আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক ধারায় বাংলাদেশে ষড়ঋতু আগের মতো জনজীবনে পার্থক্য-ফারাক সূচনা কিংবা বড়সড় প্রভাব ফেলেনা তেমন।

উত্তরাঞ্চল, পার্বত্য অঞ্চল, নদ-নদী অববাহিকায় ছাড়া দেশের অধিকাংশ জেলায় কুয়াশার ঘোর ও বিস্তার পৌষেও এখন কম। বিশেষত উত্তরাঞ্চলে দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমিক-মজুর-কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া ধুলেবালি ধোঁয়ার দূষণে সর্দি-কাশি-জ¦র, হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট, টনসিল ও ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত রোগীগের বাড়ছেই কষ্ট-দুর্ভোগ। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে এ ধরনের রোগীর ভিড় হচ্ছে।
অধিকাংশ এলাকায় দিনভর সূর্যালোক ও রোদের তেজে দিনের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে। সন্ধ্যার পর উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম দিক থেকে হিমালয়ের হিমেল হাওয়া বইছে। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬.৮ এবং সর্বনিম্ন ১৭.৫ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে যথাক্রমে ২৭.৭ এবং ১৭.৫ ডিগ্রি সে.। গেল ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গাসহ দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি ‘শীত নামানো’ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ঝরেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়বে। যা মৌসুমের এ সময়ে স্বাভাবিক। জলীয়বাষ্পের হারও কমেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বা জলীয়বাষ্প ছিল ৬০ শতাংশ।

আজও অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কুয়াশা, বিক্ষিপ্ত মেঘ-জলীয়বাষ্পের সাথে বাতাসে ভাসমান ধুলোবালি-ধোঁয়ার কারণে বায়ুদূষণ অব্যাহত রয়েছে। তবে আগের চেয়ে কমতির দিকে। গতকাল রাত ৮টায় ঢাকার বায়ুমান সূচক (একিউআই) আইকিউএয়ার এয়ার-ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণ তথ্য মতে ১৯২। যা ‘অস্বাস্থ্যকর’। তবে বায়ুদূষণে বৈশি^ক অবস্থানে ঢাকা চতুর্থ স্থানে। আকুওয়েদার’র পর্যবেক্ষণে ঢাকার বায়ুমান সূচক (একিউআই) ১৭৬। আগামী শনিবার পর্যন্ত ঢাকার বায়ুমান সূচক ২শ’র মধ্যে সীমিত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আকুওয়েদার। গতকাল চট্টগ্রামের বায়ুমান ছিল ১৪৯।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ