Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাটি দূষণের প্রতিক্রিয়া

নাজমুন্নাহার নিপা | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

পরিবেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উপাদান হচ্ছে মাটি, পানি এবং বায়ু। এই উপাদানগুলো প্রাণীকূলের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু বর্তমানে মাটিকে নানাভাবে দূষিত করা হচ্ছে। যখন ভূপৃষ্ঠের দূষকগুলোর ঘনত্ব এত বেশি হয়ে যায় যে, এটি ভূমির জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে এবং বিশেষত খাদ্যের মাধ্যমে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তখন তাকে আমরা মাটি দূষণ বলি। কৃষিকাজে বহুল ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক, কীটনাশক এবং সার ভূমি দূষণকে ত্বরান্বিত করছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) দ্বারা নির্দেশিত হিসাবে, মাটি দূষণ একটি বিশ্বব্যাপী হুমকি, যা ইউরোপ, এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার মতো অঞ্চলে বিশেষত মারাত্মক। এফএও আরও নিশ্চিত করে যে- তীব্র এবং এমনকি মাঝারি ক্ষয় উভয়ই ইতোমধ্যে বিশ্বের মাটির এক তৃতীয়াংশকে প্রভাবিত করছে। তাদের মতে, দূষিত ভূমি থেকে আবাদযোগ্য মাটির ১ সেন্টিমিটার স্তর তৈরি করতে ১,০০০ বছর সময় লাগবে।

মাটির অবক্ষয় বায়ু এবং পানির গুণমানকে প্রভাবিত করে, বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। মাটি দূষণকারী এজেন্টরা ফসলের পরিমাণ এবং গুণমান হ্রাস করে বিশ্ব খাদ্য সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। মাটির দূষক খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে, যার ফলে অসুস্থতা দেখা দেয়। দূষিত মাটিতে উৎপন্ন ফসল খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে মানুষ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। মাটির অবক্ষয়ের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ক্ষতি বিশ্বের বার্ষিক গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট (জিডিপি) এর ১০% ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মাটি দূষণের জন্য বর্তমানে অনেক গুলো কারণ বিদ্যমান। তার মধ্যে অন্যতম এবং প্রধান কারণ হলো কৃষিজমিতে কীটনাশকের ব্যবহার। বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামীণ জমি সরাসরি কৃষির সাথে সম্পৃক্ত। ফলে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা মেটাতে অতিরিক্ত ফসল উৎপন্ন করতে রাসায়নিক সারের শরণাপন্ন হতে হয়। ফলে একদিকে যেমন মাটি দূষণ হচ্ছে অন্যদিকে সেই খাদ্যের মাধ্যমে ক্ষতিকর রাসায়নিক আমাদের শরীরে প্রবেশ করে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি করে।

বর্তমানে মাটি দূষণের আরও একটি ভয়ানক কারণ হলো কল-কারখানার ক্ষতিকর বর্জ্য, যা প্রকৃতিকে বিষাক্ত করে তোলে। কারখানাগুলোতে ব্যবহৃত এই রাসায়নিক সমূহ ঐ অঞ্চলের ভূমিকে এমনভাবে দূষিত করে যে, সেখানকার মাটি বৃক্ষরোপণের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। এই বর্জ্য ইনফিলট্রেশনের মাধ্যমে পানির লেয়ারের সাথে মিশে যায় এবং সেই পানি যখন উত্তোলিত করা হয়, তা আবার ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ।

পাশাপাশি নাগরিক জীবনের প্রভাব বিশেষভাবে মাটি দূষণকে প্রভাবিত করে। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ সরাসরি ডাম্পিং করা, ইটভাটার জন্য জমির উপরিভাগের মাটি উত্তোলিত করার মাধ্যমে ভূমি ক্ষয় এবং মাটি দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফলে মাটির স্বাভাবিক গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়।

আমরা জানি, অক্সিজেন মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম উপাদান। আমরা নিঃশ্বাসের সাথে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করি তা গাছ গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে আর আমরা গাছ নিঃসৃত সেই অক্সিজেন গ্রহণ করি। কিন্তু দূষিত মাটিতে গাছপালা জন্মায় না। ফলে পরিবেশে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। যার প্রভাব ইতোমধ্যে দূষণ যুক্ত অঞ্চলে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। বর্তমানে বৃষ্টির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে কমে যাচ্ছে- তার অন্যতম কারণ হলো ক্রমাগত গাছ কেটে ফেলা বা বন উজাড়করণ। ফলে বৃষ্টি চক্রের পরিবর্তন হচ্ছে এবং এটি বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে।

মাটি দূষণের ফলে ভূমির উর্বরতা হ্রাস পায়। মানুষের জনসংখ্যার দ্রুত বর্ধনের সাথে সাথে, আমাদের যে পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন ছিল সেখানে ঘাটতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং ফসলের গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে। মাটিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলো মাটির উর্বরতা হ্রাস করে, যার ফলে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পায়। ফলে মানুষ তাদের পরিমিত খাদ্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

গাছপালা মাটি থেকে শিকরের মাধ্যমে পানি শোষণ করে এবং পশুপাখিও মাটি থেকে তাদের খাদ্য সামগ্রী খুঁজে নেয়। কিন্তু মাটি যদি বিষাক্ত থাকে তাহলে তা গাছপালা এবং পশুপাখির মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া দূষিত মাটিতে উদ্ভিদের উপকারী ব্যাকটেরিয়া অকার্যকর হয়ে পড়ে।

যে জিনিসগুলো পুনরায় ব্যবহার করা যায় সেগুলো যেখানে সেখানে নিষ্পত্তি করা উচিত নয়। যেমন কাগজ, গ্লাস, অ্যালুমিনিয়াম এবং এর মতো তৈরি জিনিসগুলো পুনর্ব্যবহার করা উচিত। পলিথিন ব্যবহারের পরিবর্তে পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত। বায়োডিগ্রেডেবল পণ্য ব্যবহারে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। যেখানে সম্ভব, প্যাকেজিংয়ের জন্য কার্টুনগুলোর মতো বায়োডিগ্রেডেবল পণ্য ব্যবহার করা উচিত কেননা যদি এগুলো নিষ্পত্তি করা হয় তবে তা সহজেই মাটির অংশ হয়ে যায়। পরিবেশ বান্ধব পণ্য গুলো যেন মানুষের হাতের নাগালে পাওয়া যায় সেজন্য উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে একসাথে কাজ করতে হবে।

মাটিকে বলা হয় খাদ্য শস্যের ভান্ডার। এখানে শশ্য জন্মায় এবং সেই খাদ্য আমাদের শরীর এবং স্বাস্থ্যের পুষ্টি ও শক্তি যোগায়। যদি সেই মাটি বিষাক্ত হয়- তাহলে কি হতে পারে একবার আমাদের সবার ভাবা দরকার। এই যে প্রচুর পরিমাণ কারখানার এবং রাসায়নিক বর্জ্য সেখানে মিশে থাকে বিভিন্ন ধরনের হেভী মেটাল, যেমন- ক্যাডমিয়াম, লেড, মার্কারি ইত্যাদি। এগুলো বছরের পর বছর ধরে মাটিতে মিশে থাকে এবং খাদ্য শস্যের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। ফলে স্নায়ু সমস্যা থেকে শুরু করে নানা ধরনের মারাত্মক রোগ সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
মাটি দূষণের ভয়াবহতা কতটা তা আমাদের অনুধাবন করা উচিত। ভয়ংকর লিউকিমিয়া থেকে ক্যান্সার হতে পারে। একদিকে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, নাইট্রোজেন ফিক্সেশন কমে যাচ্ছে, মাটির বিভিন্ন উপকারি অণুজীব হারিয়ে যাচ্ছে এবং অন্যদিকে ব্যবহার্য জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে অণুজীব, জমির পুষ্টি গুনাগুণ এবং খাদ্যশস্যের যে প্রাকৃতিক খাদ্য শৃঙ্খল রয়েছে তা নষ্ট ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

মাটি দূষণ রোধে শুধু সবাইকে সচেতন হলে হবে না, আমাদেরকে বেশ কিছু বিষয়ের উপর জোড় দিতে হবে। প্রথমত, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের বহুল ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে এবং জৈব প্রযুক্তিতে অভ্যস্থ হতে হবে। অতিরিক্ত ক্রপিং ও ওভারগ্রেজিং এর মতো অভ্যাসগুলো আমাদের এড়ানো উচিত কারণ এগুলো মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি করে।

দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য, মেটাল পদার্থ এর পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। সঠিক নিয়মে ল্যান্ডফিলিং এবং ডাম্পিং করতে হবে যেন কোন ভাবেই নিঃসৃত বর্জ্য রস মাটির সাথে না মিশে। তৃতীয়ত, বৃক্ষ নিধন রোধ করতে হবে, কারণ এর ফলে জমির উর্বর অংশ ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে জমি তার স্বাভাবিক কার্যকারিতা হারায়। বিশেষ করে যেসব অঞ্চল গুলোতে কারখানা গড়ে উঠেছে সেখানকার মাটি নিয়মিত মনিটরিং করা নিশ্চিত করতে হবে, যে মাটির উপাদান মাত্রা কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে। কারখানাগুলো যেন নিজস্ব ইটিপি ব্যবহার করে অথবা কেন্দ্রীয় শোধনাগার প্ল্যান্ট এর সাথে যুক্ত থাকে। এতে সেখাকার বর্জ্য সরসরি মাটিতে না মিশে মাটি দূষণ থেকে রক্ষা করবে।

বেশিরভাগ দেশের মাটি দূষণের বিরদ্ধে বেশ কিছু নীতিমালা রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৯৭, পরিবেশ আদালত আইন-২০০০, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩, বালুমহাল এবং মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০। বিদ্যমান আইনে মাটি দূষণে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে।

যেখানে একটি গাছ কাটা হবে সেখানে নাগরিকদের আরও বেশি গাছ লাগানো দরকার। এটি মাটির ক্ষয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ। যারা পৃথিবীতে গাছ কেটে দেয় তাদের বিরুদ্ধেও সরকারদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বনভূমি ধ্বংস না করে বেশি করে গাছ লাগানো উচিত। শুধুমাত্র মাটি দূষণের ফলে পৃথিবীর প্রায় ২৫ বিলিয়ন টন উপরিভাগের মূল্যবান মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার ফলে একদিকে যেমন কৃষিজমির পরিমাণ কমছে অন্যদিকে পৃথিবীর স্বাভাবিক ভারসাম্যে প্রভাব ফেলছে।

মনে রাখতে হবে, আমাদের একটি পৃথিবী আছে এবং আমরা যদি এর পৃষ্ঠটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেই তবে আমরা নিজেরাই অনাহারী বা বিষাক্ত হয়ে উঠব। ভূমিকে তার আসল অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া প্রায় অসম্ভব কাজ। এর জন্য মাটির বৈশিষ্ট্যগুলো পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে এবং জমিটিকে তার যথাযথ এবং দায়িত্বশীলতার সাথে ব্যবহার করলেই মাটি দূষণ এড়ানো সম্ভব।

মাটির অবক্ষয় একটি জটিল সমস্যা যার জন্য সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের যৌথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। মাটি দূষণ রোধকল্পে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি পরামর্শক কমিটি ভূমি দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা প্রদান করবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে শুধু শিল্পাঞ্চল তৈরি করলেই হবে না সেখানকার মাটি, পানি, বায়ুসহ সামগ্রিক পরিবেশ রক্ষার্থে কাজ করতে হবে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে নদনদী, নর্দমা-খালসহ সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জমিতে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে, পলিথিন ব্যবহার না করে পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ



 

Show all comments
  • Jack Ali ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:৩৮ পিএম says : 0
    The whole universe belongs to Allah and He created Human being as a custodian of this world. Allah teaches us how to protect the Eco System, Allah commanded us to carry out research the Qur'an in several places. we are destroyed our echo system completely. Allah provide sustenance for all the creations on earth, I.E. Human, animal, bird, fish, insect... do we feed the Bird, Insect, Fish or any other creature on this world??? Allah feeds them similarly Allah feeds us, but we the human being don't read Qur'an and Hadith.. If we know Qur'an and Hadith under no circumstance, we use Chemical Fertilizer, we shouldn't discharged industry waste without treating, and many more things which destroy Eco Systems. When we are kid we used to catch so many type of fish from paddy field, in the paddy we found crab, frog, many types of snails. Now everything's has been disappear because we don't know what Allah talked about nature. “…And do not desire corruption in the land. Indeed, Allah does not like corruptors. ” Qur’an 28:77 “…And do not commit abuse on the earth, spreading corruption.” Qur’an, 2:60 The Messenger of Allah, peace and blessings be upon him, said, “If the Resurrection were established upon one of you while he has in his hand a sapling, then let him plant it. Brick field are devouring million millions acre of top soil, not only that brick field produce toxic gas cause serious damage the crops and it affects human being and animal as well. We need to find out alternative how to manufacture brick like European countries.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাটি-দূষণ

১৪ ডিসেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন