Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিথ্যা মামলায় ভোগান্তির শিকার এক ব্যবসায়ী

আদালতে মামলা দায়েরে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন

ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:৩৯ পিএম

আদালতে মামলা দায়েরে জাতীয়পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধনের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার দাবিতে জানিয়েছেন মিথ্যা মামলায় দুই বছর ভোগান্তির পর অব্যহতি পাওয়া এক ব্যবসায়ী। রবিবার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সমম্মেলনে এ দাবি জানান ওয়ার্ল্ড নিম অর্গানাইজেশনের ভাইসচেয়ারম্যান (পরিচালক এশিয়া) ও নিম অর্গানিক লিমিটিড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল হাকিম মন্ডল ওরফে ড. নিম হাকিম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঝালকাঠির বাদল চন্দ্র মন্ডল (৪৫) নামে এক ব্যাক্তি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে ড. নিম হাকিমের নামে ছয়লাখ টাকা প্রতারণার মিথ্যা অভিযোগ এনে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের সময় ড. নিম হাকিমের স্বাক্ষরিত একটি ভুয়া চুক্তিপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। ওই সময়ের ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ড. নিম হাকিমের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। মামলার কথিত ভুয়া বাদী কৌশলে সমন চাপা দিয়ে পরবর্তিতে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করাতে সক্ষম হন।
ঢাকার বাসিন্দা ড. নিম হাকিম সংবাদ সম্মলনে জানান, ঢাকার কাফরুল থানার মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরওয়ানার খবর পেয়ে তিনি গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন লাভ করেন। আদালত থেকে মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ এবং স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন, ঝালকাঠির নবগ্রাম এলাকার ব্রজেন্দ্র নাথ মন্ডলের ছেলে বাদল চন্দ্র মন্ডল তাঁর বিরুদ্ধে এ মিথ্যা মামলা দায়ের করছেন। পরবর্তীতে নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জানতে পারেন, নবগ্রাম গ্রামে বাদল চন্দ্র মন্ডল নামে কোন লোক ওই গ্রামে বসবাস করে না। খোজ খবর নিয়ে ড. হাকিম জানতে পারেন ঝালকাঠি শহরের মহিলা কলেজ সড়কে বাদল চন্দ্র মন্ডল নামে এক ব্যক্তি রয়েছেন। তিনিই মিথ্যা ঠিকানা ব্যবহার করে এ মামলা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. নিম হাকি অভিযোগ করেন, তার প্রতিষ্ঠিত নিম অর্গানিক কোম্পানীর পণ্য মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হয়। অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ায় এসব পণ্য নকল করে বিভিন্ন দেশে বিক্রি করে আসছিল ঢাকার মগবাজার এলাকার ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান এবং ঢাকায় অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিক রাসেন্দ্রা সিং ভবানী ঠাকুর। তিনি এই দুই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করলে সিআইডি পুলিশ তদন্ত করে ওই দুই ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ মামলায় মাহবুবুর রহমান এবং রাসেন্দ্রা সিং ভবানী কিছুদিন হাজতবাস করে জামিনে মুক্তি পেয়ে তাদের ঢাকার আইনজীবীর আত্মীয়র মাধ্যমে ঝালকাঠিতে ভুয়া বাদী বানিয়ে ছয়লাখ টাকা আত্মসাতের মিথ্যা মামলা দায়ের করান।
ড. হাকিম বলেন, ১০০ ভাগ মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না, তবে হয়রানী করা যায়। কথিত মামলায় যেদিন তাকে ঝালকাঠি এসে বাদল মন্ডলের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নেওয়ার তারিখ দেখানো হয়েছে, সেদিন তিনি ইন্দোনেশিয়ায় ছিলেন। আর মামলার হাজিরা দেওয়া ছাড়া তিনি কোনদিন ঝালকাঠি আসেননি। বিদেশ থাকার প্রমানসহ আদালতে ফৌজদারী কার্য্যবিধির ২৪১ (ক) ধারা অনুযায়ী মামলার অভিযোগ থেকে অব্যহতির প্রার্থনা করলে ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ১ম আদালতের বিচারক এ.এইচ.এম ইমরানুর রহমান ডা. নিম হাকিমকে মামলার দায় থেকে অব্যহতি দেন।
ড. নিম হাকিমের দাবি, আদালতে মামলা দায়েরের সময় যদি বাদীর জাতীয়পরিচয় বা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি গ্রহণ করা হতো তাহলে তিনি হয়রানীর শিকার হতে না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি জানান, যেহেতু সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম শুরু করেছে তাই প্রতিটি আদালতে মামলা দায়েরর সময় জাতীয়পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধনের ব্যবহার করা হলে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলায় সাধারণ জনগনের হয়রানী বন্ধ হতো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংবাদ সম্মেলন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ