Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উল্টো পথে হাঁটছে ছাত্রদল

টাকায় মিলছে ঢাকার পদ : চট্টগ্রামে ৫১ বছরে সাধারণ সম্পাদক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েও তরুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি পদ বাণিজ্যের অভিযোগ একাধিক টিমের বিরুদ্ধে

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম | আপডেট : ৮:১৭ পিএম, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০

টাকার বিনিময়ে ছাত্রদলের পদায়নের সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল রাজীব-আকরাম কমিটির বিরুদ্ধে। যে কারণে ৭৩৬ সদস্যের টাইটানিক কমিটির (নেতাকর্মীদের দেয়া নাম) নেতারা একে অপরকেই চিনতেন না। সেই ধারা থেকে বিএনপির ভ্যানগার্ডখ্যাত ছাত্র সংগঠনটিকে বের করে আনতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নির্দিষ্ট বয়সসীমা, অবিবাহিত শর্তজুড়ে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বের করেন তিনি। একারণে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা, আন্দোলন, মামলার মুখোমুখীও হতে হয়। এসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তার নির্দেশেই ছাত্রদলকে তৃণমূল থেকে ঠেলে সাজাতে সাংগঠনিক টিম তৈরি করে দেয়া। এসব টিম উপজেলা, পৌর ও কলেজ কমিটি গঠন শুরু করেন। কিন্তু কমিটি গঠনের শুরু থেকেই আর্থিক লেনদেন, অনিয়ম, পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ আসতে থাকে একের পর এক টিমের বিরুদ্ধে। দু’একটি টিমের আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাঠানো হয় তারেক রহমানের কাছেও।

এর মধ্যে কেবল বরিশাল টিমের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল জেলার সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুর পদ স্থগিত করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে কুমিল্লা টিমের প্রধান মোক্তাদির হোসেন তরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে ফরিদপুর টিমে বদলি করা হয়। কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অন্য টিমগুলোও জড়িয়ে পড়েছে এই অনিয়মে। এর মধ্যে সবচেয়ে আর্থিক অনিয়মে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম ‘ক’ এর প্রধান হাফিজুর রহমান হাফিজের বিরুদ্ধে। তিনি ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে পদ দিচ্ছেন বলে ঢাকা মহনগরের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে একথা। তার সাথে একজন সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পছন্দের লোক হলেই পদে বসানো। মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধেও ক্যাশিয়ার দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিম কমিটি গঠনে চমক দেখিয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ৫১ বছর বয়সী বেলায়েত হোসেন বুলুকে। ২৭২ সদস্যের এই কমিটিতে ১৮০ জন অছাত্র ও ৮০ জন বিবাহিত। দেশের বাহিরে ১২ জন। স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেনি ২৫ জন।

টাকায় মিলছে ঢাকার পদ : আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য ঢাকার সংগঠনকে সবসময় শক্তিশালী চায় যেকোনো সংগঠন। এজন্য এই টিমে দায়িত্ব দেয়া হয় পরিচ্ছন্ন ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত হাফিজুর রহমান হাফিজকে। অথচ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও পূর্বের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ওঠে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ। টিম প্রধান হাফিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জাকির ও সাধারণ সম্পাদক গাফ্ফার টাকার বিনিময়ে নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের পদে বসিয়েছেন বলে ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক থানা ও কলেজের ছাত্রনেতা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণে ৩৯৩ সদস্যের কমিটি দেয়া হয়েছে, যেখানে ৬০ জন সহ-সভাপতি। অভিযোগ রয়েছে- অন্তত: ৪০ জনেরই এটি প্রথম পদ। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতি, কারা নির্যাতিত হয়ে পদ দেয়া হয়েছে নিচের দিকে। তাদের কয়েকজন হচ্ছেন- গেন্ডারিয়ার সাবেক সভাপতি মুন্না, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম, সূত্রাপুর থানার সাবেক সদস্য সচিব আসাদ রুবেল। কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে ৯২ জনকে। এখানেও প্রথম সারিতে যাদের পদ দেয়া হয়েছে তাদেরকে দক্ষিণের সক্রিয় নেতাকর্মীরাই চেনন না। হামলা-মামলার শিকার, কারা নির্যাতিত হয়ে অনেকেই অবমূল্যায়িত হয়েছেন।

একইভাবে পদ দেয়া হয়েছে ৭৩ জন সহ-সাধারণ সম্পাদক, ৮৫ জন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের বেলায়। ৫৯ জন সম্পাদক সহ-সম্পাদকের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজনকে দক্ষিণের নেতাকর্মীরা চেনেন। ২০০০ সাল এসএসসি এরকম নেতা-কর্মীদের দিয়ে কমিটি করার কথা থাকলেও কমিটিতে ঠাঁই মিলেছে ২০০০ এর আগে এসএসসি দেয়া অনেকের। এসব কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটিতে জায়গা পাওয়া অনেক নেতাও। রাজনীতি না করেও কিভাবে তারা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসলেন তা নিয়ে বিস্মিত মহানগর দক্ষিণের বঞ্চিত ও দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করা নেতাকর্মীরা। কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নাহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর (দ.) পদ-পদবী পাওয়া অনেক নেতাদের চিনি না।

দফতর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সানি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, জীবনে কোনদিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের পাশে না থেকেও যারা দৈববলে সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক হয়েছেন। আবার যুবদলে পদ আছে এমন লোকেরও ঠাই মিলেছে কমিটিতে।
আরকে কলেজে ১৮ জনের কমিটি দিয়েছে, যেখানে ১৪ জন অচেনা মুখ, একজন বিদেশে বসেই পদ পেয়েছেন। অথচ ওই কলেজের বিদায়ী সভাপতি টিম প্রধানকে জানান, যাদেরকে কমিটিতে রাখা হচ্ছে তারা ছাত্রদলের কর্মী নয়। হাফিজ কথা না শুনলে আরকে কলেজের সভাপতি আশরাফুল কবীর মিন্টু ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে টিমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসে এবং কমিটি বাতিলের দাবি জানায়।

আর.কে চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক সভাপতি আশরাফুল করিম মিন্টু বলেন, সারা বাংলাদেশে ছাত্রদলকে গোছানোর জন্য যে টিম করা হয়েছে তারা আর.কে চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের কমিটি করার সময় নিয়মের তোয়াক্কা না করে টাকা পয়সা লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি দেন। যা আমি প্রতিবাদ করি এবং কেন্দ্রীয় সংসদ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই। তার পরিপেক্ষিতে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের কমিটিতে এবং আমার কলেজে ছাত্রদল থেকে কারোই নাম রাখেনি।

সরকারি মাদরাসা-ই-আলীয়া ছাত্রদলের পক্ষ থেকেও একই ধরণের লিখিত অভিযোগ করা হয়। আলিয়া মাদরাসা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ঢাকা টিম প্রধান হাফিজুর রহমান হাফিজ অর্থের বিনিময়ে পদের সিনিয়রিটি লঙ্ঘন করে নিষ্ক্রিয় ও অছাত্রদের দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি প্রস্তাব করেছে। মহানগর পূর্ব কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ক্ষেত্রে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন নতুন ছাত্র নেতাকে পদায়নের অভিযোগ ঢাকা টিমের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি ঢাকা কলেজ, বাংলা, তেজগাঁও, তিতুমীর, কবি নজরুল, নিউ মডেল, আবু যর গিফারী কলেজ, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীর নগর ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি জমা দিয়েছে ঢাকা টিম। এসব কমিটিতেও যোগ্যদের বাদ দিয়ে পকেট কমিটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন এসব শাখার নেতারা।

দক্ষিণ ও পূর্বের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, হাফিজুর রহমান হাফিজ ক্যাশিয়ার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন দুইজনকে। আর মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির ও সাধারণ সম্পাদক গাফ্ফার ক্যাশিয়ার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন আরো দুইজনকে।

জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান হাফিজ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা বঞ্চিত হয়েছে এবং মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতিসহ আরও দু’তিনজন বহিষ্কৃত নেতা এসব অভিযোগ তুলছে। তিনি বলেন, আমরা যে কমিটি দিয়েছে তা হুবহু প্রকাশিত হয়নি, পরিবর্তিত হয়েছে, আকার বেড়েছে। আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, এর ন্যূনতম তথ্য-প্রমাণ নেই। কেউ যদি এক কাপ চা খাইয়ে থাকে তাহলে পদত্যাগ করব।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের চমক : কমিটি গঠন শুরু হওয়ার পর থেকেই চমক দেখাচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিম। এই টিমের প্রধান কেএসএম মুসাব্বির সাফি। তবে অভিযোগ রয়েছে চট্টগ্রাম টিম চলে সুপার ফাইভের এক নেতার নির্দেশনায়। এই টিম প্রধানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে প্রথম দিকে বিভিন্ন থান কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিএনপির প্রভাবশালী নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলালের লোকজন দিয়ে কমিটি করার অভিযোগ ওঠে। তাদের কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন থানা, উপজেলা, কলেজ ইউনিটে। তবে সেটিকে এবার ছাড়িয়ে গেছে মহানগর কমিটি করার ক্ষেত্রে।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ৫১ বছর বয়সী বেলায়েত হোসেন বুলু। কমিটির ২৭২ সদস্যের মধ্যে ১৮০জন অছাত্র আর ৮০ জন বিবাহিত। দেশের বাহিরে ১২ জন। স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেনি ২৫ জন আর ভূয়া সাটিফিকেট থাকার অভিযোগ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে। নগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি করা হয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় মল্লিককে। পদপদবি নিয়ে বাণিজ্যের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ ত্যাগী ও মাঠের নেতাকর্মীদের। তাই মামলা-হামলা ও ১০ বছর ধরে মাঠে থাকা নেতাকর্মীরা কমিটিতে স্থান পাননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পদবঞ্চিতরা মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেন। তারা বলছেন, মহানগর বিএনপির এক নেতার ইঙ্গিতে একপক্ষের তালিকা অনুযায়ী বিতর্কিত এই কমিটি দেওয়ার পেছনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক নেতা। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে কেন্দ্রকে দিয়ে কমিটিটি পাস করিয়েছেন।

যদিও নেতাদের দাবি, ত্যাগীদের মূল্যায়ন করতে ১০ দিনের জন্য কমিটিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান ও মোহাম্মদ হোসেন সিআরবিতে চাকরি করছেন বলে জানা গেছে। সম্পর্কে তারা সহোদর। প্রচার সম্পাদক কামরুল হাসান আকাশ ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়িত। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের তিন পিয়নও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। ইয়াবা নিয়ে কুমিল্লায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার শফিকুর রহমানও রয়েছেন নতুন এ কমিটিতে।

গাজী মো.সিরাজউল্লাহকে সভাপতি এবং বেলায়েত হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর ছাত্রদলের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২১ জুলাই। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান যুগ্ম সম্পাদক জালাল উদ্দিন সোহেল। আর গাজী মো. সিরাজ নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, বেলায়েত হোসেন নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম রাশেদ খান নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হয়েছেন। অর্থাৎ প্রথমে নেতৃত্বে পাওয়া কমিটির সহসভাপতি জসিম উদ্দিন ছাড়া বাকিরা বিএনপি, যুবদল কিংবা স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্বে। আবার তাদের দিয়ে চলছে নগর ছাত্রদলেরও কার্যক্রম। অছাত্রের সংখ্যা কমপক্ষে ১৮০ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসক, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ঠিকাদার, ওষুধ ও কাপড়ের ব্যবসায়ী, ওষুধ কোম্পানির এমআর, পেশাদার সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ীও রয়েছেন। এসএসসি পাস করেননি এমন নেতা রয়েছেন সাতজন। গরমিলও আছে বেশ- কমিটিতে সত্যজিত বড়–য়া রূমুকে করা হয়েছে সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। আবার সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদেও রয়েছে তার নাম।

নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ বলেন, ‘২০১৩ সালে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গ হয়নি। তখন বিপুলসংখ্যক কর্মী মাঠে ছিলেন। মূলত তাদের মূল্যায়ন করতেই ১০ দিনের জন্য কমিটিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা শাখার দেয়া কমিটি পাল্টে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের বিরুদ্ধে।

ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, আমাকে চট্টগ্রাম মহানগরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেখানে আংশিক কমিটি ছিল তারা যে তালিকা দিয়েছে খোঁজখবর না নিয়ে সেটিই ঘোষণা করা হয়েছে। এজন্য অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠনে টিম প্রধান মুসাব্বির সাফির বিরুদ্ধে অর্থিক লেনদেনের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ছাত্রদলের নেতারাই। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মুসাব্বির সাফিকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
প্রমাণ থাকলেও শাস্তি হয়নি কুমিল্লা টিম প্রধানের : কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগীয় টিমের প্রধান মোক্তাদির হোসেন তরুর বিরুদ্ধে পদ বিক্রির জন্য আর্থিক লেনদের অভিযোগ তুলেন স্থানীয় এক সহ-সভাপতি। লেনদেনের তথ্য-প্রমাণও পাঠান তারেক রহমানের কাছে। এরপর তাকে সরিয়ে দেয়া হয় ফরিদপুর টিমে।

একই কারণে টিম থেকে বাদ দেয়া হয়েছে খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককেও। বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুর বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের কারণে পদ স্থগিত করা হয়েছে। একইভাবে ঢাকা বিভাগীয় টিম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় টিমের বিরুদ্ধেও অর্থের বিনিময়ে পদায়ন, ত্যাগী, যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে।

জানতে চাইলে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, কোনো বিভাগীয় টিমের বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

Show all comments
  • মমতাজ আহমেদ ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৫০ এএম says : 0
    এই প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও এগুলো করছে তারা ?
    Total Reply(0) Reply
  • Helal Khandaker ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০২ এএম says : 0
    ঘটনা সত্য
    Total Reply(0) Reply
  • নিয়ামুল ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৪ এএম says : 0
    সুন্দরভাবে বাস্তবচিত্র তুলে ধরায় দৈনিক ইনকিলাব ও রিপোর্টার ফারুক হোসাইন সাহেবকে ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Mehebub Ajmani ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৬ এএম says : 0
    চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিম কমিটি গঠনে চমক দেখিয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ৫১ বছর বয়সী বেলায়েত হোসেন বুলুকে। ২৭২ সদস্যের এই কমিটিতে ১৮০ জন অছাত্র ও ৮০ জন বিবাহিত। দেশের বাহিরে ১২ জন। স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেনি ২৫ জন।
    Total Reply(0) Reply
  • Moktar ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৬ এএম says : 0
    এসব কারণে এরা পিছিয়ে
    Total Reply(0) Reply
  • মেঘদূত পারভেজ ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৭ এএম says : 0
    চিটাগাংয়ের ঐ চাচ্চু দেশের অস্থির একটা অবস্থায় বেশ বিনোদন দিয়েছে কিন্তু... তাই ছাত্রদলকে ধন্যবাদ... পরের বিনোদনটা যেন এর চেয়েও ভালো হয়... অগ্রিম শুভেচ্ছা...
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুল্লাহ মার্শাল নাঈম ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৮ এএম says : 0
    এরা ক্ষমতায় আসার আগেই সংসদ বিক্রি করে খেয়ে পেলতে চায়। ২ কোটি টাকা নমিনেশন বিক্রি করে খায় ছাত্র দল আর কি করবে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mizanur Rahaman ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৮ এএম says : 0
    খমতায় নেই খাবে কি? দলের পদ বিক্রি করে খায়
    Total Reply(0) Reply
  • Romjan Ali ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৯ এএম says : 0
    বিএনপি আওয়ামিলীগ পদ ব্যবসা করে এবং নির্বাচনের সময় নমিনেশনের সাঙ্গা ব্যবসা করছে বিএনপি
    Total Reply(0) Reply
  • M.M.KHAN ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:৩১ এএম says : 0
    ওরা মানুষ না, ওরা বি এন পি
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ দুলাল মিয়া ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:১৯ এএম says : 0
    বহু দেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বহু নেতারা দশ বসর বিশ বসর কারাবাসে ছিল এর পরে জনগণ সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের নেতাকে মুক্তি করেছে আমি মনে করি তারেক রহমান ভুল সিদ্ধান্তের কারনে বাহির রাষ্ট্রে পড়ে আছে ।কথায় বলে রাজা না থাকলে রাজ্য অন্ধকার। ছাত্র দল অথবা নিজের বাবার আদর্শ বাস্তবায়নের জন্যে তাকে দেশে থাকতে হবে।ভয় করলে লাভ হবে না তার কেন সমস্যা হলে জনগণ তার বেবসতা করবে।ঐ খানে বসে কিছু করা সম্ভব হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Habibur Rahman ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৫ পিএম says : 0
    গুরে পিরে বারবার কেন্দ্র,মহানগর কিংবা জেলা... আঙ্গালি,কাঙ্গালি,চিটিং, বাটপার,ব্যক্তিত্বহীন লোকের কাছেই নেত্রিত্বের খেলা...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ