Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হলে-

সরদার সিরাজ | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

দেশের ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাচ্ছে না। জাতীয় ও স্থানীয় পরিষদসহ সংসদের উপ-নির্বাচনে এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। নীরবে-নিভৃতে নির্বাচন হচ্ছে, নামকাওয়াস্তে। নির্বাচনের দিকে মানুষের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। গত ১২ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ ও ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংসদের দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটের চিত্রে ভিন্নতা দেখা যায়নি। নির্বাচনে ভোট কাস্ট হয়েছে অতি কম। তাই একজন নির্বাচন কমিশনার বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘এ ভোটে মানুষের অংশগ্রহণ সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের চেয়েও কম।’ সিরাজগঞ্জের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৪৬৮। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? এ দেশের বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপি ও আ’লীগের কোন প্রার্থী যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পর একদিনও প্রচার-প্রচারণা না চালান এবং ভোট পাওয়ার জন্য কোনো চেষ্টা না করেন, তবুও শুধুমাত্র মার্কা দেখে ভোট দেওয়ার মতো অনেক দলপাগল লোক আছে প্রতিটি কেন্দ্রেই। সা¤প্রতিককালে ভোট কেন্দ্রে ভোটার না যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে দায়ী করছে। নির্বাচন কমিশনও বলছে, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের নয়। তবুও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা নেয়ার আছে।’ তার এই মন্তব্য তুমুলভাবে সমালোচিত হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ‘এটা বছরের সেরা কৌতুক!’

ভোট কেন্দ্রে ভোটার না যাওয়ার কারণ হিসাবে নানাজন নানা মন্তব্য করছেন। তবে, ২-৩টি মন্তব্যই প্রধান। সেগুলো হচ্ছে, রাজনৈতিক দলের প্রতি মানুষের আস্থা নেই, নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই ও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে মানুষের আস্থা নেই। এ অবস্থা দেশের রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত। গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। কিন্তু ওই তিনটি অভিমতের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে: রাজনৈতিক দলের প্রতি মানুষের আস্থা নেই মন্তব্যটি সঠিক নয়। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলো মিটিং, মিছিল ডাকলে তাতে অনেক লোক হচ্ছে। বিশেষ করে বড় কয়েকটি রাজনৈতিক দলের। উপরন্তু বিরোধী দলের মিছিল-মিটিং করার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা না থাকলে মানুষের সমাগম হবে ব্যাপক। সরকারি দল আ’লীগের মিটিং-মিছিলে অনেক লোক হচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলের প্রতি মানুষের আস্থা নেই মন্তব্য সঠিক নয়। তবে, নির্বাচন কমিশন ও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই এই মন্তব্য শতভাগ সঠিক। সাম্প্রতিককালের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, নির্বাচনকালীন সময়ে বিরোধী দলের প্রার্থীর মিছিল-মিটিংয়ে বাধা ও হামলা হচ্ছে অনেক। মামলাও হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনের আগের রাতে বিরোধী দলের এজেন্টদের নানা হুমকি-ধমকি দেওয়া ছাড়াও ভোটের দিন কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি বিরোধী দলের চিহ্নিত সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে যেতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। এসব মোকাবেলা করে কেউ কেন্দ্রে ঢুকলেও তাকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এত কিছুর পরও বিরোধী দলের যারা ভোট দিতে কেন্দ্রের ভেতরে যাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ভোট দিতে পারছে না। কে বা কারা সে ভোট দিয়ে দিচ্ছে আগেই। উপরন্তু সরকারি প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্র দখল করে ইচ্ছামত ভোট দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এমনকি দিনের ভোট রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগও প্রবল। ইভিএমের ভোটেও জালিয়াতি হচ্ছে। যেমন, কেউ ভোট দিতে গেলে সরকারি দলের এজেন্টরা প্রসেস দেখানোর নামে সরকারি দলের প্রার্থীর মার্কায় টিপ দেওয়াচ্ছে বলে অনেকের অভিমত। আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অর্ধেকের বেশি আসনে সরকারি দলের বিজয়ের রেকর্ডও রয়েছে। অবশ্য নির্বাচনকালে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে দলীয় নমিনেশন পাওয়া নিয়ে। তাও শুধুমাত্র সরকারি দলে। কারণ, সরকারি দলের নমিনেশন পাওয়া মানেই বিজয় নিশ্চিত। এসব অপতৎপরতা ঠেকাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। এমনকি ঠেকানার চেষ্টাও করেনি। কারণ, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাই দায়িত্বের চেয়ে দলীয় আনুগত্যের দিকেই কমিশনের মনোনিবেশ বেশি বলে জনমনে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয়ত: নির্বাচন কমিশনের পর্যাপ্ত নিজস্ব লোক নেই। তাই প্রশাসনের উপর নির্ভর করে নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে দলীয়করণ হয়েছে। সে কারণে এবং চাকরি হারানোর বা বদলী হওয়ার ভয়ে প্রশাসনের লোকরা চোখ বুজে ভোটের সব অনিয়ম সহ্য করেন। ক্ষেত্র বিশেষে তারা নিজেরাই অনেক অনিয়ম করেন অতি উৎসাহে। এভাবে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন পদ্ধতির তথা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রতি দেশের বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা নেই বিন্দুমাত্র। মানুষ নির্বাচন বিমুখ হয়ে পড়েছে বলে বেশিরভাগ মানুষের মন্তব্য যুক্তিযুক্ত। আর এই পদ্ধতি ও নির্বাচনের ব্যবস্থা বহাল থাকলে সরকার পরিবর্তন হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। এসব নানা কারণে দেশের পলিটিক্যাল ইন্সটিটিউশন ধ্বংস হয়ে গেছে। যেটুকু রাজনীতি আছে, তা ব্যক্তি ও পরিবারকেন্দ্রিক এবং চরম প্রতিহিংসামূলক হয়ে পড়েছে। সরকার প্রশাসনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। প্রশাসনও সম্পূর্ণরূপে দলীয়করণ হওয়ায় সরকারি দলের ন্যায় আচরণ করছে। প্রশাসনের কিছু লোক দুর্নীতিতে মত্ত হয়েছেন। অবশ্য দুর্নীতিতে ব্যবসায়ীরাও পিছিয়ে নেই। বরং তারাই বেশি অগ্রগামী। এছাড়া, সরকারি দলের বেশিরভাগ নেতা-কর্মী মহালুটপাট ও দখলে নিমগ্ন হয়েছেন। এই দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারীদের অনেকেই বহু দেশের নাগরিক হয়েছেন, গড়েছেন বেগম পাড়া, পাচার করেছেন লাখ লাখ কোটি টাকা। জিএফআই’র তথ্য মতে, ২০০৪-২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ৫৫৮.৮০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এছাড়া, ২০১৫ সালে বাণিজ্য কারসাজির মাধ্যমে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। এর পর থেকে দেশটির টাকা পাচারের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সর্বোপরি দুর্নীতিবাজরা দেশ-বিদেশে পরিবার-পরিজন নিয়ে মহারাজার মতো জীবন যাপন করছেন। হাইকোর্ট বেগম পাড়া সাহেবদের পরিচয় জানতে রুল জারি করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আসল কথা হলো সদিচ্ছা। ক্ষমতাধর না হলে অর্থ পাচার করা যায় না। আর ক্ষমতাসীনরাই ক্ষমতাধর। তাই সদিচ্ছার অভাবে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তাই পাচার বন্ধ হচ্ছে না। রাষ্ট্র যদি চায় তাহলে সম্ভব।’সম্প্রতি দুর্নীতির বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর মামলা চালু হয়েছে আদালতে। এর সংশ্লষ্টিরা কীভাবে গরিব থেকে অতি ধনী হয়েছে তা মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। অপরদিকে, দেশে কিছু সুধীজন উচ্ছিষ্ঠভোগী হয়ে পড়েছেন। তাদের প্রধান কর্ম হচ্ছে, সারাক্ষণ বিরোধী দলের ব্যর্থতার কাহিনী প্রকাশ করা আর সরকারের পক্ষে কোরাস গাওয়া। কিন্তু তারা ভুল করেও বলেন না, নির্বাচন মোটেই গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ উপেক্ষিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় সৎ, যোগ্য ও মেধাবীরা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হচ্ছেন না। ফলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। তেমনি অবস্থা চলছে ছাত্র, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের ক্ষেত্রেও। সেখানে ২-৩ দশক যাবত সরকারি দলের দখলের রাজনীতি চলছে। সঠিক নেতৃত্ব সেখানে তৈরি হচ্ছে না। এভাবে দেশে নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্রও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে শহীদ ডা. মিলন ও শহীদ নুর হোসেনের আকাক্সক্ষা অধরাই থেকে যাচ্ছে। এই সুযোগে রাজনীতিতে মন্দ লোকরা প্রাধান্য বিস্তার করেছে।

দেশের মানুষকে নির্বাচনমুখী করা প্রয়োজন। সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজাতে হবে। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ এবং দক্ষ ও নির্ভীক লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন, শক্তিশালী ও স্বাবলম্বী করতে হবে জনবল ও অর্থে, যাতে সরকারের মুখাপেক্ষী হতে না হয়। তাহলেই মানুষ নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠবে। এছাড়া, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব হলেই মানুষ নির্বাচনমুখী হবে। নির্বাচনে অতীতের ঐতিহ্য ফিরে আসবে। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১-এর নির্বাচনের কথা উল্লেখ করা যায়। এসব নির্বাচন হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। নির্বাচন প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ হয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। ‘আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দেব’ এই গণআকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। তাই নির্বাচনের আগে-পরে কিছু সহিংসতা হলেও এবং পরাজিত দল নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তুললেও শেষ পর্যন্ত তা মেনে নিয়েছে। সেনা সমর্থিত সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের নির্বাচনও প্রায় অনুরূপভাবেই হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনী প্রকট সমস্যা শুরু হয়েছে ২০১৪ সাল থেকে। যখন দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন করা শুরু হয়েছে। আদালত কর্তৃক তত্ত¡াবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত পদ্ধতি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই পদ্ধতিটি চালু করা হয়েছিল ব্যাপক লাগাতর হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও এবং অনেক প্রাণের বিনিময়ে ১৯৯৬ সালে। আর এসব হয়েছিল আ’লীগ ও তার মিত্রদের এবং জামায়াতের দ্বারা। সে আন্দোলন ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধ্বংসাত্মক আন্দোলন’ বলে খ্যাত হয়েছে। অবশ্য, এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছিল। তাই বিএনপি এই পদ্ধতি চালু করতে বাধ্য হয়েছিল। আর সেই পদ্ধতিটিই বাতিল করেছে আ’লীগ ক্ষমতায় এসে। আর এটা বাতিল হওয়ার পর থেকেই ভোটারবিহীন নির্বাচন হওয়া শুরু হয়েছে, যা এখনও অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি গত ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত এক দৈনিকের নিবন্ধে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে দেখছি ভোটারবহুল বাংলাদেশে কোনও কোনও ভোটকেন্দ্র নির্জনতায় খাঁ খাঁ করে। কোথাও কোথাও সাকল্যে ভোট পড়ে ৫-৭ শতাংশ। তথা সর্বজনীন থেকে স্বল্পজনীন, ক্ষেত্র বিশেষে ভোটারহীনে পরিণত হয়েছে।’

মানুষ নির্বাচন বিমুখ হওয়ার কারণে এবং ভোটারবিহীন নির্বাচনের কারণে প্রকৃত গণপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছে না। অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা নির্বাচিত হচ্ছে, যার মধ্যে ব্যবসায়ীরা বেশি। এছাড়া, নতুন কিছু বাটপার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দেশের সব কর্মকান্ডে। এমনকি জাতীয় সংসদেও। যেমন: বেশিরভাগ সদস্যই সংসদে অনুপস্থিত থাকে। সংসদীয় বিরোধী দলের কর্মও তথৈবচ। উপরন্তু তাদের সদস্যদের বক্তব্য সরকারি না বিরোধী তা বোঝার উপায় নেই। তারা একসাথেই নির্বাচন করেছে আসন ভাগাভাগি করে। অনেকেই বিরোধী দলের কর্মকান্ডকে ‘ভন্ডামি’, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দালাল’ ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করেন।

এই অবস্থায় দেশের ভোটার বিহীন নির্বাচনের পরিবর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা আবশ্যক। কিন্তু নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা ছাড়া সেভাবে নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। মানুষও নির্বাচনমুখী হবে না। তাই নিরপেক্ষ তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি পুনরায় চালু করতে হবে। অবশ্য গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল। তাই সেটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন করা দরকার এবং তা জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে। সে লক্ষ্যে সব দল মিলে মিশে আলোচনার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে ফরমুলা বের করা আবশ্যক। সে সাথে নির্বাচন কমিশনও পুনর্গঠন করে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় ও যোগ্য করা দরকার। নতুবা শত চেষ্টা করেও মানুষকে নির্বাচন ও ভোটকেন্দ্রমুখী করা সম্ভব হবে না। গণতন্ত্র বিকশিত ও শক্তিশালী হবে না। জবাবদিহির অভাবে নৈরাজ্যও বন্ধ হবে না। গণতন্ত্র নিপাত যাওয়ার আশঙ্কা দূর হবে না।
লেখক:সাংবাদিক ও কলামিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জনগণ


আরও
আরও পড়ুন