বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২১ সালের মার্চে। এখনো তফসিল ঘোষনা হয়নি। তবে ইতিমধ্যেই রাউজান পৌরসভার ৪২ বর্গ কিঃমিঃ এলাকায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সময় যত ঘণীয়ে আসছে পৌরবাসীদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ বেরে গেছে। এমন মত দিয়েছেন পৌর নাগরিকরা। সম্ভাব্য প্রার্থী একের অধিক হলেও মাঠে ময়দানে আগাম প্রচারে ব্যস্থ সময় পার করছেন বর্তমান পৌর প্যানেল মেয়র ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি করোনা যোদ্ধা জমির উদ্দিন পারভেজ। তাঁর প্রচার প্রচারনা, মতবিনিময় সহ প্রতিদিনের কর্মসূচীতে সরব হয়ে উঠেছে পৌর এলাকা। তিনি ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় কর্মী সমাবেশ শুরু করেছেন গত দুই মাস ধরে। তবে সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। রাউজান পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আ’লীগের ৪ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এদের মধ্য বর্তমান মেয়ের ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা দেবাশীষ পালিত, বর্তমান পৌর প্যানেল মেয়র ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা, সাবেক কেন্দ্রিয় যুবলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য আবু ছালেহ মুহাম্মদ ইয়াছিন (প্রকাশ ইয়াছিন মাহমুদ)। দলীয় মনোনয়ন পেতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের গোপনে চলছে তোড়জোড়।
সুত্র জানান, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মাষ্টার আবু জাফর চৌধুরী, সাবেক বিএনপি মনোনীত নির্বাচিত মেয়র প্রয়াত কাজী আবদুল্লাহ আল হাসানের ছেলে কাজী আনিসুজ্জামান সোহেল ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর রেজাউর রহিম আযম দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা তদবীর চালাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় মহাসচীব সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর ঘনিষ্ট সাবেক সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আকবর দলীয় মনোনয়নের জন্য চেষ্টা তদবীর করছেন বলে জাতিয় পাটির একজন নেতা জানিয়েছেন। তবে জমির উদ্দিন পারভেজ ছাড়া কোন প্রার্থীর তৎপরতা এখনো দেখা যাচ্ছে না। তবে কিছু কিছু ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও মনোনয়ন পেতে দোড় ঝাঁপ শুরু করেছেন।
বর্তমান মেয়র দেবাশীষ পালিত ইনকিলাবকে বলেন, ‘আগামী মার্চ মাসে আমাদের মেয়াদ শেষ। এর আগে তফসিল ঘোষনা হবে, নির্বাচনের পক্রিয়া শুরু হবে, তারপর চিন্তা করে দেখব। তিনি জানান, দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো। যদি দলীয় মনোনয়ন না-পান তখন আপনার ভুমিকা কি হবে এমন প্রশ্নের জওয়াবে দেবাশীষ পালিত বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব। তিনি বলেন, আমার কাছে ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়। তাই দলের সিদ্ধান্ত যেটি হবে সেটি মেনে নেব’।
বর্তমান পৌর প্যানেল মেয়র ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ ইনকিলাবকে বলেন, ‘মানুষের জন্য কিছু করতে পাড়াটা বড় বিষয়। আজ যারা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তদবির করছেন তাঁরা করোনার সময় কোন মানুষের পাশে ত্রাণ কিংবা সাহায্য নিয়ে গিয়েছেন কী? করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন সৎকারে তাদের কোন ভুমিকা ছিল কী? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাকালীন গত মার্চ মাস থেকে এসব কাজ করে করে এখনো মানুষের পাশে আছি। করোনাকালীন সেবা করতে গিয়ে অনেক সময় উপবাস থেকেছি। যা করেছি জনগনের জন্য করেছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) ভাল জানেন কে কাজ করেছে, না করেছে। ৩০বছর রাজনীতি করেছি জনগনের স্বার্থে, মানবতার স্বার্থে। তিনি বলেন, আমার পক্ষে বলতে হবেনা, যেটি সত্যি সেটি আপনারা তুলে ধরবেন। রাজনীতি করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছি, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি এরপরও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতিতে পিচপা হয়নি। শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে মানুষকে ভালবেসেছি। রাউজানের সাংসদ এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির অনুপ্রেরনায় পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা ও মনোনয়ন বোর্ডের সহযোগীতা কামনা করছি’।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা ইনকিলাবকে বলেন, ‘আসন্ন রাউজান পৌরসভা নির্বাচনে আমি একজন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বলেন, আমার বাবা রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মরহুম শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবী আওয়ামী লীগ’র ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ’র জন্য যেমন সম্মানিত হয়েছেন, তেমনি আদর্শিক রাজনীতির কারণে দলকেও সম্মানিত করেছেন। এছাড়া আমি নিজেই ছাত্র রাজনীতি থেকে দলের একজন পরীক্ষিত কর্মী। গত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও জেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আমাকে পরবর্তী নির্বাচনে মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশব্যাপী সৎ ও সঠিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করছেন তার অংশ হিসেবে তিনি আমাকে মনোনীত করবেন’।
সাবেক কেন্দ্রিয় যুবলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য ইয়াছিন মাহমুদ ইনকিলাবকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে উন্নয়নের ধারা, তাঁর উন্নয়নে সম্পৃক্ত হয়ে আমি কাজ করতে চাই। তিনি বলেন, নৌকা প্রতিক পেলে পৌর মেয়র পদে নির্বাচন অবশ্যই করব’।
পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মাষ্টার আবু জাফর চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য শতভাগ আশাবাদী। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলেছি তাঁরা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন’। বিএনপির অপর দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী সোহেল ও আযম তাঁরাও দলীয় মনোনয়ন পেতে তদবীর চালাচ্ছেন। তবে এগিয়ে আছেন সিনিয়র হিসাবে মাষ্টার আবু জাফর চৌধুরী।
জাতীয় পাটির মনোনয়ন প্রত্যাশি মেজবাহ উদ্দিন আকবর ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়নে শত ভাগ আশাবাদী। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর থাকলে নির্বাচন করব। তিনি বলেন, জনগন আমার পক্ষে দীর্ঘদিন থেকে। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের (মোমবাতী প্রতিক) প্রার্থী হিসাবে অধ্যক্ষ হাফেজ আবু জাফর সিদ্দিকী, হাফেজ মাওলানা জয়নাল আবেদীন জামাল দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা তদবির করছেন বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।