মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বলা হয়েছিল সম্পূর্ণ নিরাপদ। কিন্তু করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে এখন শুরু হয়েছে তোলপাড়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বছর ৪০-এর এক স্বেচ্ছাসেবক। ইতোমধ্যেই চেন্নাইয়ের ওই ব্যক্তি সেরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। ৫ কোটি টাকা জরিমানাও দাবি করেছেন তিনি।
ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কোভিশিল্ডের ট্রায়ালের অংশ নিয়ে। তার পরিবারের দাবি, ওই ব্যক্তির স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে আংশিকভাবে। চিকিৎসকদের বক্তব্য তার মস্তিষ্কে ক্ষতি হয়েছে। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলে এনসেফেলোপ্যাথি। এর অর্থ এমন কোন ক্ষতি, যা স্মৃতিশক্তি লুপ্ত করতে পারে।
রেকর্ড বলছে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নেয়ার আগে পর্যন্ত সুস্থ ছিলেন ওই ব্যক্তি। ক্ষতিপূরণ দাবি করে সেরামকে কাঠগড়ায় তুলেছে ওই স্বেচ্ছাসেবকের পরিবার। কারণ সেরাম জানিয়েছিল, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের যে ট্রায়াল চলছে, তা নিরাপদ। ভারতে সব ধরনের প্রোটোকল মেনে বিনা বাধায় ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে।
এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ডে তৈরি ভ্যাকসিনে কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছিল। এরপরেই বিতর্কের ঝড় ওঠে। দেশে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে আসরে নামে সেরাম। তারপরেই সেরামের এই বিবৃতি দেয়। সেরাম জানায়, ভ্যাকসিন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সব দিক বিবেচনা করেই তা তৈরি করা হচ্ছে।
তবে এ ঘটনা হিসেব পাল্টে দিয়েছে। ওই স্বেচ্ছাসেবক একটি বিশেষ ধরনের ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তার মস্তিষ্কের ক্ষতি কতটা হয়েছে জানতে একটি ইইজি বা ইলেকট্রো এনসেফেলোগ্রাম টেস্ট করা হয়। এতে জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তির মৌখিক ও চিন্তাশক্তির একাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পয়লা অক্টোবর তাঁকে ভ্যাকসিনটি দেয়া হয়। প্রথম ১০দিন কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। পরে ধীরে ধীরে মাথা ব্যাথা ও বমিভাব শুরু হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ মত তিনি সিটি স্ক্যান করান। ধীরে ধীরে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে থাকে। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। তাঁকে রামচন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
কোনও প্রশ্নের উত্তর দেয়া বা তাতে সাড়া দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরিবর্তন আসতে শুরু করে তার ব্যবহারেও। তার পরিবারের পক্ষ থেকে যে নোটিশ সেরামকে দেয়া হয়েছে, তা পাঠানো হয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার অফ ইন্ডিয়া, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন ট্রায়ালের চিফ ইনভেস্টিগেটর প্রফেসর অ্যান্ড্রু পোলার্ড, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির জেনার ইনস্টিটিউট অফ ল্যাবরেটরিসকে।
করোনা রুখতে বিশ্বজুড়ে যে ক’টি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে, তার মধ্যে এগিয়ে আছে কোভিশিল্ড। ওই ভ্যাকসিনের ১০০ কোটি ডোজ তৈরির জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সেরাম। ওই সংস্থাকে আইনি চিঠি পাঠিয়েছে ল ফার্ম রো অ্যান্ড রেড্ডি। চিঠিতে বলা হয়েছে, চেন্নাইয়ের যে ব্যক্তির দেহে পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছিল, তিনি মোটেই ভাল নেই। তাঁকে দীর্ঘসময় চিকিৎসাধীন থাকতে হবে।
অভিযোগকারীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আর রাজারাম বলেন, ‘আমরা যাঁদের নোটিশ পাঠিয়েছি, তারা কেউ এখনও জবাব দেননি। এ অবস্থায় আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা ছাড়া উপায় নেই। আমরা আইনি লড়াইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছি’।
শনিবারই পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্ল্যান্টে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভ্যাকসিন তৈরির কাজ কতদূর এগিয়েছে, তা নিয়ে খোঁজখবর নেন। সংস্থার প্রধান আদার পুনাওয়ালা এদিন মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য আর দু’সপ্তাহের মধ্যে আবেদন করবে সেরাম। সূত্র : দ্য ওয়াল, কোলকাতা২৪।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।