Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

অপরাধমুক্ত করা হবে উপকূলীয় এলাকা

চট্টগ্রামে ৩৪ নৌদস্যুর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

উপকূলীয় এলাকায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে অপরাধমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কোন নৌদস্যু বা বনদস্যুকে আস্তানা গড়তে দেওয়া হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৩৪ জন নৌদস্যুর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চকরিয়া উপক‚লে সক্রিয় ৩৪ জন নৌদস্যু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তারা দেশি-বিদেশি ৯০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই হাজার ৫৬ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ জমা দেন। নৌদস্যুরা অতীত কর্মকান্ডের জন্য ক্ষমা চেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একসময় উপক‚লের লোকজন এসব নৌদস্যুদের কাছে জিম্মি ছিলো। জীবন বাঁচাতে ধার করে হলেও দস্যুদের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করতে হতো। জেলেদের নিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। ২০১৬ সালের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত মাস্টার বাহিনী আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দস্যুদের আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন উপক‚লের ৩২৮ জন নৌদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। এখন আমাদের উপক‚লকে দস্যুমুক্ত বলছি না, তবে সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। দস্যুবাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আত্মসমর্পণ না করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মুখোমুখি হলে কি পরিস্থিতি হবে, তা আপনারাই জানেন। যে যেখানে আছে, তাদেরকে খুঁজে বের করা হবে। তাই কঠোর পরিণতির আগে আত্মসমর্পণ করে ফেলুন। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশে কোন চোর ডাকাত থাকতে পারে না। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তারা যেন সমাজের মূলধারায় ফিরে আসতে পারে সেজন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। গুজবের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু কুলাঙ্গার দেশবিরোধী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসা রটিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আপনারা কেউ গুজবে কান দিবেন না। যে কোন তথ্য যাচাইয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিন, আমরা আপনাদের পাশে আছি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান।

আত্মসমর্পণকারী হচ্ছেন- বাইশ্যা বাহিনীর আব্দুল হাকিম ওরফে বাইশ্যা ডাকাত (৫২), আহামদ উল্লাহ (৪২) ও আব্দুল গফুর ওরফে গফুর (৪৭)। ফুতুক বাহিনীর দিদারুল ইসলাম ওরফে পুতিক্যা (৩২), জসিম উদ্দিন (২৬) ও মিজানুর রহমান (২৩)। খলিল বাহিনীর আব্দুর রহিম (৬৪) ও মাহমুদ আলী ওরফে ভেট্টা। বাদল বাহিনীর ওবায়দুল্লাহ (৩৬), রমিজ বাহিনীর ইউনুছ (৫৬), দিদার বাহিনীর তৌহিদ ইসলাম (৩৪), বাদশা বাহিনীর নিজাম উদ্দিন ভান্ডারী, ইউনুস (৫১), কামাল উদ্দিন (৪৭), কাদের বাহিনীর আব্দু শুক্কুর (২৮)। জিয়া বাহিনীর সাহাদাত হোসেন (৪১), পারভেজ (৩৩), নাছির বাহিনীর নাছির (৫১), আমির হোসেন (৪৮), সাকের (৪০)। কালাবদা বাহিনীর সেলিম বাদশা (৩৪), আব্দুল গফুর ওরফে গফুর, আবু বক্কর সিদ্দিক (৩১), মামুন মিয়া (২৭)। অন্যান্য বাহিনীর আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাইশ্যা (২৯), বেলাল মিয়া (৩০), আব্দুল হাকিম ওরফে বাক্কু (৩৫), রশিদ মিয়া (৩৬), ইসমাইল (২৪), সাহাবুদ্দিন ওরফে টুন্নু (৩২), ফেরদৌস (৫২), রেজাউল করিম (৪০), ইউনুচ (৪২) ও মঞ্জুর আলম (৪২)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপকূল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ