Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গারো পাহাড়ে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে এসেছে বন্যহাতির দল, জনমনে আতঙ্ক

শেরপুর জেলা ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৫০ এএম

ভারতীয় সীমান্তবর্তী শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে এসেছে বন্যহাতির দল। এতে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আর হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পাহাড়িরা মশাল জ্বালিয়ে কাটাচ্ছে নির্ঘুম রাত।

গততিনদিন ধরে ১৫টি হাতির একটি দল লোকালয়ে নেমে আসে। আজ বুধবার বিকেল নাগাদ হাতির দলটি উপজেলার তাওয়াকুচা এলাকায় ‘সুফল’ প্রকল্প নামে বনবিভাগের একটি বাগানে অবস্থান করছে।

বন বিভাগ সূত্র ও পাহাড়িদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে ২০ থেকে ২৫টি হাতির একটি দল ভারত থেকে দলছুট হয়ে শেরপুরের গারো পাহাড়ে চলে আসে। পরে দলটি আর তাদের পুরোনো আবাসস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। বংশবৃদ্ধি হয়ে বর্তমানে হাতির সংখ্যা ৮০ টির মতো হয়েছে। হাতির পালটি খাবারের সন্ধানে গারো পাহাড়ের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে বেড়ায়। পাহাড়িরা কোনো ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারে না। ধান ও কাঁঠাল পাকার সময় হাতির আক্রমণ বেড়ে যায়। হাতির আক্রমণে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।

কাঠ-খড়ি সংগ্রহের পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য পাহাড়ের ঢালে প্রতিবছর পাহাড়িরা ধান চাষ করে থাকে। এই ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত পাহাড়িরা গ্রামে গ্রামে ২০-৩০ জনের দলে বিভক্ত হয়ে পাহারা বসায়। এ সময় পাহাড়িরা বাঁশের মাথায় কাপড় বেঁধে কেরোসিন দিয়ে মশাল জ্বালিয়ে রাখে। আর এভাবে নির্ঘুম রাত কাটায় তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা পনির হোসেন বলেন, হাতির দল দেখতে বিকেল থেকে এ এলাকার চারদিকে শত শত মানুষ অবস্থান করে। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কাংশা ইউনিয়ন পরিষেদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে তার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে প্রায় প্রতি রাতেই হানা দিচ্ছে বন্য হাতির দল। ক্ষেতের পাকা ধান খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। ফলে এলাকার কৃষকদের চোখে এখন ঘুম নেই। রাত কাটছে হাতি আতঙ্কে।

এ ব্যাপারে বনবিভাগের তাওয়াকুচা বিট কর্মকর্তা মো. মোখরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে গারো পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় বন্যহাতি এলাকায় নেমে এসেছে। এতে এলাকাগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হাতির পাল মানুষের বসতবাড়িতে হামলা না চালালেও ধান ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি করছে। তাওয়াকুচা বিটের ‘সুফল’ প্রকল্পের প্রায় ৭ হাজার চাপালিশ চারা নষ্ট করেছে বন্যহাতির দল।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে হাতির দলকে নিরাপদে পাহাড়ে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যহাতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ