পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লন্ডন-বাংলাদেশ-সিলেট সিলেট জুড়ে বিএনপি রাজনীতি। সেই রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান সিলেটিদের। সাধারণ কর্মী সমর্থকে ঠাসা সিলেট বিএনপির রাজনীতি কিন্তু সাংগঠনিক ভিত্তি এখনো নড়েবড়ে। আস্থাশীল নেতৃত্বের অভাবে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না তারা। অবিশ্বাস আর সন্দেহের দোলাচলে কর্মী বান্ধব এ সংগঠন এখন দিকভ্রান্ত। সেকারণে সংগঠনের বর্তমান, ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা কেবল দীর্ঘায়িতই হচ্ছে।
অনেক নেতাকর্মীর গলায় আফসোসের সুর সিংহের পালে বেড়ার নেতৃত্ব সেকারণেই আধমরা হয়ে পড়ছে সংগঠনের গতি প্রকৃতি। রাজনীতিক বিশ্লেষকদের ভাষায়, রাজনীতিক চরিত্রের চেয়ে ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগীরা এ দলের নেতৃত্বে। একই সাথে প্রতিপক্ষ রাজনীতির দলের নেতৃত্বের বিপরীতে ইমেজ ও ব্যক্তিত্বহীন নেতৃত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে কান্ডারী হিসেবে। তৃণমূলের শাসক দলের নেতৃত্ব যখন এলাকার প্রভাবশালী, গ্রহণযোগ্য ত্যাগী বয়স্ক কোন ব্যক্তি সেখানে বিএনপির নেতৃত্ব কেড়ে নিচ্ছে অধিকতর কম বয়েসী সদ্য পরিচিত কোন লোক। সেকারণে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে দলের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে কোন স্টাডি বিএনপি রাজনীতিতে রয়েছে কি নেই তার আলামত দেখতে পারছে না সাধারণ নেতাকর্মীরা।
এদিকে, সিলেটে বিএনপির ১৮টি সাংগঠনিক কমিটিকে আরো গতিশীল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে গতকাল রোববার একটি বৈঠক আহবান করেছিলো জেলা বিএনপি। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সিলেটের ১৩টি উপজেলা ও ৫ পৌরসভার আহবায়কদের। কিন্তু এ বৈঠক নিয়ে বিস্ময় জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ৯ সদসের্য। গণমাধ্যমে এক বার্তায় কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের ষড়যন্ত্রে এবং স্বেচ্ছাচারিতায় দল এখন ধ্বংসের মুখোমুখি।
ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তার এসব স্বেচ্ছাচারিতা, কমিটি গঠন সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রের যাবতীয় তথ্য জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিবেচনাধীন। সেখানে হঠাৎ করে সভা ডাকা দূরভীসন্ধিমূলক। উপজেলা আহবায়কবৃন্দকে এই সভায় ডেকে এনে তাদেরকে বিতর্কিত করার একটি অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা উপজেলা আহবায়কবৃন্দকে অনুরোধ করছি কেন্দ্রীয় কোন নির্দেশনা ছাড়া জেলা বিএনপির নাম সর্বস্ব এই আহবায়কের ডাকে সাড়া না দিতে। এর মধ্যে দিয়ে সংগঠনের কর্মকাÐ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও আহবায়ক কমিটির সদস্যরা। বিষয়টি নিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষ একটি বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, পক্ষপাতিত্বের অভিযুক্ত ছাড়াও ও সময়োপয়োগী নেতৃত্ব প্রদানে একেবারে অনুপযোগী বর্তমান আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার। দৃষ্টিভঙ্গিতে অদূরদর্শী, সময়ের রাজনীতিতে অচল হওয়ার এ আহবায়ক দিয়ে দলের কোন স্বার্থ রক্ষা হবে না। তার সাথে বৈঠক করেছি কিন্তু একগুয়েমীর কারণে সমাধান হয়নি। তার একলা চল নীতিতে দলীয় রাজনীতি দায়সারা গোছের চালাতে চান। তার ব্যাপারে কেন্দ্রকে অবহিত করা হয়েছে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অবশ্যই ব্যক্তির চেয়ে দলের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ মার্চ সিলেট জেলা বিএনপির আওতাধীন ১৮টি সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। একজনকে আহবায়ক ও ২০ জনকে সদস্য করে মোট ২১ সদস্যের প্রতিটি কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। কিন্তু গঠিত এসব কমিটিতে জেলা বিএনপির আহবায়ক তার নিজেদের লোক বেশি জায়গা করে দিয়েছেন এমন অভিযোগ আনে জেলার একটি অংশ।
পরবর্তীতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির বিবাদমান দুই গ্রæপের বিরোধ মেটাতে উপজেলা ও পৌর কমিটিতে আরো ৬ জন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সবমিলিয়ে এসব কমিটিতে স্থান হয় মোট ২৭ জন নেতার। কিন্তু দায়িত্ব পেয়েও বেশিরভাগ কমিটির নেতারা দলীয় কার্যক্রম শুরু করেননি। শুধু মাত্র দক্ষিণ সুরমা ও গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপি তাদের ইউনিয়ন কমিটি গঠন করেছে। আর সদর উপজেলা বিএনপির ইউনিয়ন কমিটি প্রায় চ‚ড়ান্ত বলে জানা গেছে। অপরদিকে কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা শাখা জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের উপস্থিতে সভা করলেও ইউনিয়ন কমিটি এখনো গঠন করতে পারেনি।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা ভিন্ন ভিন্ন মতের থাকায় কোন সভা করতে পারছে না। আর কোন কোন জায়গায় কমিটিতে আহবায়কের নিজের পছন্দের লোক কম থাকায় সভা ডাকতে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তিনিও।
এতে সিলেটের তৃণমূল বিএনপি সহসাই চাঙা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সভা আহবান করেছে জেলা বিএনপি। সভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নিস্ক্রিয়দের কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
গতকাল রোববার বিকেলে জেলা আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের ডাকে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিএনপির বৈঠক। আহবায়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ থাকার পরও এ বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে যেসব ইউনিটে এখনো সম্মেলন হয়নি, সেগুলো দ্রæত সম্পন্নের তাগিদ দেয়া হয়। আহবায়ক কমিটির প্রথম সদস্য আবুল কাহের শামীমের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে তৃণমুল ইউনিটিরে কার্যক্রম জোরদারের লক্ষে আহবায়ক কমিটির সদস্যের দিয়ে একটি মনিটরিং টিম গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল আহাদ খান জামাল বলেন, আহবায়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ ও সমন্বয়ীহনতা দূর করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে, অচিরেই সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্তি করেন তিনি। এছাড়া দলকে মাঠ পর্যায়ে আরো চাঙা করতে মনিটরিং টিমে দায়িত্বপ্রাপ্তরা চষে বেড়াবেন সিলেটের প্রাম থেকে গ্রামান্তরে। দলের মধ্যে সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করা হবে তাদের কাজ। বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন আহবায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুল গাফফার, মইনুল হক চৌধুরী, সামিয়া বেগম চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম ফারুক, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, মামনুর রশিদ মামুন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মাজহারুল ইসলাম ডালিম, আব্দুল আহাদ খান জামাল, আবুল কাশেম, শামীম আহমদ প্রমুখ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বশীলরা।
এদিকে, সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, এডভোকেট আশিক উদ্দিন আহমদ, আব্দুল মান্নান, এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, নাজিম লস্কর, আহমেদুর রহমান চৌধুরী মিলু, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মাহবুবুল হক চৌধুরী এক যুক্ত বিবৃতিতে জেলা বিএনপির আহবায়ক কর্তৃক জেলা বিএনপির নামে সভা ডাকার বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, উপজেলা আহবায়কবৃন্দকে অনুরোধ করছি কেন্দ্রীয় কোন নির্দেশনা ছাড়া জেলা বিএনপির নাম সর্বস্ব এই আহবায়কের ডাকে সাড়া না দিতে। আমরা আশা করি অচিরেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সিলেট জেলা বিএনপির এই অচল অবস্থা নিরসন হবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন যে আহবায়ক স¤প্রতি সিলেটের অত্যন্ত আলোচিত ইস্যু ধর্ষণ এবং রায়হান হত্যাসহ কোন ইস্যুতেই দলকে কাজে লাগাতে পারেনি। সেই আহবায়ককে দিয়ে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর কাউন্সিল অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ অসম্ভব। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ জেলা আহবায়কের এইসব বিভ্রান্তি মূলক কর্মকান্ডে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীর প্রতি আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।