বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলা ও হত্যা চেষ্টার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। দীর্ঘ ১৮ বছর পর বুধবার (০৪ নভেম্বর) মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য দিন ছিলো।
সাতক্ষীরা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাঠগড়ায় তালা-কলারোয়ার সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ মামলার অন্যান্য আসামীরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন, মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন। কিন্তু স্বাক্ষ্য গ্রহণে বাদ সাধেন আসামী পক্ষের আইনজীবীরা। মহামান্য উচ্চ আদালতে লিভ টু আপীল করা হয়েছে মর্মে একটি নথি আদালতে উপস্থাপন করেন আসামী পক্ষের আইনজীবীরা। একই সাথে মামলার বাদীর স্বাক্ষীর জেরা করতে অসম্মতি জানানো হয় আদালতের কাছে। এসময় রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট আব্দুল লতিফ বিরোধীতা করে স্বাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এবং আসামী পক্ষের আইনজীবীদের অপারগতার বিষয়টি নথিভুক্ত করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান। একপর্যায়ে বিচারক হুমায়ুন কবীর বিষয়টি নথিভুক্ত করেন। একই সাথে আগামী ১৭ নভেম্বর মামলার ধার্যদিন নির্ধারণ করে ওই দিন উচ্চ আদালতের আদেশের কপি জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন আসামীপক্ষের আইনজীবীদের।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলায় ৩০ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ২০১৭ সালে ৯ জন স্বাক্ষী তাদের স্বাক্ষ্য প্রদান করার পর আসামী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত মামলাটির বিচারকার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন। এরপর রাস্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর হাইকোর্ট এর বিচারক মোস্তফা জামান ও বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত পুনরায় সাতক্ষীরার নিন্ম আদালতে আলোচিত এ মামলাটি তিন মাসের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করতে নির্দেশ দেন। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের পর আজ স্বাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য হয়।
প্রসঙ্গত: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহফুজা বেগম এর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় একদল দূর্বৃত্ত। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা পত্নী মাহফুজা বেগমকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকালে তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় আসেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধিন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে সকাল ১১ টায় জেলার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনের সড়কে শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলা চালায় তৎকালিন ক্ষমতাসিন বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের ক্যাডাররা। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ করে। সেদিন অল্পের জন্য প্রানে বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এঘটনায় গাড়ী বহরে থাকা ১৫/২০ টি গাড়ী ভাংচুর করা হয়। এসময় আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
এসব ঘটনায় তৎকালিন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্ত তৎকালিন ক্ষমতাসিন বিএনপির প্রভাবে থানায় মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ।
দীর্ঘ ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবার সাতক্ষীরা আদলতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দিলে পুলিশ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালিন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের নামে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা বিষ্ফরোক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি পার্টে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করেন পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান।
সাতক্ষীরা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যা চেষ্টা মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ৯ জন স্বাক্ষী ইতোমধ্যে তাদের স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। কিন্তু ২০১৭ সালের ৯ আগষ্ট আসামীরা হাইকোর্টে মামলাটির স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করে। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেয়ায় সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে গত তিনবছর বন্ধ হয়েছিলো মামলাটির বিচার কাজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।