পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। এ মাছের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে সেকালের আরব পরিব্রাজকরা এই মাছের নাম দিয়াছিল মালেকুচ্ছাম্মা, অর্থাৎ মাছের রাজা। সেই থেকে ইলিশ মাছের রাজা। সেই মাছ ইলিশ রক্ষার জন্য প্রত্যেক বছর কিছুদিনের জন্য ধরা ও বিক্রি করা নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ২২ দিন ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসম্পর্কে মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। এই সময়ের মধ্যে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের ৮০ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের নদ-নদী মোহনা ও সাগর থেকে আহরিত হয়। লক্ষ করার বিষয়, আগের চেয়ে এখন অনেক সুন্দর ও বড় আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ একসময় দুষ্প্রাপ্য হয়ে গিয়েছিল, এখন হাতের নাগালে এসেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রজননকালে মা ইলিশ ধরা এবং জাটকা ধরা বন্ধ করার বিকল্প নেই।
ইলিশ অর্থনীতিও মোটেই উপেক্ষণীয় নয়। পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে, পাঁচ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০-২৫ লাখ লোক ইলিশ পরিবহন, বিক্রি, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, রফতানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, অভিপ্রয়াসী মাছ ইলিশ তার জীবনচক্রে স্বাদু পানি থেকে সমুদ্রের নোনা পানিতে এবং সেখান থেকে পুনরায় সাদু পানিতে অভিপ্রয়াস করে। একটি পরিপক্ক ইলিশ প্রতিদিন স্রোতের বিপরীতে ৭১ কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটে যেতে পারে। গত দুই দশক ধরে ইলিশ নিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশে ইলিশের উৎপাদন সোয়া দুই লাখ টন থেকে গত বছর ৪ লাখ ২০৩ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পেলেও বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩ গুণ। বর্তমানে সারা বিশ্বে আহরিত ইলিশের প্রায় ৬০ ভাগ উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে।
মাছের রাজা হিসাবে পরিচিত ইলিশের ওপর এখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনা অনেকেরই দৃষ্টি গোচর হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে জনগণের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, এ সম্ভাবনা যেন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। ওই লক্ষ্যেই ইলিশের আহরণ ও বিপণনকে উত্তরোত্তর বৃদ্ধির পথে ধরে রাখতে আমাদের ইলিশের আহরণ ও বিক্রি প্রভৃতি ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।