Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাসের সবাই ডাকাত বাধা দেয়ায় যাত্রী খুন

পিবিআই’র সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৬ এএম

সাভারের নবীনগর থেকে কাজ শেষে গত ৫ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরের বাসার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেছিলেন হোটেল ব্যবসায়ী লষ্কর রবিউল ইসলাম। ওই রাতে একই বাসে থাকা ২০-২২ জনকে যাত্রী মনে করলেও আসলে সবাই ছিলেন ডাকাত দলের সদস্য। আর বাসে ডাকাতিতে বাধা দেয়ায় তাদের হাতে খুন হন রবিউল। পরে তার লাশ বলিয়ারপুর যমুনা ন্যাচারাল পার্কের পাশে ফেলে দেয় ডাকাতরা।

গতকাল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়। পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, গত ৬ অক্টোবর রবিউলের লাশ উদ্ধারের পর অজ্ঞাত হিসেবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। খবর পেয়ে হাসপাতলে এসে রবিউলের পরিবার তাকে শনাক্ত করে। রবিউল হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছায়া তদন্ড শুরু করে পিবিআই। গোয়েন্দা তৎপরতা ও প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৩ অক্টোবর ডাকাত দলের প্রধান পটুয়াখালীর বসির মোল্লাকে সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে শেখ হাফিজ, আনোয়ার হোসেন, আমির হোসেন, আল আমিন, জুয়েল, মো. নঈম, তপন ও নাজমুলকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই ডাকাত দলের সদস্য।

তিনি জানান, ২০ বছর ধরে ডাকাতি করছেন বসির। আশুলিয়ায় একটি মামলায় ২৬ মাস জেল খাটার পর এই ঘটনার তিন মাস আগে ছাড়া পান তিনি। এরপর আবারও অভিনব পদ্ধতিতে ডাকাতি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ডাকাতির জন্য পুরো বাস কয়েক দিনের জন্য ভাড়া নেন বসির। এরপর তার দলের চারজন সদস্যকে ডেকে পাঠান। তারা প্রত্যেকে আরও ৩-৪ জন করে নিয়ে আসে। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেদের ২০-২২ জন সদস্যকে বাসে নিয়ে যাত্রা শুরু করে। অনেক যাত্রী দেখে সাধারণ যাত্রীরা বাসে ওঠে। এরপর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে সুবিধামতো জায়গায় যাত্রীদের নামিয়ে দেয়।

তিনি আরো জানান, গত ৪ অক্টোবর ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটে নিরালা পরিবহনের একটি বাস তিনদিনের জন্য ভাড়া করেন বসির। বাসটি ভাড়া নেয়ার পর নিরালা পরিবহনের স্টিকার তুলে ঢাকা-দৌলতদিয়া-খুলনা লিখে ডাকাত দলের অন্যদের নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা হন। গরু ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে রাতে দৌলতদিয়ায় অবস্থান করেন। পরদিন ৫ অক্টোবর রাত ১০টায় দৌলতদিয়া থেকে ফেরার পথে লঙ্কর রবিউল ইসলামকে নবীনগর থেকে বাসে তুলে নেন তারা। বাসে ওঠার পর ডাকাতির সময় বাধা দেন রবিউল। ডাকাত দলের কয়েকজন রবিউলকে চেপে ধরে কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। এতেও কাজ না হওয়ায় বসির তার হাতে থাকা হুইল রেঞ্জ দিয়ে রবিউলকে আঘাত করে। এক পর্যায়ে বাসের মধ্যেই মারা যান রবিউল। এরপর নির্জন স্থান দেখে রবিউলের লাশ বলিয়ারপুর যমুনা ন্যাচারাল পার্কের পাশে ফেলে চলে যায় ডাকাতরা।

এদিকে বাসায় ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে রাত ১২টার দিকে রবিউলের মা তার মোবাইল ফোনে কল দেন। অপর প্রান্ত থেকে এক অপরিচিত ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে জানান, এই নম্বরের মালিক খুন হয়েছে। তার লাশ হেমায়েতপুরে রাখা হবে। এই বলে কল কেটে দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর রবিউলের মোবাইল ফোনটি ভেঙে ড্রেনে ফেলে দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংবাদ-সম্মেলন

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ