Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্যার উন্নতি অব্যাহত

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি হ্রাস পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নদ-নদীসমূহের ৭১টি পয়েন্টে পানি হ্রাস এবং ৩০টি পয়েন্টে বৃদ্ধি পায়। দুই নদীর পানি বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্ব ভারতে নদ-নদীসমূহের উজানের অববাহিকায় এবং দেশের অভ্যন্তরে বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে।

সিলেট বিভাগে সুরমা-কুশিয়ারাসহ নদ-নদীসমূহে পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। তবে বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত তেমন বেশি না হলে বানের পানি ভাটির দিকে নেমে যাবে। অন্যথায় অতিবৃষ্টির কারণে ফের সাময়িক বন্যা কিংবা বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।

বন্যার পানি ভাটির দিকে যতই নামছে ততই অনেক জায়গায় নদীভাঙন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল হয়ে প্রধান নদ-নদীসমূহের ভাটিতে পদ্মা ও মেঘনার মোহনায় পর্যন্ত পানির তীব্র চাপ ও ঘূর্ণিস্রোতের সঙ্গে চলছে নদীভাঙন। বিলীন হচ্ছে নদ-নদীর দুই তীরের বসতভিটে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, সড়ক রাস্তাঘাট, হাটবাজার, কৃষিজমি। গত জুন মাস থেকে এ যাবত ৩৩টি জেলায় দফায় দফায় এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় নদীভাঙনে ক্ষয়ক্ষতি নজিরবিহীন।

পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র গতকাল জানায়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকা ছাড়া প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৭১টি পয়েন্টে পানি হ্রাস ও ৩০টি স্থানে পানি বৃদ্ধি পায়। দু’টি নদী দু’টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার নদ-নদীর ৬৭টি পয়েন্টে পানি হ্রাস ও ২৮টি স্থানে বৃদ্ধি পায়। ৫টি নদ-নদী ৫টি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রোববার নদ-নদীর ৬৭টি পয়েন্টে পানি হ্রাস ও ৩২টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পায়।

নদ-নদী প্রবাহের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে জানা গেছে, পদ্মা নদীর উজান-ভাটিতে সবক’টি পয়েন্টে পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। গতকাল পদ্মা গোয়ালন্দে বিপদসীমার নিচে নেমেছে। চক রহিমপুরে করতোয়া নদীর পানি আরও হ্রাস পেয়েছে এবং বিপদসীমার ৬২ সে.মি. ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিংড়ায় গুর নদীর পানি আরও কমেছে, প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ৭ সে.মি উপর দিয়ে। মধ্যাঞ্চলে ধলেশ্বরী এবং বাঘাবাড়ীতে আত্রাই নদীর পানি আরও হ্রাস পেয়ে গতকাল বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে।
এদিকে অতিবৃষ্টির কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকায় সিলেট বিভাগে সুরমা ও কুশিয়ারাসহ অধিকাংশ নদীর পানি গতকাল বৃদ্ধি পায়। তবে বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাটে বিপদসীমার ৯৪ সে.মি. নিচে, কুশিয়ারা নদী অমলশীদে ৯৭ সে.মি. নিচে, খোয়াই নদী বাল্লাহ পয়েন্টে ৪৭ সে.মি. নিচে, সোমেশ্বরী কলমাকান্দা পয়েন্টে ৩৭ সে.মি. নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্ব ভারতে বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে ধুবরিতে ৭২ মিলিমিটার, দিব্রুগড়ে ৫০ ও শীলচরে ৪১ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এ সময় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এরমধ্যে সিলেটে ১৪৫, কানাইঘাটে একশ’, সুনামগঞ্জে ৮৫, লালাখালে ৭৫, ছাতকে ৭০ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ