মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আর্মেনিয়ার দখল থেকে কারাবাখের ২২ এলাকা মুক্ত করেছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। সোমবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ খবর জানিয়েছে। বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিবেশী দুই দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান যুদ্ধে জাড়িয়ে পড়ে। আর্মেনিয়ার বাহিনী আজারবাইজানের বসতি ও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করলে দুই দেশ ভয়াবহ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। আঙ্কারার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজারবাইজানের বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্য মতে সর্বমোট ২২ অধিকৃত বসতি মুক্ত করেছে বাকু। তাদের অধিকৃত অঞ্চলগুলো পুনঃদাবি করে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। আজারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির বেলাগান, বারডা, টার্টার শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয়া। পূর্ববর্তী খবরে বলা হয়, নাগরনো-কারাবাখ দখলে আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী অগ্রাভিযান অব্যাহত রেখেছে। সোমবার পরপর চারটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে অঞ্চলটির রাজধানী স্তেপানকার্ট শহর। তড়িঘড়ি ‘বম্ব শেল্টার’-এ আশ্রয় নেন বাসিন্দারা। উভয় পক্ষে শুরু হয়েছে শহর দখলের লড়াই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের খবরে বলা হয়, নাগরনো-কারাবাখের দখল নিয়ে স্বঘোষিত স্বাধীন অঞ্চলটির সামরিক বাহিনী ‘আর্টসাক ডিফেন্স আর্মি’র সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ চলছে আজারবাইজানের সরকারি বাহিনীর। পাশাপাশি, আর্মেনিয়ার সঙ্গেও চলছে লড়াই। সম্প্রতি, সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাবে ইয়েরেভান সম্মতি দিলেও নিজের অবস্থান বদলাতে রাজি হয়নি বাকু। ফলে দু’পক্ষের মধ্যে চলছে তুমুল সংঘর্ষ। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, রবিবার স্তেপানকার্ট ও সুসা শহরে গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছেন চার নিরীহ নাগরিক। আহত হয়েছেন ১০ জন। তবে রাজধানী রক্ষায় মরণপণ লড়াই চলবে বলে জানিয়েছে, আর্টসাক বাহিনীর সদস্যরা। অসমর্থিত সূত্রে খবর, রাজধানী স্তেপানকার্ট রক্ষায় মিলিশিয়াদের মদত দিচ্ছে আর্মেনিয়ার বাহিনী। এদিকে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিইয়েভ আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমাসহ কিছু শর্ত আরোপ করেছেন। রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া জ্বালাময়ী ভাষণে আলিইয়েভ সতর্ক করে বলেন, আর্মেনীয় নেতার আগেই ভাবা উচিত ছিল। এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমাদের এলাকা অবশ্যই ছেড়ে যেতে হবে। ইয়েরেভানকে আজারবাইজানের আঞ্চলিক অখন্ডতার কথা স্বীকার করতে হবে। যে অঞ্চল নিয়ে যুদ্ধ চলছে সেটি আর্মেনিয়ার অংশ নয় স্বীকার করতে হবে।’ আলিইয়েভ আরও বলেন, ‘নাগরনো-কারাবাখ আমাদের ভূমি। আমাদের সেখানে ফিরতে হবে এবং আমরা এখনই তা করছি। এটিই শেষ। আমরা তাদের দেখিয়েছি আমরা কী। আমরা তাদের কুকুরের মতো তাড়া করছি।’ ইতোমধ্যে আর্মেনিয়ার দখলে থাকা কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ জাব্রাইল জেলাসহ কয়েকটি এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে আজারবাইজান। গত ২৭ বছর ধরে এসব এলাকা আর্মেনিয়া দখল করে রেখেছিল। আজারবাইজানি বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন নাগারনো-কারাবাখের আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা আরাইক হারুতুনিয়ান। রোববার কথিত আরতাসখ রিপাবলিকের এ নেতার বাঙ্কারে আজারি মিসাইল আঘাত হানে। আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর গানজায় আর্মেনীয় হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়াভের সহযোগী হিকমেত হাজিয়েভ এক বিবৃতি বলেছেন, প্রথমত আরাইক হারুতুনিয়ান, আপনি ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করছেন না। আপনি বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন। কিন্তু আজারবাইজানি সেনারা সেই বাঙ্কারেও আঘাত হেনেছে। তিনি বলেন, গানজা শহরে বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা করে সে যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি তাকে দেয়া হয়েছে। অন্য সন্ত্রাসী এবং যুদ্ধাপরাধীরাও দ্রুতই শাস্তি পাবে। নাগরনো-কারাবাখ দখলের পর আর্মেনিয়ার সমর্থনে আরতাসখ রিপাবলিক নামে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। যদিও কোনো দেশই তাদের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকি আর্মেনিয়াও তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। এই আরতাসখ এর প্রেসিডেন্ট আরাইক হারুতুনিয়ান। এদিকে বড় রকমের সংঘর্ষের পর কারাবাখ এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্রাম দখলের দাবি করেছে আজারবাইজান। রোববার দক্ষিণ ককেশাসে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে অষ্টম দিনের মতো সামরিক সংঘাত চলছে। আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, আজারি বাহিনী কারাবাখের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর পুনরুদ্ধার করেছে। রোববার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জাবরায়েল শহরটি দখলে নেয়ার ঘোষণা দেয় আজারবাইজানের মিত্র তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে, আজারবাইজানে আমাদের সূত্র জানিয়েছে, বায়ুক মার্জেনলি, মারালেন এবং শায়বে গ্রাম দখলের পর আজারি সেনা সদস্যরা কারাবাখ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর জাবরায়েল দখলে নিয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি সূত্রের বরাতে পার্সটুডের খবরে বলা হয়েছে, কারাবাখ অঞ্চলের প্রধান শহর খানকেন্ডিতে বেশ কয়েকটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলেছে, আর্মেনিয়া সমর্থিত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রকেট হামলার পর তারা খানকেন্ডি শহরে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এই শহরটিকে আর্মেনীয়রা স্টেপানাকার্ত বলে থাকে। আজারবাইজান আরও জানিয়েছে, তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজাতে আর্মেনীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এ শহরটি কারাবাখ অঞ্চল থেকে অনেক দূরে এবং আর্মেনিয়া সীমান্তে অবস্থিত। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, তিন লাখ ৩০ হাজার অধিবাসী-অধ্যুষিত পশ্চিম আজারবাইজানের গানজা শহরে আর্মেনীয় বাহিনী রকেট হামলা চালিয়েছে এবং গোলাবর্ষণ করেছে। শহরের বেশ কয়েকটি বেসামরিক এলাকায়ও হামলা হয়। এদিকে গানজা শহরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আর্মেনীয় হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। স্পুটনিক, রয়টার্স, আনাদোলু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।