Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সালাউদ্দিন-মুর্শেদীদের জয়জয়কার

চতুর্থ সহ-সভাপতি বেছে নিতে ফের ভোট ৩১ অক্টোবর

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২০, ১:৪৮ এএম

টানা চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হলেন সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী, লাল-সবুজ ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তী কাজী মো. সালাউদ্দিন। তিনি ৯৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ¦ী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক তারকা ফুটবলার বাদল রায় পেয়েছেন ৪০ ভোট। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক ভোট পেয়েছেন মাত্র ১টি।

শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাফুফের বহুল আলোচিত নির্বাচনে মোট ১৩৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৩৫ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এর আগে সকাল ১১টায় কাজী মো. সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে শুরু হয়ে প্রায় দুইঘন্টার মধ্যেই শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হয় বাফুফের এবারের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)।

নির্বাচনে ২১ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সদস্যসহ কাজী সালাউদ্দিনের সম্মিলিত পরিষদের ১৪ জন প্রার্থী জয়লাভ করেন। সালাউদ্দিনের মতই টানা চতুর্থবার সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী সাবেক তারকা ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদী। তিনি আরেক সাবেক তারকা ফুটবলার সমন্বয় পরিষদের শেখ মো. আসলামের বিপক্ষে লড়ে ভোট পান ৯১টি। আসলাম পেয়েছেন ৪৪ ভোট।

সহ-সভাপতি চারটি পদের বিপরীতে ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন ৮জন। এদের মধ্যে কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদের ইমরুল হাসান সর্বোচ্চ ৮৯, কাজী নাবিল আহমেদ ৮১ ও আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ৭৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। সমন্বয় পরিষদের মহিউদ্দিন আহমেদ মহি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সমান ৬৫টি করে ভোট পেলে চতুর্থ সহ-সভাপতি বেছে নিতে ৩১ অক্টোবর শনিবার পুনরায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন।

সহ-সভাপতি পদে সমন্বয় পরিষদের শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান ৬১, সম্মিলিত পরিষদের আমিরুল ইসলাম বাবু ৫৬ ও সমন্বয় পরিষদের আব্দুলাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান ৪৮ ভোট পেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৫টি সদস্য পদের বিপরীতে সম্মিলিত পরিষদের ৯ জন জয়ের মালা গলায় পড়েন। বাকি ৬ সদস্য নির্বাচিত হন সমন্বয় পরিষদ থেকে। সদস্য পদে সম্মিলিত পরিষদের জাকির হোসেন চৌধুরী সর্বোচ্চ ৮৭ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন।

এই প্যানেলের নির্বাচিত বাকি সদস্যরা হলেন- বিজন বড়–য়া (৮৫ ভোট), মো. নূরুল ইসলাম নুরু (৮৪ ভোট), মো. মাহি উদ্দিন আহমেদ সেলিম (৮৪ ভোট), সত্যজিৎ দাস রুপু (৭৬ ভোট), মো. ইলিয়াস হোসেন (৭৫ ভোট), ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (৭৪ ভোট), মাহফুজা আক্তার কিরন (৭০ ভোট) ও হারুনুর রশীদ (৭০ ভোট)। ৮৬ ভোট পেয়ে সমন্বয় পরিষদের আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু পেয়েছেন দ্বিতীয়স্থান পান। সদস্য পদে সমন্বয় পরিষদের অন্য বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন- মো. আরিফ হোসেন মুন (৮৫ ভোট), টিপু সুলতান (৮১ ভোট), মো. আমের খান (৬৯ ভোট), মো. সাইফুল ইসলাম (৬৯ ভোট) ও মো. মহিদুর রহমান মিরাজ (৬৮ ভোট)।

বাফুফে নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে শনিবার সকাল থেকেই উৎসবমুখর ছিল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল। নির্বাচনের প্রার্থী, ভোটারদের সঙ্গে উৎসুক ফুটবলপ্রেমী ও সংগঠকদের পদচারনায় মুখরিত ছিল এই পাঁচ তারকা হোটেলটি। বাফুফের আগামী চার বছরের নেতৃত্ব বেছে নিতে ১৩৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৩৫ জন ভোট দেন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে ৯৭.১২ শতাংশ। চারজন ভোট দিতে আসেননি। এরা হলেন- চট্টগ্রাম আবাহনীর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তরফদার মো, রুহুল আমিন, ফরিদপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার, শেখ রাসেলের পরিচালক মাকসুদুর রহমান শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি সাফওয়ান সোবহান।

প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে যখন বার্ষিক সাধারণ সভা চলছিল, তখন বাইরে প্রার্থীরা ব্যস্ত ছিলেন ভোটারদের মন জয় করতে। কোন ভোটার যখন হলরুমের বাইরে এসেছেন তখনই তাকে ঘিরে ধরেছেন প্রার্থীরা। বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য নন এবংভোটার নন এমন যারা প্রার্থী আছেন তাদের এজিএম স্থলে প্রবেশের অনুমতি ছিল না।

গত কয়েক বছর ধরে সালাউদ্দিন বিরোধীদের অভিযোগ ছিল বাফুফেতে দূর্নীতি হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। কিন্তু এজিএমে কোনো কাউন্সিলর এ বিষয় নিয়ে কেউই কথা বলেননি। দু’একটি বিষয় ছাড়া কোনো কিছু নিয়েই তেমন আপত্তি তোলেননি কাউন্সিলররা। ফলে হট্টগোল ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয় বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা ও ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন জানান শান্তিপুর্ণ ও সুষ্ঠ পরিবেশেই ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চার বছর পর অনুষ্ঠিত বাফুফে নির্বাচনে ২১ সদস্যের কমিটিতে জায়গা পেতে এবার প্রার্থী ছিলেন ৪৭ জন। সভাপতি পদে লড়ছেন তিনজন। তাদের মধ্যে ছিলেন সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থী ও বর্তমান সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। তার বিপরীতে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক ও বাদল রায়। এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে লড়েছিলেন দু’জন। চারটি সহ-সভাপতি পদে মোট ৮ জন লড়াই করেছেন। আর ১৫টি সদস্য পদে লড়েছেন ৩৪ জন প্রার্থী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ