পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারকে ‘আন্ত:আঞ্চলিক কুটনৈতিক’ উদ্যোগ গ্রহনের আহবান জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার (০২ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের দূর্বল পররাষ্ট্র নীতি আজ মিয়ানমারের কাছে স্পষ্ট। এর পরিপূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করেই মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অযাচিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে সেনা সমাবেশ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে।
তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সেনা সমাবেশের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই ধরনের অপতৎপরতা রুখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এবং আন্তঃআঞ্চলিক কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে বর্তমান নতজানু সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ভারত-চীন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ হয়-এটা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায়। আমাদের সরকারের কোনো কথা নেই। তারা একবারে চুপচাপ থেকে নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এই সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে নিতে পারেনি।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশে সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা ও জাতিগত নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার তিন বছর পূর্তির প্রাক্কালে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সমাবেশের তৎপরতা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিক ফলাফল মাত্র। প্রায় ১২ লক্ষাধিক শরণার্থী সমস্যার সমাধানে যে ধরনের সমন্বিত বহুমুখী ততপরতা নেয়া অত্যাবশ্যক েিছ্লা যা এই গণবিচ্ছিন্ন সরকার নিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে আমরা বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক সকল স্তরেই ব্যর্থ হচ্ছি। বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির সুযোগে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান আজকে কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। কারণ হচ্ছে, সরকারের চরম ব্যর্থতা তারা তাদের বন্ধুদেশগুলোকে তাদের পক্ষে নিয়ে আসার ব্যাপারে ব্যর্থ হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠির বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠি। বিশ্বের মানচিত্রে এই জনগোষ্ঠিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় বেসামরিক তদারকিতে মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলকে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে যথাযথ নাগরিক অধিকার ও মর্যাদায় রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের আবাসভূমিতে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কোনো বিকল্প নাই।
আর সেটা কেবল তখনই সম্ভব হবে, যখন বাংলাদেশের নেতৃত্বের যাবতকালের সকল দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক উদ্যোগকে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠিরকে বাঁচাতে এক সুতোয় বাঁধা সম্ভব হবে। এই সমগ্র প্রক্রিয়া কেবল তখই সম্ভব যখন বাংলাদেশের মানুষ তার অধিকার ফিরে পাবে। এদের মানুষ তার অধিকার নির্ভয়ে, নির্বিঘেœ প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। যার মাধ্যমে বর্হিবিশ্বে দূরীভূত হবে বাংলাদেশের প্রতি আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার সংকট। এগিয়ে আসবে বিশ্ব বিবেক অধিকতর মানবিক হৃদয় নিয়ে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠির সমস্যা সমাধানে আর দেশ মুক্তি পাবে অনিশ্চিত সমাধানের হাত থেকে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রতি আবারো আহবান জানাই, রোহিঙ্গা সমস্যা দূর করতে হলে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন, গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করুন, বর্হিবিশ্বে দেশের আস্থা ও গ্রহনযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করুন।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো একটা পত্রিকায় ছাপা হলো যে, স্থায়ীভাবে শরণার্থীদের বসবাসের জন্য ভাসানচরে একটি সিটি গড়ে তোলা হয়েছে। অর্থাৎ রোহিঙ্গারা স্থায়ীভাবে এখানে থাকবে সেই বিষয়টা বোধহয় সরকার নিশ্চিত করছেন। স্থায়ীভাবে তাদেরকে রেখে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য তো নয়। এটা যে বাংলাদেশের মানুষের কত বড় যে সমস্যা তা আপনার কিছুদিন পরে আমরা অনুধাবন করতে পারবো। এটা একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বলে আমরা মনে করি। এখানই যদি সরকার এটাকে (রোহিঙ্গা সমস্যা) অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে অগ্রাধিকারভাবে বিবেচনায় না নিয়ে আসে জাতিসংঘে তাহলে কিন্তু এটা বাংলাদেশের জন্য একটা ভয়ানক বিপর্য্য় অপেক্ষা করছে।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যেসব চুক্তি করা হয়েছিলো তাকে সমানে নিয়ে চুক্তি করা হলে এর সমাধান হতে পারে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এই সরকার তো সেটা করছে না। তারা তো করছে একেবারে নিজেদের স্বার্থে। আজকে যে মিয়ানমারের কাছে তারা (সরকার) নতজানু হয়ে গেছে এটার কারণ হচ্ছে এই সরকারের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো অবস্থান নেই। বিশেষ করে যে দুইটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব যারা প্রভাব বিস্তার করে মিয়ানমারের উপরে- চীন ও ভারত। এই দুইটি রাষ্ট্রই কিন্তু এই বিষয়ে একেবারে নেগেটিভ অবস্থানে। বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্যটাই হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকা যেনতেনোভাবে। নিজের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্ব চলে যাক তাতে কোনো অসুবিধা নেই। দেখুন আমাদের সীমান্তে মানুষ হত্যা হয় একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত তারা সঠিকভাবে করে না। যেসব চুক্তি-টুক্তি হয়েছে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে না। তারা (আওয়ামী লীগ) রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।