২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
পান গাছের পাতাকে পান বলা হলেও মূলত পানের সঙ্গে সুপারি, চুন ও নানান রকমের জর্দা (তামাক জাতীয় দ্রব্য), খয়ের ইত্যাদি এক সঙ্গে খাওয়াকে বোঝায় পান খাওয়া। অনেকে নেশার মত পান খান। পানের সাথে আর যেসব মিশিয়ে খাওয়া হয়- যেমন কাচা সুপারি, জর্দা ও চুনে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে। টারফেনলস নামক উপাদান এর উপস্থিতির কারণে পান খাওয়ার কারণে ঠোঁট ও জিহবায় লাল দাগ পড়ে। পানের সঙ্গে যে চুন খাওয়া হয়, সেটি হলো ক্যালসিয়াম অক্সাইড বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোঅক্সাইড। এই চুন দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। চুনে রয়েছে প্যারা-অ্যালোন-ফেনল, যা মুখে আলসার বা ঘা সৃষ্টি করার মাধ্যমে জিহবার স্বাদ নষ্ট করে দিতে পারে। এ আলসার ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে। জর্দা হল তামাক জাতীয় একধরনের নেশাজাত দ্রব্য, এই অখাদ্য বস্তুটি সমাজের অনেক মানুষই পানের সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকেন।
অনেকেই আবার এক বিচিত্র পদ্ধতিতে পান সেবন করে থাকেন। পান খাওয়ার এক পর্যায়ে চূর্ণ-বিচূর্ণ পানের কিছু অংশ গালের এক পাশে রেখে আবার কিছুক্ষণ পর খেতে দেখা যায় অনেকটা জাবরকাটার মত। বয়স্ক মহিলাদের কেউ কেউ এভাবে পান গালের এক পাশে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। এদের ক্ষেত্রে মুখের ভিতরে গালের এক পাশে আলসারসহ ক্যান্সার পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের আইএআরসি-এর গবেষকদের মতে, যাঁরা তামাকজাতীয় দ্রব্যাদি জর্দা, চুন, কাচাসুপারি, খয়ের দিয়ে পান খান তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্যদের তুলনায় ‘ওরাল ক্যান্সার’ হওয়ার আশঙ্কা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, আমাদের এই অঞ্চলে অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় পান-জর্দা ইত্যাদি খাওয়ার প্রচলন অনেক বেশি। ফলে বিশ্বের মোট ‘মুখ এবং মুখ গহ্বরের ক্যান্সার’-এ আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৫৮ শতাংশই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রয়েছে।
অনেক সময় দেখা যায়, পান-কাচাসুপারি খাওয়ার পর হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দেয় কারো কারো। কাঁচা সুপারি এই ক্ষেত্রে উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। কাচা সুপারিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার সাইকোএকটিভ এলকালয়েড। এ কারণেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কাঁচা সুপারি চিবালে শরীরে গরম অনুভূতি হয়। এমনকি শরীর ঘেমে যেতে পারে আবার হাইপারটেনশন বা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদে চুন সহ পান-কাচা সুপারি খেলে মুখের ভিতরে গালে সাদা সাদা ছোপ দেখা যায়, সেগুলো পরে শক্ত হয়ে স্থায়ী হয়ে যায়( ওরাল সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস) এবং এই অবস্থাকে ক্যান্সারের পূর্বাবস্থা বলা হয়ে থাকে। সুতরাং মুখের ভিতরে গালে সাদা বা লাল ছোপ ছোপ দাগ দেখা দিলেই দেরি না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অর্থাৎ ম্যাক্সিলো ফেসিয়াল সার্জারী বা নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন এবং পান-সুপারি-জর্দা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে দয়াকরে ত্যাগ করবেন।
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
নাক-কান-গলা বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।