Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারী বিধি বিধানকে উপেক্ষা করে বোচাগঞ্জ বিআরডিবি কর্তৃক ৫টি দোকান ঘর বরাদ্দ

দেখার কেউ নেই

বোচাগঞ্জ (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২০, ২:২০ পিএম

দিনাজপুর জেলাধীন বোচাগঞ্জ উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) এর অধীন কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি কর্তৃক সরকারী বিধি বিধানকে উপেক্ষা করে ৫ টি দোকান ঘর বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বোচাগঞ্জ উপজেলা রোড বাসষ্ট্যান্ড এর সন্নিকোটে দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের পাকা রাস্তার পাশের্^ বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) বোচাগঞ্জ অফিসের অধিন কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) এর জমিতে ৫ টি সেমিপাকা দোকান ঘর নির্মাণের জন্য সমবায় অধিদপ্তরের বিধি বহির্ভুতভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়। যে জমির জেএল নং- ৬৭, দাগ নং- ১২০৬।

যাদের নামে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তারা হলেন যথাক্রমে- ১। সেলিম মোল্লা, পিতা- মৃত ঃ আজিজ মোল্লা, গ্রাম- ধনতলা, ২। মোঃ পলাশ, পিতা- মৃত ঃ আব্দুল লতিফ, গ্রাম- ধনতলা, ৩। বেলাল হোসেন বুলু, পিতা- মৃত ঃ সৈয়দ আলী, গ্রাম- সুবিদহাট, ৪। মোঃ আশরাফুল, পিতা- মোঃ আমিনুল ইসলাম, গ্রাম- চাপাইতোর, সকলের উপজেলা- বোচাগঞ্জ, জেলা- দিনাজপুর, ৫। মোঃ খোরশেদ আলী, পিতা- মোশারফ হোসেন, উপজেলা- বিরল। এই ৫ জনের নিকট থেক্লে জামানতের অর্থ বাবদ সর্বমোট ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে দোকানঘর নির্মাণের কাজ চলছে।
জানাযায় বোচাগঞ্জ বিআরডিবির কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির অধীন উল্লেখিত মৌজার ১২০৬ নং দাগে সর্বমোট জমি রয়েছে ৬১ শতক। এর মধ্যে ৪০ শতক জমিতে গত ২০১২ সাল থেকে বিধি বহির্ভুতভাবে একটি স’মিল ইজারা দেয়া হয়েছে।

সমাবায় অধিদপ্তরের বিধি উপেক্ষা করে ইউসিসিএর ৫ টি দোকান বরাদ্দের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বোচাগঞ্জ উপজেলা বিআরডিবির আরডিও মোঃ সেলিম হোসেন বলেন ইউসিসি এর ৫টি দোকান বরাদ্দের বিষয়ে জেলা বিআরডিবি অফিসের উপ পরিচালকের অনুমোদন নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
দিনাজপুর জেলা সমবায় অফিস সূত্রে জানাযায় বোচাগঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) কর্তৃক ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে দোকান ঘর নির্মাণ/রক্ষণাবেক্ষনের ক্ষাতে ২০ লক্ষ টাকা বাজেট অনুমোদনের জন্য বোচাগঞ্জ সমবায় অফিসের মাধ্যমে জেলা সমবায় অধিদপ্তরে প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছিল। সে প্রস্তাবনা বাজেটে ২০ লক্ষ টাকা ব্যায়ের কোন প্রাক্কলন (স্টিমেট) না থাকায় তা জেলা সমবায় অফিস কতৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন দেওয়া হইনি। যার ফলে ৫ টি দোকান ঘর বরাদ্দ সম্পূর্ণরূপে বিধি বহির্ভুত হয়েছে।
জানাযায়, সমবায় সমিতি আইন ২০০১ এর ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে বলা হয়েছে সমিতির কোন স্থাবর সম্পতি ৫ বছরের অতিরিক্ত সময়ের জন্য ইজারা প্রদানের মাধ্যমে হস্তান্তর করা যাবে না। ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে নিবন্ধকের লিখিত পূর্ব অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। ২ (উপ-ধারা) (১) এর উল্লেখিত শর্ত ভঙ্গ করে সমবায় সমিতির সম্পদ হস্তান্তর করা হলে দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ নুন্যতম ৬ মাস, তবে অনাধিক ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থ দন্ড দন্ডিত হবেন বলে উল্লেখ্য রয়েছে।

উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মোঃ সেলিম হোসেন বলেন বরাদ্দকৃত দোকানগুলির ইজারা গ্রহীতাগণ নিজ খরচে দোকান ঘর তৈরী করছেন। ইউসিসি এর নিয়মিত পরিচালনা কমিটি আছে কি না প্রশ্নের জবাবে আরডিও সেলিম হোসেন বলেন ৮ সদস্য বিশিষ্ট নিয়মিত কমিটি রয়েছে তবে সভাপতির পদটি মাইনদ্দিন আহমেদ হাইকোর্ট রিট করে পরিচালনা করছেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় একজন সমবায়ী বলেন ইউসিসিএর কমিটির মেয়াদ ৩ টার্মের বেশি হলে ঐ কমিটির সদস্যরা পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। অথচ পূর্বের কমিটির সভাপতি মানইদ্দিন আহমেদ স্বীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে হাইকোর্টে রিট করে ২৪/০৭/১৯৯৯ সাল থেকে প্রায় ২১ বছর যাবৎ সভাপতির পদটি আকরে ধরে আছেন। যা অসৎ উদ্দেশ্য মূলক। যার ফলে সমিতিটিতে দূর্নীতি জেকে বসেছে। বোচাগঞ্জ বিআরডিবি ও কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির কার্যক্রম খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের আশু দৃষ্টি প্রয়োজন। উল্লেখ যে সেতাবগঞ্জ পৌর শহরে গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই পাকা ও সেমিপাকা স্থাপনা গড়ে ওঠায় সেতাবগঞ্জ পৌরসভার দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজের যে মাস্টার প্লান রয়েছে তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি সেতাবগঞ্জ পৌর কতৃপক্ষকে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে এলাকার বিজ্ঞ মহল মত পোষন করেছে।
এ বিষয়ে বোচাগঞ্জ ইউসিসিএর চেয়ারম্যান মাইনদ্দিন আহমেদ বলেন আমরা কমিটির মাধ্যমে দোকান ঘর বরাদ্দের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছি। সে মোতাবেক ৫ টি দোকান ঘর বরাদ্দের জামানতের সমুদয় অর্থ গ্রহণ করে সমিতির ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত রেখেছি। আমি হাইকোর্টে নিয়ম অনুযায়ী রিট করে সভাপতি পদে বহাল আছি আমার বিরুদ্ধে আনিত অন্যান্য অভিযোগ সমূহ সত্য নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরাদ্দ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ