পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও তিস্তা চুক্তির মুলা আবারও ঝোলালো ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের সমস্যা সমাধান এবং সীমান্ত হত্যাকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। গতকাল বাংলাদেশ-ভারত ৬ষ্ঠ যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে একমত হন। বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। ভার্চুয়াল এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন আর ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এর আগে জেসিসির পঞ্চম সভা ২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বৈঠকে পেঁয়াজের মতো ছোট্ট একটি জিনিস নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে পেঁয়াজ আমদানি আটকে দেয়ার বিষয়টি অনেক ছোট। তবে এটা কখনো কখনো অনেক বড় বিষয় হয়ে ওঠে। তখন দুই দেশের মধ্যে যে বন্ধুত্ব ও সোনালী অধ্যায় রচিত হয়েছে তার ওপর প্রভাব পড়ে। ভবিষ্যতে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলে আগে ভাগেই যেন বাংলাদেশকে জানিয়ে দেয় সে বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, তিস্তাচুক্তিসহ বাকি ৬ নদীর পানিবণ্টন সমস্যা দ্রুত সমাধানে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত। একই সাথে দুদেশের যৌথ নদী কমিশন সভা দ্রুত আয়োজনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। উভয়পক্ষই রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উৎপত্তিস্থলে স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, ভারতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগকারীদের জন্য যে বৈষম্য নীতি ছিল তা দূর করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নয়াদিল্লি। দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে ফলপ্রস‚ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে রোগী ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধায় সড়ক পথে ভারতের সীমান্ত খুলে দেয়ার আহ্বান জানায় ঢাকা। বৈঠকে ভারতে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ মুসলমানদের জরিমানা কমিয়ে আনার বিষয়টিও ঢাকার পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়। নভেম্বরে এ সংক্রান্ত বৈঠকে বিষয়টি সুলাহা হবে বলেও আশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, বিশেষ ব্যবস্থায় দু’দেশের মধ্যে সীমিত আকারে আকাশ পথে যোগাযোগের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ঢাকা। এ নিয়ে কাজ করছে নয়াদিল্লি। ভারতের অর্থ সহায়তা দ্রুত ছাড় দিতে দু’দেশের সচিব পর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তের কথাও জানানো হয় যৌথ বিবৃতিতে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, করোনার ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে ভারত সফল হলে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে বলে বৈঠকে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সূত্র জানায়, বিকেল ৫ টায় বৈঠক শুরুর কথা থাকলেও বেলা সাড়ে তিনটায় জেসিসি বৈঠক শুরু হয়। এক ঘণ্টা ধরে ভার্চুয়ালি বৈঠক চলে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এবারের ৬ষ্ঠ জেসিসি বৈঠকে দুই দেশের সহযোগিতার সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সূত্র। বিশেষ করে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা, ভারতের ক্রেডিট লাইন, প্রতিরক্ষা, কানেক্টিভিটি, নিরাপত্তা, সন্ত্রসাবাদ প্রতিরোধ, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি বিষয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
এর আগে দুই দেশের মধ্যে কখনো ভার্চুয়ালি জেসিসি বৈঠক হয়নি। করোনাভাইরাসের কারণে এই প্রথম জেসিসি বৈঠক ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হলো।
উল্লেখ, দিল্লির অনিহার কারণে নিয়মিত জেসিসির বৈঠক হয় না। কারণ বৈঠক হলেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তিসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি করা হয়। কিন্তু ভারত তিস্তা চুক্তির মূলা ঝুলিয়ে রেখে ফেনী নদীর পানি চুক্তি করে নিচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করে চীন তিস্তা প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়ায় ভারতের নীতি নির্ধারকদের মাথায় বাজ্রপাত ঘটে। চীনের বিনিয়োগে বাংলাদেশ যাতে অতি উৎসাহ না দেখায় সে জন্যই জেসিসি’র বৈঠকের আহ্বান করা হয়। কিন্তু বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন যে তথ্য তুলে ধরেন তাতে পরিষ্কার এবারও ভারত সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও তিস্তা চুক্তির মূলা ঝুলিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।