পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে এমনিতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের রফতানি বাণিজ্যে ধস নেমেছে। বর্তমানে কয়েকটি পণ্য রফতানির মাধ্যমে কোনোরকম টিকে আছে দেশের শতভাগ রফতানিমুখী এ বন্দর। করোনাভাইরাসের কারণে ভারতের পণ্য রফতানির পরিমাণ আশঙ্কাজনকহারে কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় মাছ।
করোনায় তিন মাসে প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের মাছ রফতানি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি সরকারও বঞ্চিত হয়েছে রেমিট্যান্স থেকে। তবে আশার কথা হলো-এখন আগের মতোই পুরোদমে মাছ নিচ্ছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এরফলে আখাউড়া স্থলবন্দরের রফতানি বাণিজ্যে আশা জাগাচ্ছে মাছ। ধীরে ধীরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় মাছ রফতানির পরিমাণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের পর প্রথম আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় পণ্য রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আখাউড়া স্থলবন্দর। এরপর থেকে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার রড, সিমেন্ট, পাথর, প্লাস্টিক, মাছ, তুলা, ভোজ্যতেল ও খাদ্যসামগ্রীসহ অর্ধশত পণ্য রফতানি হতে থাকে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায়।
এসব পণ্য আগরতলা থেকে সরবরাহ করা হয় ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত সাতটি রাজ্যে। তবে গেল কয়েক বছর ধরে ধস নামতে থাকে রফতানি বাণিজ্যে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা সম্পন্ন পাথর এখন শিলং থেকেই সংগ্রহ করছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। রড-সিমেন্ট আমদানিও কমিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া নানা অজুহাত দেখিয়ে প্রায়ই বন্ধ করে দেয়া হয় মাছ আমদানি। অনেক সময় মাছ আগরতলা স্থলবন্দরে যাওয়ার পরও ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সেই মাছ নিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তখন বন্দরেই পচে নষ্ট হয় সব মাছ। এতে বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসান গুণতে হয় রফতানিকারক ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানকে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলোর সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ার ফলে গত তিন-চার বছর ধরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন ভারতের বড় ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, অন্যসব পণ্যের মতোই মাছ রফতানি কার্যক্রমেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে মহামারী করোনাভাইরাস। গত ২৪ মার্চ থেকে মাছ আমদানি বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তিন মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ২৯ জুন থেকে পুনরায় মাছ রফতানি শুরু হলেও রফতানির পরিমাণ আগের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে রফতানির পরিমাণ আগের মতো হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ও তফাজ্জল হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ইলিশ ও চিংড়ি মাছ ছাড়া সব প্রজাতির মাছ ভারতে রফতানি করার অনুমতি রয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ টন মাছ রফতানি করা হতো। রফতানিকৃত এসব মাছের মধ্যে ৬০ শতাংশই তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ, বাকি ৪০ শতাংশ মাছ বিভিন্ন প্রজাতির। ছোট-বড় সব আকারের প্রতি কেজি মাছের গড় মূল্য ২.৫ মার্কিন ডলার। এখন রফতানি কার্যক্রম ধীরে ধীরে পূর্বের অবস্থার ফিরে যাচ্ছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজীব উদ্দিন ভূঁইয়া দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক পণ্য যাচ্ছে ভারতে। তবে গত কয়েকদিন ধরে আশার আলো দেখাচ্ছে মাছ। এ ছাড়া সামনে শীত মৌসুম হওয়ায় মাছের চাহিদা আরও বাড়বে।
আখাউড়া স্থলবন্দর মাছ রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মিয়া দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে তিন মাসে আমরা প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের মাছ রফতানি করতে পারিনি। এতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মৎস্য চাষিরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কারণ ভারতে রফতানির জন্য আমাদের অঞ্চলের চাষিদের কাছ থেকেই অধিকাংশ মাছ সংগ্রহ করা হয়। রফতানি বন্ধ থাকায় চাষিরা তাদের উৎপাদিত মাছ বিক্রি করতে পারেননি। রফতানি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টন মাছ রফতানি হয়ে আসছিল। এখন প্রতিদিন আগের মতো গড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টন মাছ রফতানি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।